রিংয়ের মধ্যে লোক বাড়িয়ে ম্যাচ নিয়ে গেল ধোনি

কলকাতা নাইট রাইডার্সের থেকে চেন্নাই জয় চুরি করে নেওয়ার কয়েক দিন আগে স্টিভন ফ্লেমিংয়ের একটা মন্তব্য আমার নজর কেড়েছিল; ‘‘কেকেআর আমাদের থেকে অন্য ধরনের ক্রিকেট খেলে’’ কিন্তু ‘‘ওদের আমরা প্রচুর সম্মান করি।’’

Advertisement

রবি শাস্ত্রী

শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৫ ০২:৫১
Share:

কলকাতা নাইট রাইডার্সের থেকে চেন্নাই জয় চুরি করে নেওয়ার কয়েক দিন আগে স্টিভন ফ্লেমিংয়ের একটা মন্তব্য আমার নজর কেড়েছিল; ‘‘কেকেআর আমাদের থেকে অন্য ধরনের ক্রিকেট খেলে’’ কিন্তু ‘‘ওদের আমরা প্রচুর সম্মান করি।’’

Advertisement

ব্যাপারটার একটু ব্যাখ্যা দরকার। চেন্নাইয়ের দুই ওপেনার নতুন বলকে এতটাই ঘৃণা করে যে, দেখলেই মাছি মারার মতো ঠাস করে মারে। কলকাতা সেখানে অনেকটা গুছিয়ে শুরু করার পক্ষপাতী। মঙ্গলবার হারের পর গৌতম গম্ভীর যেমনটা বলেছে আর কী—প্রথম চারের কেউ পনেরো ওভার পর্যন্ত ব্যাট করলে ভাল হত।

চেন্নাই হল অটোমেটিক মেশিনগান, যার থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে বুলেট বেরোয়। কলকাতা সেই তুলনায় গাদা বন্দুক। সেটাও কার্যকরী কিন্তু পুরোনো আমলের অস্ত্র।

Advertisement

চেন্নাই টি-টোয়েন্টি খেলে খেলাটায় আরও কিছু নতুন আবিষ্কার যোগের আনন্দে। কলকাতা সেখানে এখনও কুড়ি ওভারের ফর্ম্যাটকে দাবা বোর্ড হিসেবে দেখে। যেখানে সব চাল আগে থেকে ভেবে রাখতেই হয়।

কলকাতার দর্শনটা চেন্নাইয়ের সম্ভবত ভাল ভাবে জানা ছিল। যে দল সিঙ্গলস আর টুজ-এ স্কোরবোর্ড সচল রাখতে পছন্দ করে তাকে সেই খুচরো রান তোলা থেকে আটকাও। তার জন্য চেন্নাই রিংয়ের ভেতর বেশি ফিল্ডার রেখেছিল, যারা সারাক্ষণ বলকে তাড়া করে গেল, সব সময় নিজেদের ভেতর ব্যবধান কম রাখল। যার ফলে পাঠান আর দুশখাতে বিশেষ ফাঁকফোকর বার করতে পারেনি বল বাউন্ডারিতে পাঠানোর জন্য। রান আসা প্রায় থেমেই গিয়েছিল। একটা সময় টানা ১১ ওভার কোনও বাউন্ডারি আসেনি। ওরা কোনও বড় ওভারের অপেক্ষায় ছিল, কিন্তু সেটা আর এলই না।

কলকাতা ভেবে বিরক্ত হবে যে, একটা ছোট টার্গেট তাদের হাত থেকে ফস্কে গিয়েছে। কলকাতা হয়তো রাগত হবে যে, আহত অশ্বিনের দু’টো না করতে পারা ওভার চেন্নাইয়ের কোনও বিপদই ডেকে আনেনি। কলকাতা হতাশও হবে, ওদের আটটা উইকেট ঝটপট পড়ে যাওয়ায়। তবে এখন এই সবই মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে হবে কলকাতাকে। কারণ ওদের যারা এই যন্ত্রণা দিয়েছে তারা তো এখন ওদের দুর্গেই এসে পড়েছে। কিন্তু ঈশ্বর না করুন, ওই রকম বোকামি যদি কলকাতা ফের করে বসে তা হলে ওদের জন্য একাধিক প্রশ্ন অপেক্ষা করবে।

অবশ্য কলকাতার ইতিবাচক দিক হল, ওদের বোলিংকে বেশ ধনী দেখিয়েছে। চেন্নাইয়ে সুনীল নারিনকে বাইরে থাকতে হয়েছে, কিন্তু ব্র্যাড হগকে মাস্টার দেখিয়েছে, বিশেষত ওর বিভ্রান্তকারী চায়নাম্যানগুলোয়। রায়না পর্যন্ত হগের কোন বলটা বাইরের দিকে যাবে ঠিকঠাক ধরতে পারেনি। প্যাট কামিন্সকে বোলিং রানআপে রিল্যাক্সড দেখালেও ব্যাটসম্যানদের রিল্যাক্সড থাকতে দেয়নি। পীযূষ চাওলা টিমের প্রধান স্পিনারের ভূমিকা নিতে তৈরি। কোনও ডাকটিকিট সংগ্রহকারী যে ভাবে স্ট্যাম্প বেছে বেছে জমায়, কেকেআর সে ভাবেই বেছে বেছে বোলারদের নিয়েছে!

পাশপাশি ঘরের মাঠে একটা ছোট স্কোরকে সফল ভাবে রক্ষা করতে পারায় চেন্নাইয়ের খুশিতে থাকার কথা এখন। আজ ইডেনেও ওরা কলকাতাকে ছেড়ে কথা বলবে না। আইপিএলে এই দু’শহরের লড়াই খুব কমবারই সাদামাঠা হয়েছে। ফলে বৃহস্পতিবারের রাতের জন্য অপেক্ষাটা সহ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement