আগমন: ইস্টবেঙ্গলের নতুন বিদেশি জেমি। বুধবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
হারের হ্যাটট্রিকের পর ইস্টবেঙ্গল বুধবার নিয়ে এল স্প্যানিশ ফুটবলার জেমি স্যান্টোস কোলাডোকে।
চার্চিল ব্রাদার্সের কাছে হার এবং চেন্নাই সিটি এফ সি-র সঙ্গে ড্র করার পর মনোবিদ নিয়ে এসে ক্লাস হল মোহনবাগানে।
ডার্বি এখনও অনেকটাই দূরে। ১৬ ডিসেম্বর মোহনবাগানের মুখোমুখি হওয়ার আগে আলেসান্দ্রো মেনেন্দেসের দলের অবশ্য আরও একটি ম্যাচ রয়েছে গোকুলম এফ সি-র সঙ্গে। টানা তিন হারের পরে দলের মনোবল বাড়াতে বৃহস্পতিবার বিকেলে গোটা দলের সঙ্গে বসছেন কর্তারা। তার আগে এ দিন অবশ্য আরও বড় ঘটনা ঘটল, কলকাতা লিগেও যিনি ছিলেন লাল-হলুদ জনতার হার্টথ্রব, সেই আল আমনাকেই ছেঁটে ফেলল ইস্টবেঙ্গল। তিনি বুধবার অনুশীলনে আসেননি। তাঁর বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেনা-পাওনার কথা শুরু করে দিলেন ক্লাব কর্তারা। পিঠের ব্যথার জন্য আই লিগে এখনও কোনও ম্যাচ খেলেননি সিরিয়ান মিডিয়ো। তিনি সুস্থ হওয়ার চেষ্টা করলেও তা হতে পারছিলেন না। গত সোমবার পর্যন্ত দেখা গিয়েছিল মাঠের পাশে একা অনুশীলন করছেন আমনা। স্প্যানিশ কোচের সঙ্গে তাঁর বনিবনাও হচ্ছিল না। ইস্টবেঙ্গল ফুটবল বিভাগের এক কর্তা বললেন, ‘‘খুব ভাল ছেলে আমনা। আজও যখন ওকে বোঝাতে গিয়েছিলাম তখনও বলছিল, ফিরে আসবে দিন সাতেকের মধ্যে। কিন্তু কোচ চাইছেন না যখন, আমাদের কী করার আছে। তাই রাখা যাচ্ছে না। নতুন ফুটবলার খোঁজা শুরু হয়েছে আমনার জায়গায়।’’
আমনার বিদায়ের দিনে নিজের পুরানো অ্যাকেডেমির ছাত্র জেমিকে শহরে নিয়ে এলেন আলেসান্দ্রো। লাল-হলুদের বর্তমান কোচ যখন লা লিগার ক্লাব স্পোর্টিং খিখন যুব দলে প্রশিক্ষণ দিতেন, তখন সেখানে খেলতেন বছর তেইশের এই রাইট উইঙ্গার। খিখনের অনূর্ধ্ব ১৯ ও ‘বি’ দলে খেলা ফুটবলারটি ওই ক্লাবে খেলার সময় ১৮টি গোল করেছেন। উইঙ্গার হিসাবে ২০টি গোলের বল জুগিয়েছেন বলে ক্লাব কর্তাদের জানিয়েছেন আলেসান্দ্রো। ২০১৬-১৭ সালে খিখনের সিনিয়র দলে সুযোগ পেলেও তৎকালীন কোচের নজরে পড়তে পারেননি। দল বদলে তিনি চলে যান সিডি মিরান্দেসে। তবে সেখানেও তেমন সুবিধা করতে পারেননি। আলেসান্দ্রো তাঁকে চেনেন এবং ইস্টবেঙ্গলে আর ট্রায়াল নেওয়ার সুযোগ নেই বলেই সরাসরি উড়িয়ে আনা হয়েছে জেমিকে। তবে শহরে পৌঁছে জেমি জানিয়েছেন, বেশ কয়েক মাস প্রতিযোগিতামূলক ফুটবল খেলেননি।
বৃহস্পতিবার অনুশীলনে নামবেন এই স্প্যানিশ ফুটবলার। যা পরিস্থিতি, তাতে শনিবারই হয়তো নামিয়ে দেওয়া হতে পারে তাঁকে। শোনা যাচ্ছে ক্লাব কর্তাদের আলেসান্দ্রো বলেছেন, ‘‘উইং দিয়ে বল তোলার ফুটবলার নেই বলেই এনরিকে এসকুয়েদা ও জবি জাস্টিন গোল পাচ্ছেন না। সে জন্যই জেমিকে আনা।’’ কর্তাদের বোঝানোর পাশাপাশি সকালে ফুটবলারদেরও অনুশীলনে নানা ভাবে চাঙ্গা করার চেষ্টা করেছেন তিনি। বলেছেন, ‘‘তিনটি ম্যাচ হেরেছি বলেই খেতাব থেকে ছিটকে যাইনি। খারাপ খেলেছি বলে হেরেছি। তাই ভাল খেলেই জিততে হবে।’’
ডার্বির আগে দলকে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা চলছে মোহনবাগানেও। তবে সেটা কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তী করেননি। পেশাদার মনোবিদ মৃণাল চক্রবর্তীকে ডেকে এনে ঘণ্টাখানেক ক্লাস করিয়েছেন সনি নর্দে, হেনরি কিসেক্কা, দিপান্দা ডিকাদের। অনুশীলনের আগে একটি করে খাতার পাতা ধরিয়ে দেওয়া হয় শিল্টন পাল, মেহতাব হোসেনদের। সেখানে খেলার একটি নির্দিষ্ট বিষয় দেওয়া ছিল। কে কত তাড়াতাড়ি সেটা খেলতে পারে, তা পরখ করা হয়। ফুটবলাররা বলছেন, ‘‘এটাকে উনি বলেছেন মাইন্ড গেম। মনকে একমুখী ও শান্ত রাখার চেষ্টা।’’