একাদশ আইপিএলের প্রথম ম্যাচেই রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুকে ধরাশায়ী করল কলকাতা নাইট রাইডার্স। গত আইপিএলের দু’টি ম্যাচেই নাইট বাহিনীর কাছে রীতিমতো নাকানিচোবানি খেতে হয়েছিল বিরাট কোহালিদের। এ বারও সে ছবিটাই দেখা গেল। রবিবার টসে জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেয় নাইট বাহিনী। ২০ ওভারে ৭টি উইকেট খুইয়ে নাইটদের সামনে ১৭৭ রানের টার্গেট রাখে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। ১৮.৫ বলেই সেই রান তুলে নেন নাইটরা। দেখে নিন সে ম্যাচের বিশেষ কিছু মুহূর্ত।
খেলা শুরুর আগেই অবশ্য মাঠে নেমে পড়লেন বিরাট কোহালি। তবে ক্রিকেট বল নয়, তাঁকে দেখা গেল ফুটবল নিয়ে। গ্যালারিতে তখন দেখা গেল কিঙ্গ খানকে। মাঠে হাজির উৎসাহীদের দিকে তাকিয়ে হাতও নাড়লেন শাহরুখ।
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে ওপেন করতে নামেন ব্রেন্ডন ম্যাককালাম এবং কুইন্টন ডি কক। কেকেআর-এর হয়ে প্রথম বল করতে আসেন বিনয় কুমার।
প্রথম ওভারেই রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর ব্যাট থেকে আসে ১৪ রান। সেই সঙ্গে সঙ্গেই নিজের টি-টোয়েন্টি কেরিয়ারে ৯০০০ রান পূর্ণ করেন ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। ৬৬ রানের মাথায় সুনীল নারিনের বলে ফিরে যান ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। এর পরেই মাঠে ধামাকা দেখাতে আরম্ভ করে দেন এ বি ডেভিলিয়ার্স এবং বিরাট কোহালি।
ষষ্ঠ ওভারে ৫০ রানের গণ্ডি পার করেন বিরাট বাহিনী। আর ঠিক এর পরের ওভারটিতেই দুর্ধর্ষ বোলিং করে নিজের প্রথম ওভারে মাত্র ২ রান দেন সুনীল নারিন। ১১ ওভারে নারিনকে ১৪ রান দেন বিরাট কোহালি এবং এ বি ডেভিলিয়ার্স। ১২ এবং ১৩ দু’টি ওভারেই ডেভিলিয়ার্স এবং কোহালির ব্যাট থেকে আসে ২০ রান। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর রান তখন ১১৬।
১৪ ওভারে নীতিশ রানার বলে পর পর আউট হয়ে গ্যালারিতে ফিরে যান বিরাট কোহালি এবং এ বি ডেভিলিয়ার্স। আন্দ্রে রাসেলের বলে রীতিমতো গোত্তা খেতে হয় বেঙ্গালুরুর ব্যাটিং লাইনআপকে। ব্যাট হাতে কেবল মনদীপ সিংহই রান পাচ্ছিলেন। মনদীপের ১৮ বলে ৩৭ রানের সৌজন্যেই এ দিন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর রান ১৭৬-এ দাঁড়ায়।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ব্যাটিং ঝড় দেখাতে শুরু করেন সুনীল নারিন। তাঁর সঙ্গে ওপেন করতে নামেন ক্রিস লিন। যুজবেন্দ্র চহালের বলে একটি করে ছয়-চার হাঁকান নারিন। ঠিক পরের ওভারেই ক্রিস ওকস-এর বলে আউট হয়ে যান লিন। আর লিনের ক্যাচ লুফে আইপিএলের সর্বাধিক ক্যাচ শিকারীদের তালিকায় দুই নম্বরে চলে আসেন ডেভিলিয়ার্স। আইপিএল কেরিয়ারে এখনও পর্যন্ত ৮৬টা ক্যাচ লুফে প্রথমে সুরেশ রায়না ও ৭৩টা ক্যাচ নিয়ে ঠিক ঘাড়েই নিঃশ্বাস ফেলছেন এবি।
চতু্র্থ ওভারে নিজের ব্যাটিং কারিশ্মা দেখাতে শুরু করেন নারিন। ছয়, চার, চার, ছয়— পর পর রান আসে নারিনের ব্যাট থেকে। ১৭ বলে ৫০ করেন তিনি। তবে তার পরেই উমেশ যাদবের বলে আউট হয়ে যান সুনীল। এই নিয়ে দু’বার আইপিএলের ইতিহাসে ১৭ বলে ৫০ করলেন নারিন।
সপ্তম ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৮১ রান তোলে কেকেআর। ব্যাট হাতেও চমক দেখাতে থাকেন নীতিশ রানা। ১৩ রানে উমেশ যাদবের বলে ফিরে যান রবিন উথাপ্পা। ১১তম ওভারে ১০০ রানের গণ্ডি পার করে কলকাতা নাইট রাইডার্স। ব্যাট করতে নামেন নাইট অধিনায়ক দীনেশ কার্তিক। কিছুক্ষণের মধ্যেই ৫০ রানের পার্টনারশিপও করে ফেলেন দীনেশ কার্তিক এবং নীতিশ রানা। ১৪১ রানের মাথায় ওয়াশিংটন সুন্দরের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন নীতিশ।
রিঙ্কু সিংহ ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৬ রান করেই আউট হয়ে যান। ক্রিজে নেমেই চমক দেখাতে থাকেন আন্দ্রে রাসেল। ১৭ ওভারে নাইটদের রান হয় ৫ উইকেটে ১৬৭ রান। শেষ ওভারের শুরুতেই ১৫ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান রাসেল। যদিও ১৮.৫ ওভারেই লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছে ৪ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয় নাইটরা।