ম্যান সিটিকে উড়িয়ে ক্লপ বললেন, এই ফুটবলই চাই

গত বছরের এপ্রিলে লিভারপুলের বিরুদ্ধে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ কোয়ার্টার ফাইনাল খেলতে এসেছিল ম্যান সিটি। সে বার পেপ গুয়ার্দিওলাদের বাস বিশ্রী ভাবে আক্রমণ করে দ্য রেডস-এর উন্মত্ত সমর্থকরা।

Advertisement

 নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:২৯
Share:

দুরন্ত: আমরা শীর্ষেই। ভার্জিলের সঙ্গে উচ্ছ্বাস মানের। গেটি ইমেজেস

ব্রিটিশ ফুটবলের ‘এল ক্লাসিকো’ শুরু হওয়ার আগে অ্যানফিল্ডে তাপমাত্রা ছিল ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু লিভারপুল বনাম ম্যাঞ্চেস্টার সিটি দ্বৈরথ ঘিরে উত্তেজনার উত্তাপ মারাত্মক জায়গায় পৌঁছয়। খেলা শুরুর আগে রীতিমতো হুঙ্কার দিয়ে ম্যান সিটি তাদের নিজস্ব টুইটারে লেখে, ‘‘জেতার জন্যই নামব। নিজেদের কাছে বল না থাকলে দল দৌড়বে। আর বলের দখল পেলে, দেখা যাবে সিটির আসল খেলা।’’

Advertisement

গত বছরের এপ্রিলে লিভারপুলের বিরুদ্ধে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ কোয়ার্টার ফাইনাল খেলতে এসেছিল ম্যান সিটি। সে বার পেপ গুয়ার্দিওলাদের বাস বিশ্রী ভাবে আক্রমণ করে দ্য রেডস-এর উন্মত্ত সমর্থকরা। এ বার ম্যাচের আগে ম্যান সিটি ম্যানেজার বলেছিলেন, ‘‘অ্যানফিল্ডে সবাই আমাদের বিরুদ্ধে থাকলে সমস্যা নেই। শুধু আমরা যেন নির্বিঘ্নে বাস নিয়ে স্টেডিয়ামে ঢুকতে পারি।’’

যতই উত্তেজনা থাক, রবিবার তেমন কিছু হয়নি। রাহিম স্টার্লিংদের লক্ষ্য করে সিটি বিরোধী স্লোগান দেওয়া হলেও তা শালীন ভাবে ঘটেছে। মাঠে কিন্তু য়ুর্গেন ক্লপের দল শুরু থেকে জয়ের জন্য নাছোড় ছিল। ১৩ মিনিটের মধ্যে অবিশ্বাস্য ভাবে লিভারপুল ২-০ এগিয়ে যায়। ৬ মিনিটে প্রথম গোল ফাবিনহোর দূরপাল্লার শটে। ৭ মিনিট না যেতেই আবার গোল! এ বার গোল করলেন ‘মিশরের মেসি’ মহম্মদ সালাহ। আগের দিন ক্লপ বলেছিলেন, এই ম্যাচে সাইডব্যাকরা তাঁর তুরুপের তাস হবে। হলও তাই। অ্যান্ড্রু রবার্টসনের অসাধারণ ক্রস কেউ কিছু বোঝার আগে হেডে গোল করে গেলেন সালাহ।

Advertisement

হতাশ গুয়ার্দিওলা তখন সাইড লাইন ছেড়ে সটান বসে পড়লেন রিজার্ভ বেঞ্চে। সের্খিয়ো আগুয়েরোরা অবশ্য ধৈর্য হারাননি। একবার একটা পেনাল্টির দাবিতে সরব হন। গ্যালারিতে উত্তেজনা ছড়ায়। রেফারি যে দাবির গুরুত্ব দেননি। নিজেদের বক্সে হাতে বল লাগিয়েছিলেন ট্রেন্ট আলেকজান্ডার-আর্নল্ড। ভিডিয়ো প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে রেফারি বলে দেন, হ্যান্ডবলটা ইচ্ছাকৃত নয়।

আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে অসাধারণ ফুটবল প্রত্যক্ষ করতে থাকে অ্যানফিল্ড। এর মধ্যে আবার ৪০ মিনিটে ফার্নান্দিনহোর ট্যাকলে সালাহকে মাঠে পড়ে যন্ত্রণায় ছটফট করতে দেখা যায়। তার পর থেকে মিশরীয় তারকা ছন্দ হারিয়ে ফেললেন। তখন লিভারপুল আক্রমণে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন একা সাদিয়ো মানে। যাঁকে গুয়ার্দিওলা সব চেয়ে ভয় পাচ্ছিলেন। ভালই বোঝা যাচ্ছিল কেন এমন কথা বলেছিলেন পেপ। দ্বিতীয়ার্ধের ছ’মিনিট যেতেই মানে ৩-০ করে দেন জর্ডন হেন্ডারসনের ক্রসে মাথা ছুঁইয়ে। এই গোলই মোটামুটি নিশ্চিত করে দেয় ‘এল ক্লাসিকো’ জিততে যাচ্ছে লিভারপুল। মরিয়া গুয়ার্দিওলা শেষ পর্যন্ত আগুয়েরোকে তুলে নামালেন গ্যাব্রিয়েল জেসুসকে। ম্যান সিটি অবশ্য একটা গোল পেল ৭৮ মিনিটে। করলেন বের্নার্দো সিলভা। কিন্তু তাতে ম্যাচের ভবিতব্যে ফারাক তৈরি হয়নি। এই জয়ে ইপিএল টেবলে শীর্ষস্থানে পৌঁছে গত দু’বারের চ্যাম্পিয়ন ম্যাঞ্চেস্টার সিটির সঙ্গে ৯ পয়েন্টের ব্যবধান গড়ে ফেলল লিভারপুল। গর্বিত ক্লপ বলে গেলেন, ‘‘ম্যান সিটির মতো দলের বিরুদ্ধে জিততে হলে এই ফুটবলটাই চাই।’’ আর পেপের কথা, ‘‘ওরা তিনটি শট মেরেছে। তিনটি থেকেই গোল হয়েছে। তবে অ্যানফিল্ডের মতো স্টেডিয়ামে আমরাই বেশি ভাল খেলেছি।’’ এই হারে সিটি নেমে গেল চার নম্বরে। দুইয়ে উঠে এল লেস্টার সিটি। তিনে চেলসি। অ্যানফিল্ডের ম্যাচের আলোয় অনেকে খেয়ালই করল না, দিনের শুরুতে ওয়ে গুন্নার সোলসারের ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড ৩-১ হারিয়ে অবনমন আতঙ্ক পিছনে ফেলে লিগ টেবলে সাত নম্বরে জায়গা করে নিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement