ভারত অধিনায়কের সঙ্গে বলি নায়িকার প্রেমের গল্প। না, এ গল্প বিরুষ্কার নয়। বলিউডের নায়িকার সঙ্গে মোটামুটি সেই প্রথম ক্রিকেটারের প্রেম এবং বিয়ে। শর্মিলা ঠাকুর আর মনসুর আলি খান পটৌডী। কী ভাবে পরস্পরের কাছে এসেছিলেন তাঁরা?
টাইগার পটৌডীর সঙ্গে শর্মিলার আলাপ হয় একটি ক্রিকেট ম্যাচে। ১৯৬৫ সাল। ভারতীয় ক্রিকেট দলের ক্যাপ্টেন তখন নবাব পটৌডী। আর শর্মিলা বলিউডের গ্ল্যামার কুইন।
দিল্লিতে সেই ম্যাচ দেখতে এসেছিলেন শর্মিলা। ম্যাচের পর একটা পার্টিতে আলাপ হয় দু’জনের। দু’জনেই সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, শর্মিলা খুব একটা যে ক্রিকেট বুঝতেন এমনটা নয়, এ দিকে টাইগারও খুব বেশি শর্মিলার ছবি দেখেননি।
টাইগার ছিলেন নবাব বংশের উত্তরাধিকারী, আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বের অধিকারী। সুন্দরী, বুদ্ধিমতী শর্মিলা ছিলেন ঠাকুর পরিবারের সন্তান।
ভাষা আলাদা, ধর্ম আলাদা, আলাদা দু’জনের পেশা। পারিবারিক ঐতিহ্যও একেবারেই আলাদা। তবুও প্রেমে পড়লেন তাঁরা।
দু’জন সংবেদনশীল, বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন মানুষের কথা শুরু হল বই নিয়ে। এই বিষয়ে দু’জনের খুব মিল। দু’জনেই বই পড়তে ভালবাসতেন।
অক্সফোর্ডের স্নাতক পটৌডীর সঙ্গে শর্মিলা কয়েক বছর ডেট করেন। দুই পরিবারের তরফে বাধা আসেনি, এমনটা নয়। কিন্তু দু’জনে কেউ কারও পাশে থেকে সরে যাননি। দুই পরিবার যখন রাজি হল, তখন কী হল জানেন?
শর্মিলার জীবনে কিন্তু সত্যিই ‘ইভনিং ইন প্যারিস’ এসেছিল। টাইগার বিয়ের প্রস্তাব দেন শর্মিলাকে, তবে তা প্যারিসে।
১৯৬৯ সালে সাত পাকে বাঁধা পড়েন তাঁরা। দু’টি ধর্মমতেই গাঁটছড়া বেঁধেছিলেন তাঁরা। যদিও শর্মিলাকে নাকি আয়েষা বেগম নাম নিতে হয়েছিল। এই নিয়ে বিতর্কও কম হয়নি।
শর্মিলা যদিও বারবার বলেছিলেন, ভিন্ন ধর্মের, ভিন্ন ঐতিহ্যের পরিবারের সঙ্গে বিয়ে হওয়ায় পোশাক, খাবারদাবার, রুচি নিয়ে অনেক নতুন দরজা খুলে গিয়েছিল তাঁর কাছে।
শর্মিলা বিকিনি পরে শুট করেছিলেন সেই সময় একটি ছবির জন্য। কিন্তু টাইগার বা তাঁর পরিবারের তরফে কোনওরকম বাধা আসেনি।
‘আরাধনা’, কিংবা ‘অমর প্রেম’-এর মতো সুপারহিট সিনেমাগুলি শর্মিলা করেছিলেন মা হওয়ার পরে। সইফের দায়িত্ব পালন করতে নবাবও সব সময় তাঁর পাশে ছিলেন। কখনওই বিয়ের পর অভিনয় ছাড়তে বলেননি, সাক্ষাৎকারে শর্মিলা জানান এমনটাই।
সইফের পর সারা ও সাবা নামে দুই মেয়েও হয় দম্পতির। তিন জনেই সুশিক্ষিত এবং নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। সইফ তো বলিউডের নামী অভিনেতাদের একজন।
পটৌডী ২০১১ সালে মারা যাওয়ার পর শর্মিলা বলেছিলেন, তিনি এতটা একা হয়ে যেতে পারেন, তা কখনও ভাবেননি।