গোল করতে পারলেন না। বিপক্ষ ডিফেন্ডারকে লাথি মারলেন। ম্যাচ শেষে বলেও দিলেন, ‘‘ইচ্ছা করে মারলে ও (মোলিনেরো) তো দাঁড়াতে পারত না।’’
লা লিগার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো।
মরসুম শুরু থেকেই ধারাবাহিকতার অভাবে বহু বার কটাক্ষের মুখে এসেছেন সিআর সেভেন। পর্তুগিজ মহাতারকাকেই দায়ী করা হয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদে রাফায়েল বেনিতেজের চাকরি হারানোর জন্য। নতুন কোচ এ বার জিনেদিন জিদানের অধীনেও যেন ভাগ্য খুব একটা পাল্টাচ্ছে না রোনাল্ডোর।
রিয়াল বেটিস ম্যাচ ১-১ ড্র করে রিয়াল মাদ্রিদ। যে ম্যাচে গোল করা তো দূর, গোলের সুযোগও তেমন তৈরি করতে পারেননি রোনাল্ডো। বরং দ্বিতীয়ার্ধে খারাপ কারণে শিরোনামে এলেন।
ঘটনাটা কী? গোল করতে না পেরে চটে ছিলেন রোনাল্ডো। আর সেই রাগ তিনি উগরে দেন বিপক্ষ ডিফেন্ডার ফ্রান্সিসকো মোলিনেরোকে লাথি মেরে। রেফারির নজর এড়িয়ে গেলেও সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের নজর এ়ড়াতে পারেনি ঘটনাটা। বিভিন্ন ভিডিওতে ধরা পড়েছে রোনাল্ডোর লাথি। ঠিক এক সপ্তাহ আগেই স্পোর্টিং গিজন ম্যাচেও নাচো কেসেসকে লাথি মারতে দেখা যায় রোনাল্ডোকে। বেঞ্জিমার গোলে ম্যাচ ড্র করে রিয়াল। কিন্তু ফের লাথি-বিতর্কে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় রোনাল্ডোকে।
ইচ্ছে করে তিনি লাথি মারেননি। সেই কথা জানিয়ে রোনাল্ডো বলেন, ‘‘আমি জেনেশুনে লাথি মারিনি। সত্যিকারের মারলে মোলিনেরো দাঁড়াতেই পারত না। আর আমি কোনও দিন ইচ্ছে করে মারিনি, মারবও না।’’ রিয়াল মহাতারকা যাই বলুন না কেন, বেটিস ডিফেন্ডার মোলিনেরো বলছেন, ‘‘রোনাল্ডো খুব খারাপ জিনিস করল। ও রকম ভাবে ওর পা চালানো উচিত হয়নি। আমি নিজেও অনেক ফাউল করি। কিন্তু তখন বলটাই ছিল না আমার কাছে। তাও ও এ রকম করল। রেফারি দেখতে পেলে কিন্তু কড়া কিছু পদক্ষেপ নিতেন ওর বিরুদ্ধে।’’
রোনাল্ডোর এই ঘটনার পরে স্প্যানিশ ফেডারেশন কোনও কঠিন পদক্ষেপ নেবে কি না সেটা সময়ই বলবে। কিন্তু সিআর সেভেনের আরও একটা নব্বই মিনিট গোল-খরার পরে অবশ্য তাঁর ফর্ম নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে স্প্যানিশ প্রচারমাধ্যম। যে ফুটবলার গত কয়েক মরসুমে প্রতি ম্যাচে বলে বলে গোল করেছেন তাঁর হঠাত্ কী হল? তা হলে কি রিয়ালে আর থাকতে চান না বলেই সেরাটা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন রোনাল্ডো? রিয়াল কোচ জিদান বলেন, ‘‘রোনাল্ডো ঠিক গোল করবে। আগের ম্যাচেই তো দুটো গোল করেছিল। আমি কোচ থাকা অবধি রোনাল্ডোকে বিক্রি করার কোনও প্রশ্নই উঠছে না।’’ প্রথম বার তাঁর অধীনে পয়েন্ট নষ্ট করে লা লিগার দৌড়ে পিছিয়ে পড়ল রিয়াল। তাতে অবশ্য চিন্তিত নন ফরাসি কিংবদন্তি। জিদান যোগ করছেন, ‘‘আমরা সঠিক পথে এগোচ্ছি। দু’পয়েন্ট নষ্ট করা অবশ্য খুব খারাপ। কিন্তু এই ম্যাচটা ভুলে যেতে হবে। এখনও অনেক ম্যাচ বাকি। দল খুব একটা খারাপ খেলেনি। শেষ পর্যন্ত লা লিগার জন্য লড়াই হবে।’’
জিদান এখনও তাঁর ‘স্টার-প্লেয়ারের’ উপর ভরসা রাখলেও রিয়াল প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ ধৈর্য হারিয়ে ফেলেছেন। রোনাল্ডোর উপর এতটাই রেগে রিয়াল প্রেসিডেন্ট যে, মরক্কোয় সিআর সেভেনের প্রিয় বন্ধু বাদার হরির সঙ্গে দেখা করাতেও নিষেধাজ্ঞা জারি করে দিলেন পেরেজ। কিছু দিন আগেই কিকবক্সার হরির সঙ্গে সমকামি বিতর্কে জড়িয়েছেন রোনাল্ডো। নিজের প্রিয় বন্ধুর সঙ্গে নববর্ষের পার্টিও করেছিলেন তিনি। পেরেজের মতে, এত ঘনঘন মরক্কো যাওয়ার জন্যই পারফরম্যান্সে ক্ষতি হচ্ছে রোনাল্ডোর। পেরেজ মরক্কোয় নিজের ঘনিষ্ঠমহলকে সতর্ক করে দিয়েছেন। বিশেষ করে মরক্কোর রাজা মহম্মদ সিক্স-কে। যদি রোনাল্ডোকে দেখা যায়, যেন সঙ্গে সঙ্গে পেরেজকে জানানো হয়। ব্রিটিশ প্রচারমাধ্যমের মতে প্রতিটা অনুশীলন সেশনের পরেই নাকি নিজের ব্যক্তিগত বিমানে মরক্কো উ়ড়ে যাচ্ছেন রোনাল্ডো। আগে মাসে দু’বার গেলেও এখন সোম থেকে বৃহস্পতি নিয়মিত যান।
এর মাঝেই আবার প্রশ্ন উঠছে, বিখ্যাত মডেল ও অভিনেত্রী কিম কারদাশিয়ানের ছোট বোন কেন্ডেল জেনারের প্রেমে পড়েছেন কি রোনাল্ডো? অন্তত সিআর সেভেনের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট দেখলে সে রকমটা মনে হতেই পারে। কেন্ডেলের প্রায় প্রতিটা ছবিতেই ‘লাইক’ করেছেন রোনাল্ডো। কেন্ডেলের বয়ফ্রেন্ড থাকলেও সিআর সেভেনের বড় সমর্থক তিনি। তা হলে কি ইরিনা শায়েকের অতিপ্রতিক্ষীত বিকল্প পেয়েছেন রোনাল্ডো? সেটাই প্রশ্ন!