পরিবর্তন: রঞ্জিতে মনোজ-ডিন্ডারা খেলতে পারেন ইডেনে। ফাইল চিত্র
এক বছর পরীক্ষামূলক ভাবে চলার পরেই রঞ্জি ট্রফির নিরপেক্ষ কেন্দ্রে ম্যাচ খেলানোর পদ্ধতি সম্ভবত বন্ধ করে দিতে হচ্ছে। আসন্ন মরসুমে পুরনো পদ্ধতিতেই রঞ্জি ট্রফি খেলা হওয়ার সম্ভাবনা। যেখানে বাংলা, দিল্লি বা মুম্বই তাদের ঘরের মাঠেও অনেক ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে।
এ ব্যাপারে অধিকাংশ রঞ্জি ট্রফি টিম এবং সংশ্লিষ্ট রাজ্য ক্রিকেট সংস্থাদের নিরপেক্ষ কেন্দ্র নিয়ে আপত্তি তোলাটাই প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একে তো রঞ্জিতে ঘরের মাঠেও খেলা দেখার ভিড় এখন আর হয়ই না। ঘরোয়া ক্রিকেটের কোনও টুর্নামেন্ট দেখা নিয়েই সে রকম কোনও উৎসাহ দেখা যায় না।
তবু যেটুকু যা আগ্রহ ছিল, সেটা নিজেদের দলকে নিয়ে। যেমন বাংলার মনোজ তিওয়ারি, অশোক ডিন্ডা-রা ইডেনে খেললে তবেই স্থানীয় জনতা মাঠে গিয়ে খেলা দেখার তাগিদ অনুভব করে। কিন্তু গত বছর থেকে পাল্টে যাওয়া পদ্ধতিতে নিজেদের দলের খেলা ঘরের মাঠে দেখার সুযোগ নেই। বাংলাকে সব রঞ্জি ম্যাচ খেলতে হয়েছে বাইরে। ইডেনে একটিও ম্যাচ তারা খেলতে পারেনি। যার ফলে কলকাতার ক্রিকেটভক্তরা নিজেদের রঞ্জি দলের ম্যাচ দেখারও সুযোগ পাননি।
নিরপেক্ষ কেন্দ্র নিয়ে আপত্তি ওঠার আর একটি বড় কারণ, খরচ বেড়ে যাওয়া। আগে যেমন প্রত্যেকটি সংস্থা ঘরের মাঠে বেশ কিছু ম্যাচ খেলার সুবিধে পেত, এখন আর তা নেই। সব ম্যাচে বাইরে পাঠাতে হচ্ছে বলে খরচ দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। সেটা নিয়েও অনেক রাজ্য সংস্থা অনুযোগ জানিয়েছে বোর্ডের সভায়। গত বছর রঞ্জি চলার মধ্যেই পশ্চিমাঞ্চল থেকে অনেক রাজ্য সংস্থা সরব হয়েছিল।
আগামী ২৩ মে সব রঞ্জি দলের অধিনায়ক ও কোচকে নিয়ে বৈঠক হচ্ছে। প্রথমে ঠিক ছিল এই বৈঠক হবে দিল্লিতে। কিন্তু এখন তা পাল্টে আয়োজন করা হচ্ছে মুম্বইয়ে বোর্ডের সদর দফতরে। সেখানে প্রত্যেকটি রঞ্জি দলের অধিনায়ক ও কোচকে তো আসতে বলা হয়েছেই, সঙ্গে আমন্ত্রিত টেকনিক্যাল কমিটির চেয়ারম্যান সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এবং গ্রাউন্ড-পিচ কমিটির চেয়ারম্যানও।
বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, নিরপেক্ষ কেন্দ্রের ভাবনা মূলত নিয়ে এসেছিলেন প্রাক্তন বোর্ড প্রেসিডেন্ট অনুরাগ ঠাকুর। তিনি এখন আর না থাকায় এই পদ্ধতি পাল্টে ফেলার মতের বিরুদ্ধে বলার তেমন কেউ নেই। শুধু কর্তারা নন, অধিনায়ক ও কোচেদের মধ্যেও অনেকে নিরপেক্ষ কেন্দ্রে ম্যাচ করার নিয়ম চালু রাখার বিপক্ষেই মত দেবেন। অন্তত ছয় থেকে সাত জনের সঙ্গে কথা বলে সে রকমই ইঙ্গিত পাওয়া গেল।
যা পরিস্থিতি, রঞ্জি ট্রফি ফিরে যেতে পারে তার পুরনো কাঠামোয়। বাংলা বনাম মুম্বই খেলা মানে শেষ বার যারা ঘরের মাঠে খেলেছে, এ বার তাদের বাইরে যেতে হবে। তাতে ঘরোয়া ক্রিকেটের প্রতি এখনও অনুরাগ থাকা দর্শকেরা ঘরের মাঠে নিজেদের দলের খেলা দেখতে পাবেন। আবার ক্রিকেটারেরাও পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ পাবেন। খরচও কমবে। সব দিক থেকেই গ্রহণযোগ্য ফর্মুলা।
ঘরের মাঠে যাতে কোনও টিম ইচ্ছা মতো পছন্দের পিচ বানিয়ে খেলতে না পারে, সেই কারণেই নিরপেক্ষ কেন্দ্রের ভাবনা এসেছিল। বোর্ড কর্তারা কেউ কেউ প্রস্তাব দিয়েছেন, ভাবনাটা ধরে রাখার জন্য বোর্ডের নিরপেক্ষ পিচ প্রস্তুতকারক নিয়োগ করে দেওয়া হোক। যাতে ঘরের মাঠে নিজেদের পিচ প্রস্তুতকারক দিয়ে একতরফা পিচ বানাতে না পারে কোনও দল।