কৃতজ্ঞ: পাশে থাকার জন্য বিরাট ও সতীর্থদের ধন্যবাদ দিচ্ছেন সিরাজ।
বাবার অকস্মাৎ মৃত্যুর ধাক্কাও তাঁকে লক্ষ্য থেকে দূরে সরাতে পারেনি। দেশে ফিরে না গিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় থেকে বাবার দেখা স্বপ্ন সফল করার জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন মহম্মদ সিরাজ। আর এই লড়াইয়ে সিরাজ পাশে পেয়েছেন তাঁর অধিনায়ক, বিরাট কোহালিকে।
গত শুক্রবার ভারতীয় দলের অনুশীলনের শেষে সিরাজ খবর পান, তাঁর বাবা মারা গিয়েছেন। এর পরে ভারতীয় বোর্ডের প্রস্তাব সত্ত্বেও দেশে না ফিরে অস্ট্রেলিয়ায় থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। যা নিয়ে হায়দরাবাদের এই তরুণ পেসার বলেছেন, ‘‘বাবার মৃত্যু আমার কাছে বিশাল একটা ধাক্কা। আমার জীবনের স্তম্ভ ছিলেন আমার বাবা। তিনি চেয়েছিলেন, আমি যেন দেশের মুখ উজ্জ্বল করি। সেটাই এখন আমার লক্ষ্য।’’
এই কঠিন সময়ে ২৬ বছর বয়সি সিরাজ পাশে পেয়েছেন তাঁর অধিনায়ককে। একই রকম ধাক্কা নিজের ক্রিকেট জীবনের শুরুতে পেয়েছিলেন কোহালিও। ২০০৭ সালে দিল্লির হয়ে রঞ্জি ট্রফি ম্যাচ খেলার সময় বাবাকে হারিয়েছিলেন কোহালি। কিন্তু পরের দিনই ব্যাট হাতে নেমে দুরন্ত ইনিংস খেলেন। অধিনায়ক কী বলেছেন আপনাকে? ভারতীয় বোর্ডের ওয়েবসাইটে সিরাজ বলেছেন, ‘‘বিরাট ভাই আমাকে বলে, ‘মিয়াঁ, টেনশন নিয়ো না। মনকে শক্ত রাখো। তোমার বাবা চেয়েছিল, দেশের হয়ে খেলবে তুমি। সেটা মাথায় রেখে এগিয়ে যাও।’ অধিনায়কের মুখে এই কথা শুনতে পেয়ে আমার খুব ভাল লেগেছিল।’’
সিরাজের বাবা মহম্মদ ঘউস অটো চালিয়ে রোজগার করে ছেলের ক্রিকেট প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। তরুণ ফাস্ট বোলারের জীবনে তাঁর বাবার ভূমিকা ছিল বিশাল। যে কারণে ৫৩ বছর বয়সে বাবার মৃত্যু বড় ধাক্কা দিয়ে যায় সিরাজকে। কিন্তু লড়াইয়ের নতুন রসদও তিনি পেয়েছেন। ভারতের তরুণ পেসার বলেছেন, ‘‘আমার মা আমাকে একই পরামর্শ দিয়েছেন। বলেছেন, অস্ট্রেলিয়া থেকে ফিরে না আসতে। মা বলেন, ‘সবাইকে একদিন না একদিন চলে যেতেই হবে। আজ তোমার বাবা মারা গিয়েছেন, কাল আমি যাব। বাবা যা চেয়েছিলেন তোমার জন্য, সেটা পূরণ করার চেষ্টা করো। নিজের কাজটা ঠিক মতো করে যাও। ভারতের হয়ে ভাল খেলো।’ এখন আমি সেই লক্ষ্যেই এগোতে চাই।’’
বিরাট তাঁকে পরামর্শ দিয়েছেন, এই রকম পরিস্থিতিতে নিজেকে শক্ত রাখতে পারলে, সেটা ভবিষ্যতে কাজে দেবে। তবে অধিনায়কের পাশাপাশি সতীর্থদেরও ধন্যবাদ দিতে চান সিরাজ। তিনি বলেছেন, ‘‘এই কঠিন সময়ে দলের সবাই আমার পাশে দাঁড়িয়েছে। ওদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।’’ সিরাজ আরও বলেছেন, ‘‘শারীরিক ভাবে বাবা আমার পাশে না থাকলে কী হবে, ওঁর ছায়া সব সময়
আমার সঙ্গে থাকবে।’’