গত বার রঞ্জি ট্রফি যেখানে শেষ করেছিলেন, এ বার সেখান থেকেই শুরু মনোজ তিওয়ারির। গত বছর মুম্বইয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে কাফ মাসলে চোট নিয়ে ব্যাট করে ১২৪ করেছিলেন। এ বার রঞ্জির প্রথম ম্যাচে ফের সেঞ্চুরি (১১০)। তফাত একটা— সে বার তাঁর সেঞ্চুরি সত্ত্বেও বাংলা ছিটকে গিয়েছিল রঞ্জি থেকে। এ বার তাঁরা ভাল জায়গায়। উত্তরপ্রদেশের বিরুদ্ধে ৪৬৬ তুলে বাংলা বিপক্ষকে ১২৬-৩ করে দিয়েছে।
কিন্তু বঙ্গ ক্রিকেটের পুরনো রোগ যে ভাল দৌড়তে দৌড়তে হঠাৎ মুখ থুবড়ে পড়া। এ দিন অভিমন্যু ঈশ্বরন (১৪২) আউট হওয়ার পর বাংলার ব্যাটিংয়ে সেই রোগই ফিরে এল যেন। মনোজ এক দিক ধরে রাখলেও অন্য দিকে ব্যাটসম্যানরা এসেছেন আর ফিরেছেন। বাংলা ৩৮২-৫ থেকে ৪৬৬ অল আউট। ‘‘স্কোর দেখে মনে হতে পারে ওদের কুলদীপই ধস নামিয়েছে। ওকে একটুও ছোট না করে বলছি, ঘটনাটা তা নয়। আমাদের ব্যাটসম্যানরাই বাজে শট খেলে ওকে উইকেট ছুড়ে দিয়েছে,’’ সন্ধেয় জয়পুর থেকে ফোনে বলছিলেন মনোজ। পঙ্কজ সাউ, শ্রীবৎস গোস্বামী ও আমির গনি— তিন ব্যাটিং ভরসাই কুলদীপের চায়নাম্যান ফাঁদে পড়েন।
বঙ্গ শিবিরে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, কুলদীপকে কী ভাবে সামলাতে হবে, তাঁর বোলিং ভিডিও দেখিয়ে বুঝিয়েছিলেন সাইরাজ বাহুতুলে। কিন্তু তাতেও শেষ পাঁচ ব্যাটসম্যানের মধ্যে তিন জন শূন্যে আউট। বাংলার টার্গেট ছিল অন্তত ৫৫০। মনোজের আফসোস, ‘‘খারাপ লাগছে, সেটা হল না। ৫৫০ তুলতে পারলে সেফ জোনে চলে যেতাম। এখন বোলারদের উপর সব নির্ভর করছে।’’
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ২২তম সেঞ্চুরি নিয়ে মনোজ বলছেন, ‘‘এই যে মরসুমটা ভাল ভাবে শুরু করতে পারলাম, এটা আমার পরিশ্রমের ফসল। নেটে, জিমে আগের চেয়ে অনেক বেশি সময় দিই। এই লড়াইয়ে দাদি (সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়) আর (ভিভিএস) লক্ষ্মণ ভাইয়ের সাহায্য পেয়েছি।’’ সঙ্গে তিনি যোগ করছেন, ‘‘সব সেঞ্চুরি স্পেশ্যাল। কোনটা কার চেয়ে ভাল, ভাবি না।’’ যেমন এখন আর ভাবেন না ঘরোয়া ক্রিকেটে ভাল খেললে জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার কথাও। তা হলে ভাল খেলার মোটিভেশন কী? ‘‘বাংলাকে রঞ্জি চ্যাম্পিয়ন করা। ২৫-২৬ বছর আমরা রঞ্জি জিতিনি। প্রতি বারই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মোটিভেশন থাকে।’’
সে সব ছেড়ে আপাতত ফোকাসে শনিবার উত্তরপ্রদেশকে অল আউট করা। মনোজ বললেন, ‘‘উইকেট ক্রমশ স্লো হচ্ছে। আমাদের হাতে ভাল বোলার আছে। দিন্দা, ওঝা, গনি ভাল ফর্মে আছে।’’ বিপক্ষের ৪৯ রানের মধ্যে অশোক দিন্দা দুটো ও ২৫ বছরের মিডিয়াম পেসার সায়ন ঘোষ একটা উইকেট নিয়ে শুরুতে ধাক্কা দিয়েছিলেন ঠিকই। কিন্তু উমঙ্গ শর্মা (৫৭) ও সরফরাজ খানের (৪৩) জুটি সেই ধাক্কা সামলে ৭৭ রানের পার্টনারশিপ গড়ে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলা ৪৬৬ (ঈশ্বরন ১৪২, মনোজ ১১০, সুদীপ ৭৩, কুলদীপ ৫-১১৫, রাজপুত ৪-১১৯), উত্তরপ্রদেশ ১২৬-৩ (দিন্দা ২-২৭)।