সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে দেখতে হাসপাতালে মুখ্যমন্ত্রী।
আলিপুরের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে দেখতে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে তাঁরা জানিয়েছেন, দেখে মনে হয়েছে সৌরভ সঙ্কটমুক্ত। তিনি আইসিসিইউ-এ উপস্থিত তাঁর স্ত্রী ডোনা এবং কন্যা সানার সঙ্গে কথা বলছেন। সচেতন আছেন। চা-বিস্কুটও খেয়েছেন। হাসছেন। উল্টে যাঁরা তাঁকে দেখতে যাচ্ছেন, তাঁদের প্রশ্ন করছেন, ‘‘কেমন আছেন?’’
শনিবার সন্ধ্যায় সৌরভকে দেখে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, চিকিৎসকেরা ভাল ব্যবস্থা নিয়েছেন। দৃশ্যতই বিস্মিত মমতা বলেন, ‘‘সৌরভের এই ঘটনাটা না ঘটলে তো জানতেই পারতাম না! ভাবতেই পারছি না, এইটুকু বাচ্চা ছেলে! ওর এরকম হবে!’’ মমতা আরও জানিয়েছেন, ঘরে ঢোকার পর সৌরভই বরং তাঁকে প্রশ্ন করেছেন, ‘‘আপনি কেমন আছেন?’’
বস্তুত, মন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিম সৌরভকে দেখে বেরিয়ে জানান, সৌরভ তাঁকে অনুযোগ করে বলেছেন, ‘‘কেন কষ্ট করে এতদূর আসতে গেলেন!’’ আর রাজ্যপালের কথায়, ‘‘দাদাকে হাসতে দেখে তাঁর কোটি কোটি ভক্তের মতো আমারও দুশ্চিন্তা দূর হয়েছে। ওঁর ঘরে ঢোকার আগে আমি খুবই চিন্তায় ছিলাম।’’
আরও খবর: ‘গোল্ডেন আওয়ার’-এ নিজে হাসপাতালে আসায় আপাতত স্থিতিশীল সৌরভ
সৌরভকে নিয়ে পাঁচ চিকিৎসকের একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠিত হয়েছে। তার নেতৃত্বে রয়েছেন সরোজ মণ্ডল। বাকি চার সদস্য হলেন ভবতোষ বিশ্বাস, আফতাব খান, এ বি রায় এবং সৌতিক পাণ্ডা। প্রাথমিক ভাবে তাঁরাই সৌরভের চিকিৎসা করেছেন। সোমবার সৌরভের বাকি দু’টি ধমনীতে স্টেন্ট বসানো হবে কি না। নাকি তাঁর বাইপাস সার্জারি হবে, সবই তাঁরা সিদ্ধান্ত নেবেন।
সৌরভের দ্রুত আরোগ্য কামনা করে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি টুইট করতে থাকেন। তাঁদের মধ্যে যেমন রয়েছেন বিসিসিআই সভাপতি সৌরভের সহকর্মী বিসিসিআই সচিব জয় শাহ, তেমনই রয়েছেন সৌরভের বন্ধু প্রাক্তন অভিনেত্রী অধুনা কংগ্রেসনেত্রী নাগমা। জয় যেমন সৌরভের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন, তেমনই নাগমা লিখেছেন, ‘‘উইশিং ইউ আ স্পিডি রিকভারি। গেট ওয়েল সুন। মাচ প্রেয়ার্স’।
আরও খবর: বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্য প্রার্থনা করলেন বিরাট কোহালি
ঘটনাচক্রে, গত কিছুদিন ধরেই সৌরভের রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার জল্পনা তৈরি হচ্ছিল। লোকমুখে শোনা যাচ্ছিল, তিনি বিজেপি-তে হয় সরাসরি যোগ দেবেন, নয়তো বিজেপি-র হয়ে বিধানসভা ভোটে প্রচার করবেন। কিন্তু এই অসুস্থতা সম্ভবত সেই জল্পনাতেও জল ঢেলে দিল। কারণ, সৌরভ যে মৃদু হলেও হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন, সেটা সত্যি। শরীরের এই অবস্থায় তিনি আর রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা নেবেন বলে মনে করছেন না কেউই। ঘটনাচক্রে, শরীরের কারণেই কিছুদিন আগে সমস্ত জল্পনা থামিয়ে দিয়ে রাজনীতিতে যোগ না দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন দক্ষিণী সুপারস্টার রজনীকান্ত।
শনিবার হাসপাতালে আসার পর সৌরভের ইসিজি, ইকোকার্ডিওগ্রাফি এবং অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করা হয়। চিকিৎসকদের মতে, সৌরভ নিজেই ফোন করে হাসপাতালে চলে আসায় দ্রুততার সঙঅগে ব্যবস্থা নেওয়া গিয়েছে। সেই কারণেই সৌরভ আপাতত বিপন্মুক্ত এবং স্থি্তিশীল।