এ যেন দুই পৃথিবী। এক পৃথিবী তারকার ছটায় আলোকিত। অন্য পৃথিবীতে প্রতি দিনের বেঁচে থাকাটাই অনিশ্চয়তায় ভরা। এই দুই পৃথিবীকে জুড়ে দিল ফুটবলের প্রতি ভালবাসা, উন্মাদনা। সেতুবন্ধন করল ইন্টারনেট!
ছোট্র এক শিশু মুরতাজা আহমিদ। ফুটবল ভালবাসে। আর ফুটবলে মানেই তার কাছে লিওনেল মেসি। তাই আপন খেয়ালে পরে নিয়েছিল আর্জেন্টিনার দশ নম্বর জার্সিটা। না, আসল জার্সি জোটেনি তার। তাই প্লাস্টিকের প্যাকেট কেটেই বানিয়ে নিয়েছিল জার্সি। পিঠে নীল কালিতে লেখা ছিল দশ নম্বর। দাদা হামায়োন তা পোস্ট করে দিয়েছিল নিজের ফেসবুক পেজে।
ইন্টারনেটে প্রকাশিত হতেই ছোট্ট মুরতাজার সেই ছবি হু হু করে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু এই শিশুর ঠিকুজি তখনও অজানা। শুরু হয় খোঁজ। নানা দাবি উঠতে থাকে। দাবি ওঠে, সে না কি ইরাকের দোহুকের বাসিন্দা। স্থানীয় একটি টিভি চ্যানেল তার খোঁজ মিলেছে বলে জানিয়েও দেয়। কিন্তু শেষে দেখা যায় তা সত্য নয়। অতএব খোঁজ চলতে থাকে।
শেষে মুরতাজার সন্ধান মেলে আফগানিস্তানে। কাবুলের দক্ষিণ-পশ্চিমে জাঘোরি অঞ্চলে বাস। বাবা চাষবাস করেন। ছোট্ট মুরতাজার এখনও স্কুলে যাওয়াই শুরু হয়নি। তবে ফুটবল দেখলেই আত্মহারা হয়ে যায়। আর মেসিকে নিয়ে উন্মাদ সে। কাকা আজিম আহমদি জানিয়েছেন, বড় ফুটবলারই হতে চায় মুরতাজা। দাদার সঙ্গে মিলে ওই জার্সি তৈরি করে পরেছিল সে। সেই ছবিই ফেসবুকে পোস্ট করেছিল দাদা হমায়োন।
কিছু দিন আগে ব্যালন ডি’অর পেলেন মেসি। এ নিয়ে পাঁচ বার। মুরতাজার কথা কিন্তু তাঁর কাছে পৌঁছেছে। পর পর তালিবানি হামলায় বিধ্বস্ত আফগানিস্তান। যেখানে প্রতি দিনের বেঁচে থাকাটাই নিশ্চিত নয়, সেখানে ছোট্ট মুরতাজার স্বপ্ন কি সত্যিই হবে? মেসির ঘনিষ্ঠ মহল থেকে বার্তা এসেছে, তাঁরা কিছু করতে চান। তাঁর ছোট্ট ভক্তের দিকে কী ভাবে হাত বাড়াবেন মেসি? দুনিয়া অপেক্ষায়।