ভারতীয় টেনিসে মহিলা তারকা বলতে প্রথমেই কার কথা মনে পড়ে? বেশির ভাগই এক সুরে বলবেন, সানিয়া মির্জা। কিন্তু সানিয়াই প্রথম নন। এর আগেও টেনিসের বিশ্ব দরবারে ভারতকে পৌঁছে দিয়েছিলেন একজন মহিলা টেনিস তারকা।
নিরুপমা বৈদ্যনাথন। সানিয়া মির্জার আগে ভারতের টেনিস সুন্দরী বলা হত নিরুপমাকেই।
নিরুপমাই প্রথম ভারতীয় মহিলা যিনি বিশ্বের দরবারে প্রথম ২০০-র মধ্যে সিঙ্গলস র্যাঙ্কিংয়ে স্থান পেয়েছিলেন।
কোয়ম্বত্তুরে জন্ম নিরুপমার। পাঁচ বছরেই হাতেখড়ি টেনিসে, বাবা কে এস বৈদ্যনাথন যদিও তামিলনাড়ুর রঞ্জি দলের ক্রিকেটার ছিলেন। রাজ্য স্তরের অনূর্ধ্ব ১২ প্রতিযোগিতায় প্রথম বার নাম দিয়েই সেমিফাইনালে পৌঁছে যান নিরুপমা।
অনূর্ধ্ব ১৪ জেতেন ১৩ বছর বয়সে। ১৯৯১ সালে ১৪ বছরে প্রথম ন্যাশনাল উওমেন টাইটলস খেতাব জেতেন। টানা চার বছর এর পর এই খেতাব জেতেন তিনি।
১৯৯৬ সালে লুক্সেমবুর্গ চলে যান তিনি। ১৮ বছর বয়স থেকে শুরু করেন আন্তর্জাতিক অভিযান। আন্তর্জাতিক স্তরে ম্যাচ জেতা শুরু করেন। সিঙ্গলস ও ডাবলসে অসংখ্য ম্যাচ জেতেন তিনি।
১৯৯৭ সালে ফ্লোরিডায় থাকা শুরু করেন। প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করেন তৈরি করেন ডেভিড ও’মিয়ারার কাছে। এই ডেভিড লিয়েন্ডার পেজকেও দু’বছর প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন।
১৯৯৮ সালে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে প্রথম ভারতীয় মহিলা হিসাবে অংশ নেন তিনি। প্রথম রাউন্ডে জিতেওছিলেন নিরুপমা। হারিয়েছিলেন ইতালির গ্লোরিয়া পিৎজিচিনিকে।
১৯৯৮ সালেই ব্যাঙ্ককে এশিয়ান গেমসে মহেশ ভূপতির সঙ্গে মিক্সড ডাবলসে জিতেছিলেন ব্রোঞ্জ পদকও।
২০০০ সালে সিডনি অলিম্পিকে সঞ্জীব মলহোত্রর সঙ্গে অংশ নিয়েছিলেন তিনি।
এর পর আসতে আসতে খেলা কমিয়ে দিয়ে ২০০৩ সালে টেনিস থেকে অবসর নেন নিরুপমা বৈদ্যনাথন। বিয়ের পরে হলেন নিরুপমা সঞ্জীব। সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়র সঞ্জীব বালাকৃষ্ণনের সঙ্গে ক্যালিফোর্নিয়াতেই তাঁর আলাপ।
টেনিসে আবারও ফিরে আসেন ২০১০ সালে। কমনওয়েল্থ গেমসে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেন নিরুপমা। ৩৩ বছর বয়সে গুয়াংঝোউয়ে এশিয়ান গেমসেও অংশ নেন।
গত কয়েক বছরে বিশেষজ্ঞ ও প্রশিক্ষকের কাজ করছেন তিনি। ধারাভাষ্যকার হিসাবে বিজয় অমৃতরাজের সঙ্গেও কাজ করেছেন।
ক্যালিফোর্নিয়ার বে এরিয়ায় তাঁর প্রশিক্ষণ অ্যাকাডেমিও রয়েছে।
২০১৩ সালের অক্টোবরে ‘দ্য মুনবোলার’ নামে আত্মজীবনী প্রকাশ করেন তিনি।