দক্ষিণ কলকাতার এক শপিং মল-এ টিমের বিপণনের কাজে ফিকরু, হোসেমি ও লেস্টার। ছবি: উত্পল সরকার
তাঁর সাম্প্রতিক ফর্ম নিয়ে মাঠের বাইরে প্রবল আলোচনা চললেও আটলেটিকো দে কলকাতার সতীর্থরা ফিকরু তেফেরার পাশে দাঁড়াচ্ছেন।
শনি-সন্ধ্যায় দক্ষিণ কলকাতার এক শপিংমলে টিমের প্রচার অনুষ্ঠানে এসে কলকাতার আটলেটিকোর স্টপার হোসেমি বলে গেলেন, “ফিকরু একা আমাদের টিমে খেলে না। আরও দশ জন মাঠে খেলে। টিমের হার-জিতে প্রত্যেকেরই সমান দায়-দায়িত্ব। তা ছাড়া, সব ম্যাচে গোল করা যায় না। মেসি-রোনাল্ডোও পারবে না। ফিকরু মাঠে নিজের সেরাটা দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করছে। আমার বিশ্বাস, ও আবার গোল করেই সবাইকে জবাব দেবে।”
অনুষ্ঠানে হোসেমি ও লেস্টার ফার্নান্ডেজের সঙ্গে ফিকরুও এসেছিলেন বিপণনের কাজে। চব্বিশ ঘণ্টা আগেই গুরুত্বপূর্ণ চেন্নাইয়ান ম্যাচে গোলের সহজ সুযোগ হাতছাড়া করলেও এ দিন ইথিওপিয়ান স্ট্রাইকারের বহিরঙ্গ দেখে একবারও মনে হল না, তিনি কোনও ভাবে চাপে। বরং চনমনে, হাসিখুশি আটলেটিকোর স্ট্রাইকার তাঁর ভক্তদের দেদার অটোগ্রাফ দেওয়া থেকে শুরু করে সেলফি তোলা দারুণ উপভোগ করলেন।
প্রচারের জন্য শপিংমলে উপস্থিত উত্সাহীদের জন্য বেশ কিছু প্রতিযোগিতামূলক খেলারও ব্যবস্থা রেখেছিলেন আটলেটিকো কর্তারা। যেখানে জিততে পারলে ফিকরু-হোসেমিদের সই করা জার্সি, ছোটখাটো উপহার ছিল। ছিল পরের মঙ্গলবারের আটলেটিকো দে কলকাতা বনাম নর্থইস্ট এফসি ম্যাচের বিনামূল্যে টিকিট পাওয়ার সুযোগও। এখানেই শেষ নয়। যে ভাগ্যবান টিকিট জিতলেন, তিনি বাড়তি পুরস্কার হিসাবে পেলেন ফিকরুর অটোগ্রাফ। তাঁর সঙ্গে ছবি তোলার সুযোগও। শপিংমলের উপচে পড়া ভিড়ে ফিকরু-ই তখন সুপারস্টার। তা সে মাঠের বাইরে তাঁর ফর্ম নিয়ে যতই সমালোচনা চলুক না কেন!
এ দিনের অনুষ্ঠানে আবার নিজের জন্মদিন সমর্থকদের মধ্যেই কেক কেটে পালন করলেন আটলেটিকোর ডিফেন্ডার হোসেমি। পরে সমর্থকদের উদ্দেশে তাঁর মন্তব্য, “কোনও টিমই একটানা ম্যাচ জিততে পারে না। হার-জিত খেলারই অঙ্গ। আমার একটাই আবেদন, যে ভাবে শুরু থেকে সবাই আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, পরেও ম্যাচগুলোতেও সেই ভাবে আমাদের সাপোর্ট করুন। আমরা আবার জয়ে ফিরবই।”
কিন্তু টিমের হঠাত্ ছন্দপতনের কারণ কী? হোসেমি বলছিলেন, “এ সব খুব সাধারণ ব্যাপার। টিম জিতলে আর ছন্দপতনের মতো শব্দ ব্যবহার করা হত না। দু’তিনটে ম্যাচের খারাপ রেজাল্টে আমাদের আত্মবিশ্বাসে কোনও ঘাটতি হয়নি। তা ছাড়া আমরা তো এখনও পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষেই আছি। তা হলে সমস্যা থাকবে কেন? এখন আমাদের শুধু নিশ্চিত করতে হবে, যাতে আর কেউ আমাদের না ধরতে পারে।”
হোসেমি এ সব বললেও, ফিকরু কিচ্ছু বলেননি। একেবারে মুখে কুলুপ এ দিন তাঁর। তবে আটলেটিকো কর্তাদের দাবি, ফিকরুর প্রচণ্ড মাথাব্যথা করছিল। তার পরেও প্রশ্ন উঠল, সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময়ই অসুস্থ হয়ে পড়লেন ফিকরু? কেউ কেউ এমনও ইঙ্গিত করলেন, তাঁর ফর্ম নিয়ে প্রশ্ন উঠত বলেই মুখে কুলুপ এঁটেছেন ফিকরু। প্রশ্ন-উত্তরের পর্ব এড়িয়ে যাওয়ার কারণও হয়তো সেটাই!