প্রতীকী ছবি।
ভারতীয় ফুটবল ইতিহাসে প্রথম বার দেশের সর্বোচ্চ লিগে খেলার যোগ্যতা হারাতে চলেছে কলকাতার দুই ঐতিহ্যবাহী ক্লাব ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান।
আই লিগ জোটের ক্লাবগুলির দাবিকে গুরুত্ব না দিয়ে ফেডারেশনের কর্মসমিতির সভায় মঙ্গলবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল, ইন্ডিয়ান সুপার লিগের চ্যাম্পিয়ন ক্লাবই এশিয়ার সর্বোচ্চ লিগ অর্থাৎ এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলবে। যা এত দিন খেলত আই লিগের চ্যাম্পিয়নরা। অর্থাৎ কলকাতার দুই প্রধান নয়, চ্যাম্পিয়ন হলে সর্বোচ্চ লিগে খেলার সুযোগ পাবে এটিকে। ইস্টবেঙ্গলের বিনিয়োগকারী সংস্থা এবং মোহনবাগান কর্তারা নির্বাচনের সময় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, দুই প্রধান সর্বোচ্চ লিগেই খেলবে। ফেডারেশনের এই সিদ্ধান্তের পরে তারা কী করে, সেটাই এখন দেখার।
কেন আই লিগকে দ্বিতীয় পর্যায়ের লিগে নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে? ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ফেডারেশনের পক্ষ থেকে যে বিবৃতি সভার পরে প্রকাশ করা হয়েছে তাতে লেখা রয়েছে, ‘‘পাঁচ বছর ধরে জাতীয় দলের বেশির ভাগ ফুটবলার আইএসএলেই খেলছেন। তা ছাড়া টিভিতেও আই লিগের চেয়ে আইএসএলের ম্যাচ বেশি দেখেন দর্শকরা। যুব ও প্রাথমিক স্তরের ফুটবলার তুলে আনার ক্ষেত্রেও আইএসএলের ক্লাবগুলি বেশি কাজ করেছে। এএফসি লাইসেন্সিং নিয়মও তারা পুরোপুরি মেনেছে।’’
স্পনসরদের টুর্নামেন্টকে সেরার স্বীকৃতি দেওয়ার পরে কী হবে আই লিগের ভবিষ্যৎ? সরকারি ভাবে যা জানানো হয়েছে, এএফসি-র সচিব দাতো উইন্ডসর জনকে অনুরোধ করা হবে একটি শক্তিশালী প্রতিনিধিদল পাঠিয়ে আই লিগ নিয়ে কী করা হবে, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত জানানোর জন্য। কিন্তু ফুটবল হাউসের খবর হল, ফেডারেশনের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীকে যে ভাষায় চিঠি দিয়ে হস্তক্ষেপ করার জন্য আই লিগের ছয় দলের জোট চিঠি দিয়েছে, তাতে চটেছেন ফেডারেশন প্রেসিডেন্ট প্রফুল্ল পটেল এবং তাঁর সতীর্থরা। ফুটবল হাউসের খবর, ফেডারেশন প্রেসিডেন্ট ক্লাবগুলির সঙ্গে আলোচনার পরে আরও তিন বছর পাশাপাশি দুটি লিগ চালানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। আই লিগের চ্যাম্পিয়ন ক্লাবকে এএফসি কাপে খেলানোর প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন। তা মেনে একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল ক্লাবগুলি। তার পরেও প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়ার পর প্রফুল্ল পটেল পুরো বিষয়টি এএফসি-র উপর ছেড়ে দিয়েছেন। এবং সেটা ঝুলিয়ে রাখবেন। ফেডারেশনের এক কর্তা বললেন, ‘‘পটেল যা করতে চান, তা ঘুরিয়ে এএফসি-র মাধ্যমেই করিয়ে নেবেন। আই লিগের ক্লাবগুলির তা হলে কিছু করার থাকবে না।’’