উৎসব: লা লিগা খেতাবের দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল রিয়াল মাদ্রিদ। গ্রানাদার বিরুদ্ধে প্রথম গোলের পরে মেন্ডিকে অভিনন্দন সতীর্থদের। গেটি ইমেজেস
লা লিগা খেতাব থেকে আর মাত্র এক ধাপ দূরে জ়িনেদিন জ়িদানের রিয়াল মাদ্রিদ। সোমবার তারা গ্রানাদাকে হারাল ২-১ গোলে। গোল করলেন ফরাসি ডিফেন্ডার ফার্লান্দ মেন্দি ও করিম বেঞ্জেমা। বাকি দুই ম্যাচে আর মাত্র দু’পয়েন্ট পেলেই লিয়োনেল মেসিদের বার্সেলোনাকে পিছনে ফেলে ৩৪তম লা লিগা ট্রফি পেয়ে যাবে রিয়াল। যা আসতে পারে দু’টি ড্র থেকে অথবা একটি জয়ের মাধ্যমে।
‘‘আমাদের হাসিখুশি থাকতে হবে। বিশ্রাম নিয়ে তরতাজা থাকতে হবে। তার পর বৃহস্পতিবার কী হয়, দেখা যাবে,’’ বলেছেন জ়িদান। সেই সতর্ক ভঙ্গি তাঁর। সোমবারের ম্যাচের পরে মঙ্গলবারেই অনুশীলনে ফেরার কথাও ঘোষণা করেন তিনি। ম্যাচ নিয়ে বলেন, ‘‘দ্বিতীয়ার্ধে গ্রানাদা খুবই চাপ সৃষ্টি করেছিল। আমাদের রক্ষণ সামলাতে হয়েছে। শেষের মুহূর্তগুলো ছিল উদ্বেগের।’’ শেষের দিকে সের্খিয়ো র্যামোস দুর্দান্ত ভাবে গোললাইন থেকে বল উড়িয়ে রক্ষা করেন রিয়ালকে। বল দখলের লড়াইয়ে রিয়ালই এগিয়ে ছিল। তাদের দখলে বল ছিল ৬২ শতাংশ, গ্রানাদার ৩৮ শতাংশ। গোল লক্ষ্য করে শট অবশ্য রিয়ালের (১১) থেকে বেশি নেয় গ্রানাদা (১৩)।
অতিমারিতে বন্ধ থাকা লিগ চালু হওয়ার পরে টানা ন’টি ম্যাচ জিতল রিয়াল। আগামী বৃহস্পতিবার ভিয়ারিয়ালকে হারালেই তারা চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে। এই ম্যাচ হেরে গেলেও তাদের আশা শেষ হবে না। উল্টো দিকে, অভাবনীয় কিছু ঘটিয়ে খেতাব ছিনিয়ে নিতে বার্সেলোনাকে বাকি দুই ম্যাচে জিততেই হবে। বার্সেলোনা এবং রিয়াল তাদের শেষ দু’টি ম্যাচ খেলবে একই দিনে। মেসিরা বৃহস্পতিবার খেলবেন ওসাসুনার বিরুদ্ধে, শেষ দিনে তাঁদের প্রতিপক্ষ আলাভেস। আর রিয়ালের শেষ দু’টি ম্যাচ যথাক্রমে পঞ্চম স্থানে থাকা ভিয়ারিয়াল এবং অবনমনের জন্য লড়াই করা লেগানেসের বিপক্ষে। যদি বার্সেলোনা এবং রিয়াল একই পয়েন্টে শেষ করে, তা হলেও জ়িদানের দলই চ্যাম্পিয়ন হবে কারণ মুখোমুখি লড়াইয়ে তাঁরাই মেসিদের চেয়ে এগিয়ে।
তবে খেতাব জয়ের লগ্নে দাঁড়িয়ে থাকলেও রিয়ালের গলায় কাঁটা হয়ে বিঁধছেন গ্যারেথ বেল। জ়িদান তাঁকে পরিবর্ত হিসেবেও নামাচ্ছেন না। বুঝিয়েই দিচ্ছেন, তাঁর দলে বেলের জায়গা নেই। আর গ্যালারিতে বসে নিজস্ব ভঙ্গিতে কটাক্ষ করে চলেছেন বেল। আগের দিন ঘুমিয়ে পড়ার ভঙ্গি করেছিলেন। গ্রানাদা ম্যাচে দেখা গেল কাগজ পাকিয়ে দূরবিনের মতো করে ম্যাচ দেখছেন। কী বোঝাতে চাইলেন? তোমাদের ফুটবল দূরবিনের সাহায্যে দেখতে হচ্ছে? অনেকের তেমনই ধারণা হয়েছে। কোন দিনই গুরু জ়িদানের সঙ্গে সম্পর্ক ভাল নয় তাঁর। শোনা যায়, জ়িদান যে প্রথম বার রিয়াল ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন, তার নেপথ্যে ছিলেন বেল। তার পরে যে ফিরে এসেছেন, তাতেও প্রধান শর্ত ছিল বেলকে ক্লাব কর্তারা প্রশ্রয় দিতে পারবেন না।
জ়িদান যদিও মেজাজ হারাননি। বেলকে আক্রমণ করার পথে হাঁটেননি। বলেছেন, “ওকে নিয়ে কোনও অভিযোগ নেই। আমরা সকলে মিলে এই মুহূর্তে লা লিগা জয় নিশ্চিত করার জন্য লড়াই করছি।”
রিয়াল অধিনায়ক র্যামোস সতীর্থদের সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ‘‘কোনও ভাবেই গা আলগা দিতে পারি না। এখনও আমরা কিছুই জিতিনি।’’ গ্রানাদার বিরুদ্ধে শেষ বাঁশি বাজতেই স্বভাববিরুদ্ধ ভাবে উল্লাস করে ওঠেন জ়িদান। যা নিয়ে ম্যাচের পরে তিনি বলেন, ‘‘আজ জিতে দারুণ আনন্দ পেয়েছি বলেই চিৎকার করেছি। যে কষ্টের মধ্যে দিয়ে এ বারের লিগটা খেলেছি, তাতে সেটাই স্বাভাবিক। এই দলটাকে পেয়ে খুবই খুশি আমি। সেটাই ছেলেদের বলতে চেয়েছিলাম।’’