চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরেই মাঠ থেকে বাড়িতে ফোন উল্লসিত মেসির। রয়টার্স, গেটি ইমেজেস
শাপমুক্তি! অবশেষে লিয়োনেল আন্দ্রেস মেসি দেশের জার্সিতে প্রথম বার চ্যাম্পিয়নের ট্রফি হাতে নিলেন। এবং তাতে ‘ফুটবলের ঈশ্বর’ আবেগে ভাসলেন বললেও যেন অনেকটাই কম বলা হবে।
উরুগুয়ের রেফারি খেলা শেষের বাঁশি বাজাতেই আর্জেন্টিনা অধিনায়ক হাঁটু মুড়ে বসে পড়লেন মাঠে। কী করে আটকানো যাবে আনন্দাশ্রু! এর আগে যে নীল-সাদা জার্সিতে ফাইনালে হেরেছেন চার বার! এক বার এতটাই ভেঙে পড়েন যে, দেশের হয়ে খেলবেনই না, ঠিক করে ফেলেন।
সেখান থেকে ৩৪ বছরের লিয়োর কোপা জয়! তাও ব্রাজিলের মারাকানায়। এবং নেমার দা সিলভা স্যান্টোসদের তাঁদের মাঠে হারিয়ে। গলায় ঝোলানো পদক ঝাঁকাতে ঝাঁকাতে মাঠ থেকেই বাড়িতে ফোনে চিৎকার করে মেসি বলে ওঠেন, ‘‘আমি পেরেছি, আমি পেরেছি।’’
তারই মধ্যে ভেসে উঠল আরও এক স্বপ্নময় মুহূর্ত। ম্যাচের পরে প্রাক্তন বার্সা সতীর্থ লিয়োনেল মেসিকে জড়িয়ে ধরলেন নেমার দা সিলভা স্যান্টোস জুনিয়র। মুহূর্তের মধ্যে সেই দৃশ্য ছড়িয়ে পড়ে গণমাধ্যমে। আলিঙ্গনের মুহূর্ত উপভোগ করেছেন ব্রাজিল কোচ তিতেও। তিনি জানিয়েছেন, হেরে গেলেও নেমারের এই সৌজন্যে সন্তুষ্ট।
তিতে বলেছেন, ‘‘হারের পরেও মানুষ যখন বিপক্ষের জয়কে স্বীকৃতি দিতে শেখে, তখনই কিন্তু জেতে ফুটবল। এই দৃশ্যই কিন্তু আজকের সেরা মুহূর্ত। এ রকম একটি দৃশ্য উপহার দেওয়ার জন্যই ফুটবল খেলা হয়।’’
মেসির আবেগে ভেসে যাওয়াটা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন ছিল। ছোট বাচ্চাদের মতো সারাক্ষণ লাফালাফি করে গেলেন। সামনে যাঁকেই পেলেন, জড়িয়ে ধরলেন। কোচ লিয়োনেল স্কালোনি নন, সতীর্থেরা মাঠে তাঁকে নিয়েই লোফালুফি করেন। আর উৎসবের উদ্দামতা একটু কমতেই মেসিকে বলতে শোনা গেল, ‘‘ভীষণ দরকার ছিল দেশের হয়ে দারুণ কিছু একটা করে এই কাঁটাটা নিজের মধ্যে থেকে উপড়ে ফেলার।’’
ম্যাচের পরে সাংবাদিক সম্মেলনে এসে বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলার মেসির প্রতিক্রিয়া, ‘‘এই আনন্দ কোনও ভাবেই ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। মনে অনেক দুঃখ ছিল। আগে বারবার খালি হাতে ফিরতে হয়েছে। তবু জানতাম, একদিন না একদিন আমি পারব। অবশেষে আজই এল সেই দিনটা। ঈশ্বর যেন আজকের দিনটাই আলাদা করে সরিয়ে রেখেছিলেন আমার জন্য।’’