প্রস্তুতি: মোহনবাগান অনুশীলনে সনি ও কাতসুমি। নিজস্ব চিত্র
সপ্তাহ শেষে আই লিগের ডার্বিতে একে অপরের মুখোমুখি হবেন। কিন্তু তাঁর পাঁচ দিন আগেই সনি নর্দের সঙ্গে দেখা করতে মোহনবাগান তাঁবুতে সকালবেলায় হাজির ইস্টবেঙ্গলের ওয়েডসন আনসেলমে।
ডার্বির আগে মঙ্গলবারই এএফসি কাপে গ্রুপের ম্যাচে মোহনবাগানের প্রতিপক্ষ ঢাকার আবাহনী লিমিটেড। ইস্টবেঙ্গলের শিকড় যেখানে জড়িয়ে সেই ওপার বাংলার চ্যালেঞ্জ ডার্বির আগেই মোহনবাগানের সামনে। সেই ম্যাচের প্রস্তুতি সেরে কাতসুমিরা তখন সবুজ-মেরুন তাঁবুতে। এমন সময় সময় দরজায় হাজির ওয়েডসন।
চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবের দেশোয়ালি বন্ধুকে সনি পত্রপাঠ বিদায় দিলে বিমর্ষ ওয়েডসন গাড়ি ঘুরিয়ে ফিরে যান। পরে সনির রসিকতা, ‘‘ও এখানে এল কেন বুঝলাম না! আগামী মরসুমে মোহনবাগানে খেলবে নাকি?’’
বাংলাদেশের টিমের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ম্যাচের আগের সকালে মোহনবাগান অনুশীলনে হালকা মেজাজেই দেখা গেল ডাফি, প্রীতম-রা। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক সবুজ-মেরুনের এক সিনিয়র ফুটবলার বলেও গেলেন, ‘‘আবাহনী নিয়ে সে রকম কিছু হোমওয়ার্ক হয়নি।’’
বিকেলে গড়িয়াহাটের হোটেলে সাংবাদিক সম্মেলন করার ফাঁকে সবুজ-মেরুন কোচ সঞ্জয় সেনও বলেন, ‘‘ওদের টিম লিস্টটা দেখতে হবে। চূড়ান্ত রণকৌশল মঙ্গলবার ঠিক করব।’’ ম্যাচ সন্ধে সাতটায়। দিনের দিন রণনীতি ঠিক করা থেকেই পরিষ্কার সঞ্জয় কতটা গুরুত্ব দিচ্ছেন!
সঞ্জয় প্রকাশ্যে বলছেন, ‘‘ডার্বি এখনও খানিকটা দূরে। এএফসি ম্যাচ তার রিহার্সাল নয়। মঙ্গলবার আমরা জিততেই মাঠে নামব।’’ তা হলে দলে এত বদল কেন? এ দিন সকালের অনুশীলন থেকে আভাস মিলছে আবাহনীর বিরুদ্ধে তিন বিদেশি সনি, কাতসুমি, এদুয়ার্দো খেললেও প্রীতম, আনাস, সৌভিক, ডাফিদের দেখতে না পাওয়ারই সম্ভাবনা প্রবল। বদলে সার্থক, কিংশুকরা ঢুকতে পারেন প্রথম একাদশে। গোলকিপার হিসেবে মোহনবাগান জার্সিতে অভিষেক হতে পারে শিবিন রাজের।
আবাহনীর ক্রোয়েশিয়ান কোচ দ্রাগো মামিচ ছ’বছর আগে চার্চিল ব্রাদার্সের হয়ে আইএফএ শিল্ডে হারিয়ে গিয়েছেন মোহনবাগানকে। মুখে অবশ্য তিনি বলছেন, ‘‘ইতিহাস নিয়ে বাঁচি না। ম্যাচটা জিতে গ্রুপে ভাল জায়গায় থাকতে চাই আমরা।’’
সঞ্জয় সেনের সুবিধে, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে ঢাকা আবাহনীর ছয় গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলারই দল ছেড়েছেন। বাংলাদেশের দলের ভরসা তাই দুই বিদেশি— ওয়েলসের জোনাথন ব্রাউন এবং শেখ জামাল ধানমন্ডি দলে সনি নর্দের একদা সতীর্থ নাইজিরিয়ার এমেকা ডার্লিংটন। আবাহনী কোচ এই দুইয়ের ওপর ভরসা রেখেই বলে যান, ‘‘আমার ছেলেরা সনিকে চেনে। ৪-১-৩-২ ছকে প্রতি-আক্রমণে গোল করাই আমাদের পরিকল্পনা।’’
বিপক্ষের এই পরিকল্পনা কানে গিয়েছে সঞ্জয় সেনেরও। বলছেন, ‘‘ওদের সম্পর্কে কিছু তথ্য আছে সনির কাছে। ওর সঙ্গে কথা বলব চূড়ান্ত টিম বাছার আগে। শুরুতে মিনিট কুড়ি ওদের স্ট্র্যাটেজি দেখার পর আমরা পাল্টা স্ট্র্যাটেজি ঠিক করব।’’
মঙ্গলবারে এএফসি কাপ: মোহনবাগান-আবাহনী লিমিটেড ঢাকা (রবীন্দ্র সরোবর, সন্ধে ৭-০০)।