যুযুধান: এরিক তেন হাগ ও মাউরিসিয়ো পোচেতিনো। ছবি এএফপি।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালের প্রথম পর্বে প্রধান আকর্ষণ হতে পারত সন হিউং মিন বনাম মাতাইস দে লিখ্ত দ্বৈরথ। কিন্তু ম্যাঞ্চেস্টার সিটি-র বিরুদ্ধে কোয়ার্টার ফাইনালে দ্বিতীয় পর্বে ফের হলুদ কার্ড দেখে দল থেকে ছিটকে গিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার তারকা।
প্রধান স্ট্রাইকার হ্যারি কেন চোট পেয়ে ছিটকে যাওয়ার পরে সন কার্যত একাই তাঁর শূন্যস্থান পূরণ করেছিলেন। অথচ মঙ্গলবার রাতে দুরন্ত ছন্দে থাকা আয়াখসের বিরুদ্ধে তাঁকে ছাড়াই দল নামাতে হবে ম্যানেজার মাউরিসিয়ো পোচেতিনোকে। চোটের কারণে ছিটকে গিয়েছেন স্যাস অগেয়ি, এরিক লামেলা ও হ্যারি উইঙ্কিস। তার উপরে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে আগের ম্যাচে ওয়েস্ট হ্যামের বিরুদ্ধে হারের ধাক্কা। তাই ঘরের মাঠে ম্যাচ হলেও একেবারেই স্বস্তিতে নেই টটেনহ্যাম শিবির। সাংবাদিক বৈঠকে পোচেতিনো বলেছেন, ‘‘সন দুর্দান্ত ফুটবলার। আমাদের দলের সম্পদ। শুধু সন নয়, হ্যারি কেনের অভাবও অনুভব করব।’’ তিনি যোগ করেছেন, ‘‘কেন এই মুহূর্তে বিশ্বের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার। ফুটবল দলগত খেলা। আমি বিশ্বাস করি, আয়াখসের বিরুদ্ধে ৯০ মিনিট নিজেদের উজাড় করে দেবে ফুটবলারেরা।’’ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ কখনও জিততে পারেনি টটেনহ্যাম। ম্যান সিটিকে হারিয়ে তাদের সেমিফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জনকে অনেকেই অঘটন হিসেবে দেখছেন। পোচেতিনো বলছেন, ‘‘যোগ্য দল হিসেবেই আমরা শেষ চারে উঠেছি। আশা করছি, সেমিফাইনালে লড়াই হবে।’’
সাংবাদিক বৈঠকে পোচেতিনোর সঙ্গে ছিলেন টটেনহ্যাম তারকা লুকাস মৌরা। তিনি বলেছেন, ‘‘ম্যান সিটির মতো বড় দলকে হারিয়ে আমরা সেমিফাইনালে উঠেছি। আশা করছি, আয়াখসের বিরুদ্ধেও জিতব।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘দলগত সংহতিই আমাদের অস্ত্র। তাই গোল কে করল তা গুরুত্বপূর্ণ নয়। জয়টাই আসল।’’
ঠিক উল্টো ছবি আয়াখস শিবিরে। অ্যাওয়ে ম্যাচের আগে ফুরফুরে মেজাজে দে লিখ্তরা। টানা আট ম্যাচ অপরাজিত আয়াখস। তার উপরে গত সপ্তাহে কোনও ম্যাচ না খেলে তরতাজা ফুটবলারেরা। বায়ার্ন মিউনিখে পেপ গুয়ার্দিওলার সহকারী হিসেবে কাজ করা আয়াখস ম্যানেজার এরিক তেন হ্যাগ অবশ্য সতর্ক।
১৯৯৫-’৯৬ মরসুমে এসি মিলানকে হারিয়ে শেষ বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছিল আয়াখস। সেই দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন এডউইন ফান ডার সার। প্রাক্তন ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড গোলরক্ষক উচ্ছ্বসিত আয়াখসের সাফল্যে। তিনি বলেছেন, ‘‘আয়াখসকে নিয়ে বিশ্ব জুড়ে যে ভাবে আবার চর্চা চলছে, তাতে মনে হচ্ছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেই গিয়েছি।’’ আয়াখসের দুর্দান্ত সাফল্যের রহস্যও ফাঁস করলেন তিনি। বলেছেন, ‘‘আয়াখসের দর্শন হচ্ছে, ট্রফি জেতার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার তৈরি করা। তাই অধিকাংশ ফুটবলারই আয়াখসের অ্যাকাডেমি থেকে উঠে এসেছে। আশা করছি, এ বার আয়াখসই ইউরোপ সেরা হবে। সেই ক্ষমতা রয়েছে এই দলের।’’
মঙ্গলবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগে: টটেনহ্যাম বনাম আয়াখস (রাত ১২.৩০, সোনি টেন টু চ্যানেলে)।