কিংবদন্তি: কলকাতায় প্রদর্শনী ম্যাচে লিয়েন্ডার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
তাঁর আমলে ডেভিস কাপে অন্য উচ্চতায় পৌঁছেছিল ভারতীয় দল। সেই দলের বর্তমান হাল দেখে দুঃখিত লিয়েন্ডার পেজ়।
নতুন ফর্ম্যাট হওয়ার পরে এই প্রথম ডেভিস কাপের দু’নম্বর গ্রুপে নেমে গেল ভারত। ডেনমার্কের কাছে হারের পরে। যা নিয়ে ভারতীয় টেনিসের কিংবদন্তি লিয়েন্ডার বলেছেন, ‘‘আমার মনে হয়, ঘুরে দাঁড়াতে ভারতীয় দলের আরও বেশ কয়েক বছর লেগে যাবে। যদি না কোনও দারুণ প্রতিভা পেয়ে যায়।’’ রবিবার কলকাতায় একটি প্রদর্শনী ম্যাচে যোগ দিয়েছিলেন লিয়েন্ডার।
ডেভিস কাপে ডাবলসে রেকর্ড ৪৫টি জয়ের মালিক লিয়েন্ডার আরও বলেছেন, ‘‘একটা ব্যাপার দেখে খুব খারাপ লাগে। সিঙ্গলস র্যাঙ্কিংয়ে প্রথম ৩০০ জনের মধ্যে কোনও ভারতীয় টেনিস খেলোয়াড় নেই। এ রকম ঘটনা বোধ হয় আগে কখনও ঘটেনি।’’ এই মুহূর্তে প্রজ্ঞেশ গুণেশ্বরন ভারতীয়দের মধ্যে র্যাঙ্কিংয়ে সেরা। তাঁর র্যাঙ্কিং ৩০৬। অলিম্পিক্সে ব্রোঞ্জ পদকজয়ী লিয়েন্ডার অবশ্য এটাও বলেছেন, ‘‘সার্কিটে অংশ নেওয়া ভারতীয় টেনিস খেলোয়াড়দের প্রতি আমি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল। আমি জানি, সার্কিটে নিয়মিত খেলতে হলে কতটা পরিশ্রম করতে হয় আর পুরো ব্যাপারটা কতটা খরচসাপেক্ষ হয়ে দাঁড়ায়।’’ নিজের অভিজ্ঞতাও ভাগ করে নিয়েছেন লিয়েন্ডার। বলেছেন, ‘‘টেনিসে ৯৯ শতাংশ খেলা হয় দেশের বাইরে। সেখানে একা একা ঘুরে বেড়ানো রীতিমতো কঠিন। আমি আর জিশান (আলি) তো লকার রুমেও ঘুমিয়েছি। কারণ আমাদের কাছে অর্থ থাকত না।’’
অলিম্পিক্স হকিতে ব্রোঞ্জ পদকজয়ী বাবা ভেস পেজ়ের পাশে বসে লিয়েন্ডার এ দিন তুলে আনেন নিজের ‘বায়োপিক’ প্রসঙ্গ। ডাবলস এবং মিক্সড ডাবলস মিলিয়ে ১৮টি গ্র্যান্ড স্ল্যামজয়ী তারকা বলেন, ‘‘নিজের কাহিনি নিয়ে আমি কাজ করছি এখন। এর চেয়ে বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়।’’ এর পরেই অবশ্য বলেন, ‘‘কাহিনিতে থাকবে কী ভাবে আমার বাবা ১৯৭২ অলিম্পিক্সে ব্রোঞ্জ পদক জিতেছিলেন। আর কী ভাবে আমি সেই সাফল্য ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখতাম। কাহিনিকাল মূলত ১৯৭২ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত বিস্তৃত।’’ লি-র ইঙ্গিত, ১৮ মাসের মধ্যে তাঁর বায়োপিকের পোস্টার প্রকাশিত হয়ে যাবে।
খেলা ছাড়ার পরে কি তিনি টেনিস প্রশাসনে আসার কথা ভাবছেন? একটু এড়িয়ে গিয়ে লিয়েন্ডারের জবাব, ‘‘আমি যখন সার্বিক ভাবে ভারতকে দেখি, তখন আমার কাছে সমাজের হয়ে কিছু করা এবং যুব সমাজের জন্য সুযোগ তৈরি করে দেওয়াই সবচেয়ে বড় লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায়।’’
নোভাক জোকোভিচের খেলায় মুগ্ধ লিয়েন্ডার মনে করেন, সার্বিয়ার মহাতারকাকেই শেষ পর্যন্ত সর্বকালের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে। লিয়েন্ডারের কথায়, ‘‘এখনও চার বছরের টেনিস পড়ে আছে জোকোভিচের সামনে। ও কি আরও দু’একটা গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতবে না? নিশ্চিত ভাবে জিতবে। আমার মনে হয়, আরও পাঁচটা গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতবে জোকোভিচ। আমার বিনম্র মত, ইতিহাস ওকে সর্বকালের সেরা হিসেবেই চিহ্নিত করবে।’’