ক্যাপ্টেন’স ডে আউট। ইংল্যান্ডকে ওড়ানোর হুঙ্কার। ছবি: এএফপি
টেস্ট জিতে উঠে টিম ইন্ডিয়ার পরবর্তী স্টেশন কী?
মুম্বই টেস্টের আগে মাঝে কয়েক দিনের ছুটিতে বাড়ি ফিরে যাওয়া? তা হবে। কিন্তু তারও আগে আর একটা জিনিস হবে।
যুবরাজ সিংহর বিয়ের অনুষ্ঠানে যাওয়া হবে।
মঙ্গলবারই যুবরাজের বিয়ের অনুষ্ঠানের মেহেন্দি পর্ব হয়ে গেল। আর তা হল ভারতীয় টিম হোটেলই। যেখানে টেস্ট অধিনায়ক বিরাট কোহালি সহ উপস্থিত থাকল গোটা টিম। বিকেলে মাঠ ছেড়ে বেরনোর আগে কোহালি বলেও গেলেন যে, ‘‘সন্ধেটা এ বার উপভোগ করা যাবে ভাল ভাবে। আরও বেশি রিল্যাক্সড ভাবে যুবির অনুষ্ঠানে থাকতে পারবে ছেলেরা। আমাদের জেতা আর যুবরাজের অনুষ্ঠান দু’টোই এক দিনে হওয়া একটু কাকতালীয় হয়তো, কিন্তু বেশ ভাল ব্যাপার।’’
শোনা গেল, মেহেন্দি-মেহফিলের মেনুটাও জিভে জল আনার মতো। চাইনিজ, কন্টিনেন্টাল, ভারতীয় ডিশ, সবই থাকছে। বুধবার বিয়ে। তার আগে আজ, মঙ্গলবার মেহেন্দি অনুষ্ঠান হয়ে গেল। ভারতের মোহালি টেস্ট জয় আর যুবরাজের প্রাক্-বিবাহ অনুষ্ঠান দু’টো একই দিনে ঘটতে পারে। কিন্তু দু’টোর মেনু কিন্তু মোটেও এক রকম হল না। মেহেন্দি অনুষ্ঠানে যদি চাইনিজ-কন্টিনেন্টালে অতিথি আপ্যায়ন ঘটে থাকে, মাঠে কোহালির টিম কিন্তু অতিথি আপ্যায়ন করল অপমানের তেতো ওষুধ গিলিয়ে।
ইংল্যান্ডকে এক কথায় উড়িয়ে দিল ভারত।
সোমবারই চার উইকেট চলে গিয়েছিল ইংল্যান্ডের। মঙ্গলবার ভারতের সামনে তারা মাত্র ১০৪ রানের লক্ষ্যমাত্রা দিতে পেরেছিল শেষ পর্যন্ত। পার্থিব পটেলের বেধড়ক মারে যে রানটা তুলতে বিশেষ সময় লাগেনি ভারতের। আর মঙ্গলবারের পর একটা ব্যাপার পরিষ্কার হয়ে গেল। ভারতই একমাত্র পারে এর পর টেস্ট সিরিজ জিততে। মুম্বই বা চেন্নাই— যে কোনও একটা টেস্ট জিতলেই সিরিজ পকেটে চলে আসবে কোহালির। ইংল্যান্ড সেখানে বড়জোর পারে সিরিজটা ড্র করতে। কিন্তু তা করতে হলে কুকের টিমকে জিততে হবে শেষ দু’টো টেস্ট। যা বর্তমান পরিস্থিতি বিচারে বেশ অবিশ্বাস্য শোনাবে।
কারণও আছে। একে তো রাজকোট টেস্টে ভারতের উপর কর্তৃত্ব করে যে বিশ্বাস প্রাপ্ত হয়েছিল, তা উধাও পরের দু’টো টেস্টই হেরে। দ্বিতীয়ত, হাসিব হামিদ। বছর উনিশের ইংল্যান্ড ওপেনারের সিরিজ মোটামুটি শেষ হয়ে গেল। যা খবর, তাঁকে দেশে ফিরে যেতে হচ্ছে বাঁ হাতে চোটের কারণে। সিরিজে ০-২ পিছিয়ে থাকা অবস্থায় এই খবর মানে তো টিমের আরও আইসিইউয়ে ঢুকে পড়া!
বিরাটকে দেখে মনে হচ্ছিল, ব্রিটিশদের এ হেন দুর্দশা বোধহয় ভেতর-ভেতর ভালই উপভোগ করছেন। ইংল্যান্ডে যখন পরপর ভোগান্তি, কোহালির টিমে তখন ‘প্রবলেম অব প্লেন্টি।’ ঋদ্ধিমান সাহার জায়গা টিমে এত দিন চূড়ান্ত নিশ্চিত ছিল। কিন্তু মোহালিতে পার্থিব যা খেললেন, তাতে ঋদ্ধির জায়গা অনিশ্চিত না হলেও চাপে। এর বাইরে লোয়ার অর্ডারের পারফরম্যান্স, অশ্বিনদের বারবার ঝলসে ওঠা তো আছেই।
‘‘প্রত্যেক ম্যাচে আমাদের লোয়ার অর্ডার ৮০-৮৫ রান করছে,’’ এ দিন বলছিলেন কোহালি। তাঁর আরও একটা ব্যাপার ভাল লাগছে। ‘‘এক বছর আগেও বলা হত যে, আমরা নাকি অন্যায় ভাবে জিতছি। টার্নারে প্রতিপক্ষকে ফেলে জিতছি। এখন দেখছি প্রশ্নটা পাল্টে গিয়েছে। এখন প্রশ্নটা দাঁড়িয়েছে, ভাল উইকেটে আমরা কী ভাবে জিতছি,’’ বলে দেন কোহালি। টেস্ট জয়ের সঙ্গে যা নিঃসন্দেহে আরও একটা বড় জয়।
ইংল্যান্ড
প্রথম ইনিংস: ২৮৩
দ্বিতীয় ইনিংস (আগের দিন ৭৮-৪)
রুট ক রাহানে বো জাডেজা ৭৮
ব্যাটি এলবিডব্লিউ জাডেজা ০
বাটলার ক জাডেজা বো জয়ন্ত ১৮
হামিদ ন.আ. ৫৯
ওকস ক পার্থিব বো শামি ৩০
রশিদ ক উমেশ বো শামি ০
অ্যান্ডারসন রান আউট ৫
অতিরিক্ত ৯, মোট ২৩৬।
পতন: ২৭, ৩৯, ৭০, ৭৮, ৭৮, ১০৭, ১৫২, ১৯৫, ১৯৫।
বোলিং: শামি ১৪-৩-৩৭-২, উমেশ ৮-৩-২৬-০, অশ্বিন ২৬.২-৪-৮১-৩, জাডেজা ৩০-১২-৬২-২, জয়ন্ত ১২-২-২১-২।
বিজয় ক রুট বো ওকস ০
পার্থিব ন.আ. ৬৭
পূজারা ক রুট বো রশিদ ২৫
কোহালি ন.আ. ৬
অতিরিক্ত ৬, মোট ১০৪-২।
পতন: ৭, ৮৮।
বোলিং: অ্যান্ডারসন ৩-২-৮-০, ওকস ২-০-১৬-১, রশিদ ৫-০-২৮-১, স্টোকস ৪-০-১৬-০, মইন ৩-০-১৩-০, ব্যাটি ৩.২-০-১৮-০।