প্রত্যাবর্তন: কলকাতা ফিরলেন সপরিবার ঋদ্ধি। —নিজস্ব চিত্র।
তাঁকে অনেকে বব টেলরের সঙ্গে তুলনা করছেন। তাঁর আর মহম্মদ শামির জুটির মধ্যে সত্তরের দশকের অস্ট্রেলিয়ার রডনি মার্শ-ডেনিস লিলি জুটির মিলও খুঁজে পাচ্ছেন ভারতীয় দলের কোচ।
ভারতীয় টেস্ট দলের কিপার ঋদ্ধিমান সাহা অবশ্য এসব তুলনায় খুব একটা আগ্রহী নন। তিনি থাকতে চান নিজের মতোই। স্টাম্পের পিছনে আরও ক্ষিপ্র হয়ে উঠতে চান নিজের মতো করেই।
শুক্রবার শ্রীলঙ্কা থেকে কলকাতায় ফিরে বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে বাংলার এই তারকা ক্রিকেটার বললেন, ‘‘আমি জানি না আমি কার মতো বা আমার আর শামির জুটি কারও কথা মনে করিয়ে দেয় কি না। বব টেলরের কিপিং আমি সে ভাবে দেখিনি। দু-একটা ভিডিও দেখেছি মাত্র। ছোট থেকে যা শিখেছি, তা-ই কাজে লাগিয়ে নিজের সেরাটুকু দেওয়ার চেষ্টা করি। ভবিষ্যতেও এটাই করব।’’
ঋদ্ধি-শামির জুটি রবি শাস্ত্রীকে মার্শ-লিলি জুটির কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। ‘ক সাহা বো শামি’ এখন প্রায়ই দেখা যায় ভারতের বিপক্ষের স্কোরবোর্ডে। তাঁদের এই জুটির সাফল্যের রহস্য কী? ঋদ্ধির ব্যাখ্যা, ‘‘আসলে আমরা বহু দিন ধরে একসঙ্গে খেলেছি। বাংলার হয়ে খেলেছি। এখন ভারতের হয়েও খেলছি। দু’জনে একসঙ্গে থাকতে থাকতে এই বোঝাপড়াটা তৈরি হয়ে গিয়েছে। দলে তো সবাই আমাদের এই কম্বিনেশন নিয়ে ঠাট্টা-ইয়ার্কিও করে। আমরা উপভোগও করি। শামি বল সুইং করে এজ লাগায় আর আমি ক্যাচ ধরে তা পূর্ণ করি। এটা তো আমাদের কাজ।’’
অনিল কুম্বলের সঙ্গে এক বছর ঘর করার পর এ বার সেই জায়গায় এসেছেন রবি শাস্ত্রী। যাঁর আসা নিয়ে জলঘোলা কম হয়নি। দু’জনের মধ্যে তফাত জানতে চাইলে ঋদ্ধি বলেন, ‘‘অনিল ভাই চাইতেন আমরা ৫০০-৬০০ রান তুলে বিপক্ষকে দেড়শোয় শেষ করে দিই। রবি ভাই সেটা অন্য ভাবে বলেন। উনি আরও আগ্রাসি হতে বলেন, এটুকুই তফাত। তবে দু’জনেই পজিটিভ কথা বলেন।’’
বিরাট কোহালি বলেছিলেন, কুম্বলে কড়া শাসনে রাখতে চান দলের ছেলেদের। ঋদ্ধির অভিজ্ঞতা কিন্তু অন্যরকম। তিনি বলছেন, ‘‘আমার অনিলভাইকে কোনও দিনই তেমন কড়া মনে হয়নি। কারও হয়তো সে রকম লেগেছে, আমার নয়। অনিল ভাই যখন ছিল আমার কখনও মনে হয়নি আমাকে জোর করে কিছু করাতে চাইছেন।’’ ক্যাপ্টেন বিরাট কোহালিকে শুরু থেকে দেখছেন। তাঁর মধ্যেও পরিবর্তন দেখছেন ঋদ্ধি। কেমন সে পরিবর্তন? বললেন, ‘‘যত দিন যাচ্ছে দলের ছেলেদের সঙ্গে ওর সম্পর্ক ক্রমশ আরও ভাল হচ্ছে। আগের চেয়ে এখন অনেক মিলেমিশে থাকে। মাঠের বাইরে আমরা একসঙ্গে ডিনারে যাই বা ঘুরতে যাই। এগুলো আগে ওর মধ্যে ছিল না।’’ দেখতে দেখতে ২৮টা টেস্ট ম্যাচ খেলা হয়ে গেল বাংলার কিপারের। ১০০ পেরিয়ে ২০০তম প্রথম শ্রেণির ম্যাচও খেলতে চান। স্টাম্পের পিছনে অনেক আত্মবিশ্বাসী তিনি। অশ্বিন, জাডেজাকে ঘূর্ণি উইকেটে কিপ করাটাও এখন তাঁর কাছে বেশ উপভোগ্য। এই নিয়ে ঋদ্ধি বলছেন, ‘‘অশ্বিন, জাডেজাকে টার্নিং ট্র্যাকে কিপিং করা (শ্রীলঙ্কায়) দ্বিতীয় টেস্টে বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল। কিন্তু উপভোগ করেছি। মাঠে প্রতিটা দিনই আমার কাছে নতুন। প্রত্যেক দিনই নতুন চ্যালেঞ্জ।’’