চ্যাম্পিয়নের চুম্বন। ট্রফি জিতে ম্যাকিলরয়। ছবি: এএফপি
বিকেলের পড়ন্ত আলোয় দশ ইঞ্চির পাটটা গড়িয়ে গর্তে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঝলসে ওঠে কয়েক’শো ফ্ল্যাশবাল্বের রোশনাই। ভালহাল্লা কোর্সে অন্ধকার মুছে দেওয়া সেই আলোয় গল্ফের মসনদে রবিবার অভিষেক ঘটল নতুন সম্রাটের। ব্রিটিশ ওপেনের পর পিজিএ চ্যাম্পিয়নশিপও জিতে গল্ফে নতুন যুগের সূচনা করলেন রোরি ম্যাকিলরয়।
প্রবল বৃষ্টি, ক্রমশ কমতে থাকা আলো এবং শেষ রাউন্ডের মাঝপথে তিন শটে পিছিয়ে পড়া সত্ত্বেও চতুর্মুখী প্রতিযোগিতা জিতে উচ্ছ্বসিত আইরিশ তারকা বলেছেন, “এ ভাবে লড়ে জিততে পারাটা বিরাট প্রাপ্তি। এর মানে আমি পিছিয়ে পড়েও জিততে পারি। বিশ্বের সেরাদের হারানোর ক্ষমতা রাখি!” ২০১২-র পর আরও একবার এখানে জিতে ওয়ানামেকার ট্রফি এবং দশ লক্ষ চৌঁত্রিশ হাজার ডলারের চেক পেলেন ম্যাকিলরয়।
মাত্র পঁচিশ বছর বয়সের মধ্যে চারটি মেজর জেতার কৃতিত্ব আগে ছিল টাইগার উডস, জ্যাক নিকোলাস এবং টম মরিস জুনিয়রের। সেই ক্লাবে ঢুকলেন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটিশ ওপেন এবং দু’টি পিজিএ চ্যাম্পিয়নশিপের মালিক ম্যাকিলরয়। পিঠোপিঠি মেজর জেতার বিরল নজির গড়ে।
আগের তিন মেজরে শেষ রাউন্ডে তাঁর জয় মোটামুটি নিশ্চিত ছিল। রবিবার কিন্তু রুদ্ধশ্বাস নাটক চলে পুরো আঠারো হোল। পাঁচ মেজর-জয়ী ফিল মিকেলসন, বিশ্বের চার নম্বর হেনরিক স্টেনসন এবং ব্রিটিশ ও যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে রানার্স রিকি ফাওলারের সঙ্গে ষোলো হোল পর্যন্ত যুদ্ধ চলে ম্যাকিলরয়ের। শেষে ৬৮ স্কোর-সহ জেতেন এক শটের ব্যবধানে মিকেলসনকে হারিয়ে। ষোলো-আন্ডার ২৬৮ মোট স্কোরে।
তিন সপ্তাহ আগে ব্রিটিশ ওপেন জেতার পর থেকে ম্যাকিলরয়ের এই খেতাবের হ্যাটট্রিক মনে পড়াচ্ছে ২০০৬-এ টাইগার উডসের টানা পাঁচটি খেতাবকে। বলা শুরু হয়েছে, নিজের সেরা সময় উডস যে দাপটে শাসন করতেন, ম্যাকিলরয়ের খেলায় সেই দাপটটাই ফুটে উঠছে এখন। এই টুর্নামেন্টে শেষ রাউন্ডে তিনি যে রকম জেতার জেদ দেখিয়েছেন, তাতে মিকেলসনের মতো প্রতিদ্বন্দ্বীও বলছেন, “রোরি এখন বাকিদের থেকে অনেক এগিয়ে।”
টাইগার উডস-পরবর্তী যুগের নতুন নায়ক যেন পেয়ে গিয়েছে গল্ফ!