চোখ ধাঁধানো ড্রিবল। অবিশ্বাস্য গোল। ঠান্ডা মাথার এক অবিশ্বাস্য ঈশ্বরপ্রদত্ত প্রতিভা। ফুটবল বিশ্ব তো এ ভাবেই এত দিন চিনে এসেছে তাঁকে। তবে কোপা আমেরিকার পরে ধরা পড়ছে ঠিক অন্য ছবি। কটাক্ষ ও সমালোচনায় বিদ্ধ হওয়ার রাগটা যেন মাঠেই উপচে পড়ছে। ভাঙছে ধৈর্য্যের বাঁধ। প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে, ফুটবলের ঈশ্বরও রক্তমাংসেরই তৈরি। যেমন পাওয়া গিয়েছিল জিনেদিন জিদানের ক্ষেত্রে।
বুধবার রাতে ফুটবল বিশ্ব দেখল এমনই এক অচেনা লিওনেল মেসিকে। দেখল এবং স্তম্ভিত হয়ে গেল। ঘটনার প্রেক্ষাপট বুধবার রাতের ন্যু কাম্প। জোয়ান গ্যাম্পার ট্রফিতে এক ফ্রেন্ডলি ম্যাচে মুখোমুখি এফসি বার্সেলোনা ও রোমা। গুরুত্বহীন এই ম্যাচে নেইমারের গোলে ১-০ এগিয়ে ছিল বার্সা। তবে হঠাত্ই ৩৪ মিনিটে ম্যাচটা আর শুধু মাত্র ফ্রেন্ডলি থাকল না। মেসিকে উস্কাতে কটূ মন্তব্য করতে থাকেন রোমা ডিফেন্ডার মাপু ইয়াঙ্গা এমবিয়া। পুরনো মেসি হলে হয়তো এই মন্তব্যের কোনও তোয়াক্কা করতেন না। তবে কোপা বিপর্যযের পরে দেখা গেল এক আগ্রাসী মেসিকে। মাপুর কটাক্ষের জবাবে সোজা মাথা দিয়ে গুঁতো মারেন এলএম টেন। আবার সঙ্গে গলাও টিপে ধরেন। ঝামেলা থামাতে ছুটে আসতে হয় সতীর্থদের। ম্যাচটা প্রাক্ মরসুম ফ্রেন্ডলি হওয়ায় সম্ভবত পার পেয়ে গেলেন মেসি। বার্সেলোনার হয়ে কখনও লাল কার্ড না দেখার রেকর্ডটাও অক্ষুণ্ণ থেকে গেল।
ফুটবলারদের রণমূর্তি
• ২০০৬ বিশ্বকাপ ফাইনালে মার্কো মাতেরাজ্জিকে ঢুঁসো জিনেদিন জিদানের।
• বায়ার্ন মিউনিখ বনাম রিয়াল মাদ্রিদের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালের বিরতিতে ড্রেসিংরুমে রবেনকে ঘুষি রিবেরির।
• কর্ডোবার এডিমারকে লাথি মেরে লাল কার্ড ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর।
মেসির প্রতি অবশ্য কোনও সহানুভূতি দেখায়নি সোশ্যাল মিডিয়া। প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে ফুটবল মহলেও। সাধারণ ফুটবল ভক্তের সঙ্গে বিশেষজ্ঞদেরও প্রশ্ন, এ বার কি তা হলে এতটাই রাগী মেসিকে দেখা যাবে? আবার অনেক রোনাল্ডো-ভক্তদের অভিযোগ, ‘‘মেসি বলে যা কিছু করতে পারে। আর রোনাল্ডো হলে এতক্ষণে সবাই গালিগালাজ শুরু করত। এত পক্ষপাতিত্ব কেন?’’
অনেক বিশেষজ্ঞের মতে এই রাগের পিছনে কোপা ব্যর্থতাই হয়তো দায়ী। আর সেটাই হয়তো মানসিক ভাবে আঘাত দিয়েছে বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবল প্রতিভাকে। আর তাতেই হয়তো এই ব্যবহার বেরিয়ে আসছে মাঠে। না হলে একটা গুরুত্বহীন ম্যাচে কেনই বা এতটা খারাপ আচরণ করবেন মেসি।