সাক্ষী মালিক ও তাঁর নতুন ‘কোচ’ মারিয়া।
আর রেপেসাজ রাউন্ডে পদক নয়। টোকিওয় সাক্ষী মালিকের হাতে সরাসরি পদক দেখছেন আজারবাইজানের তিন বারের অলিম্পিক্স পদকজয়ী কুস্তিগির মারিয়া স্ট্যাডনিক।
প্রো রেসলিং লিগ (পিডব্লিউএল) খেলতে মারিয়া এখন মুম্বইয়ে। সেখান থেকে ফোনে তিনি বলছিলেন, ‘‘সাক্ষী দারুণ প্লেয়ার। রিও অলিম্পিক্সে ও ব্রোঞ্জ জিতলেও, ওর যোগ্যতা তার চেয়ে অনেক বেশি। আমার বিশ্বাস, টোকিওয় সাক্ষী আরও উঁচু পোডিয়াম পাবে।’’
মারিয়ার প্রশংসায় উদ্বুদ্ধ সাক্ষীও। এ দিন রাতে তাঁকে ফোনে ধরা হলে অলিম্পিক্স পদকজয়ী বললেন, ‘‘অলিম্পিক্সে মারিয়ার সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল। উনি যত বড় অ্যাথলিট, ততই বড় মনের মানুষ। এখনও যে কোনও দরকারে ওঁর থেকে টিপস চাই। টোকিওতে মারিয়ার বিশ্বাসের পুরো মর্যাদা দেওয়ার চেষ্টা করব।’’
ইতিমধ্যেই রোহতাকে নিজের কোচের কাছে টোকিওর জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন সাক্ষী। নিয়মিত প্র্যাকটিস তো চলছেই, অলিম্পিক্সের মতো বড় মঞ্চে কী ভাবে সাফল্য ধরে রাখা যায়, তা নিয়েও জোর কদমে খাটছেন তিনি। তবু মারিয়ার টিপস যে বিশেষ ভাবে কাজে লাগছে, সেটা স্বীকার করে নিলেন সাক্ষী। রিও অলিম্পিক্সের ব্রোঞ্জজয়ী ভারতীয় কুস্তিগির বলছিলেন, ‘‘প্রথমবার জানতাম না, অলিম্পিক্স কী বস্তু। কিন্তু রিও থেকে ফিরে বুঝেছি, শুধু ম্যাটে নেমে কুস্তির উপর ফোকাস করে পদক জেতা যাবে না। বাইরের প্রস্তুতিতেও নজর দিতে হবে। আধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে হবে। আর এখানেই মারিয়ার দেওয়া টিপসগুলো দারুণ সাহায্য করছে।’’
এ বারের পিডব্লিউএলে তারকার ছড়াছড়ি। মারিয়া তো আছেনই, আছেন তিন বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাডেলিন গ্রে, সোফিয়া ম্যাটসন ও ইয়ানা র্যাটিগনের মতো কুস্তিগিররাও। এ দিন মুম্বইয়ে মারিয়ার সঙ্গে ছিলেন ইয়ানাও। এবং তিনিও মজে সাক্ষীতে। ইয়ানার কথায়, ‘‘সাক্ষীর লড়াই আমি দেখেছি। খুব স্কিলফুল প্লেয়ার। ও যদি আরও একটু ভাল কোচিং পায়, আমার ধারণা টোকিওতে ভারতের নাম আরও উজ্জ্বল করবে।’’ সাক্ষী আপাতত টোকিওকে ‘পাখির চোখ’ করলেও, ভবিষ্যতে কোচ হওয়ার স্বপ্নেই বুঁদ তিনি। বলছিলেন, ‘‘পদক জেতার পরে ভারতে কুস্তি নিয়ে ব্যাপক উন্মাদনা দেখেছি। বিশেষ করে মেয়েদের মধ্যে। আসলে ক্যারাটে-বক্সিং মেয়েদের আত্মরক্ষার জন্য যেমন বড় অস্ত্র, তেমন কুস্তিও। আমি টোকিও অলিম্পিক্সের পরে একটা অ্যাকাডেমি খুলতে চাই।’’
তবে একা সাক্ষী নন, কুস্তিতে ভারতের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল বলে মনে করছেন মারিয়া-ইয়ানা। মারিয়ার বিশ্বাস, ‘‘এখানে কুস্তির পরিবেশ আছে। চাহিদাও ভাল। যদি পরিকাঠামো আর কোচিংয়ের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া যায়, তা হলে একটা কেন, অনেক সাক্ষী তৈরি হবে।’’ ইয়ানাও একমত মারিয়ার সঙ্গে। ‘‘পিডব্লিউএল দারুণ চ্যালেঞ্জিং লিগ। আর এটাই প্রমাণ করে এখানকার খেলাপ্রেমী মানুষ কুস্তি নিয়ে কতটা সিরিয়াস। লিগটাকে যদি সঠিক ভাবে পরিচালনা করা যায় তা হলে প্রচুর তরুণ প্লেয়ার এখান থেকেই উঠে আসবে।’’