অনিল খন্না।
বৃহস্পতিবারই সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় যাঁর প্রয়াণে সিএবি প্রেসিডেন্ট পদে ঘোষিত হলেন সেই জগমোহন ডালমিয়া যখন আইসিসির সর্বোচ্চ পদে বসেছিলেন সেটাকে ধরা হয়েছিল বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে ভারতীয় কর্মকর্তা-বিপ্লব!
চব্বিশ ঘণ্টা পরেই শুক্রবার সে ধরনের আর একটা দিন আসতে পারে আইটিএফে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলে ডালমিয়ার প্রথম এশীয় প্রেসিডেন্ট হওয়ার মতোই আন্তর্জাতিক টেনিস ফেডারেশনের প্রথম এশীয় প্রেসি়ডেন্ট হয়ে যেতে পারেন অনিল খন্না। অল ইন্ডিয়া টেনিস অ্যাসোসিয়েশনের বহু বছরের সর্বোচ্চ কর্তা খন্না সব সময় বলে আসছেন, ‘‘আমার জেতার সম্ভাবনা না থাকলে নির্বাচনে লড়তামই না।’’
চিলির সান্তিয়াগোতে শুক্রবার আইটিএফের তিন দিনের বার্ষিক সাধারণ সভার শেষ দিনের প্রধান আলোচ্য সূচি নতুন প্রেসি়ডেন্ট নির্বাচন। ১৬ বছর দায়িত্ব সামলানোর পর ইতালির ফ্রান্সেসকো রিকি বিটি সংস্থার সংবিধান মাফিক তিনটে মেয়াদ শেষ হওয়ায় আইটিএফ প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। নতুন প্রেসিডেন্টের নির্বাচনে চতুর্মুখী লড়াইয়ে ভারতের অনিল খন্নার প্রতিদ্বন্দ্বী আমেরিকার ডেভিড হ্যাগার্টি, স্পেনের খুয়ান লোবাতো, সুইৎজারল্যান্ডের রেনে স্ট্যামবাখ। ১৪৫ দেশের জাতীয় টেনিস সংস্থার ভোট দেওয়ার অধিকার। যার মধ্যে ৩৭টা এশীয় দেশ।
ওয়াকিবহাল মহলের অঙ্ক, এশিয়ার ৩৭টা ভোটই এশীয় টেনিস ফেডারেশনের বর্তমান প্রেসি়ডেন্ট অনিল খন্না পেলে আশ্চর্য়ের কিছু নেই। আইটিএফের সদর দফতর লন্ডনে। এবং ইউরোপীয় টেনিস ফেডারেশনগুলোর প্রভাবই সেখানে প্রধান। তা সত্ত্বেও রজার ফেডেরার এবং রাফায়েল নাদালের দেশের দুই প্রার্থীর মধ্যে ইউরোপিয়ান দেশের ভোটগুলো ভাগ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা এবং সেটাই স্বাভাবিক।
তবে অনেকে আবার মনে করছেন, যে দেশের কোনও পুরুষ বা মেয়ে টেনিস প্লেয়ার সিঙ্গলসে বিশ্বের প্রথম একশোর মধ্যেও নেই, সে দেশের এক কর্তাকে আইটিএফের সর্বোচ্চ পদে বসানোর পক্ষে ভোট দেওয়াটা কতটা ন্যায্য হবে সেটাও ভোটদাতাদের চিন্তায় আসতে পারে। উল্টো দিকে এশিয়ায় এটিপি এবং ডব্লিউটিএ (পুরুষ ও মেয়েদের পেশাদার ট্যুর) টুর্নামেন্ট বেশি সংখ্যায় আনতে আইটিএফে এক জন এশীয় প্রেসি়ডেন্টের দরকার বলে মনে করছে এশিয়ান টেনিস লবি।
অনিল খন্না গত কয়েক বছরে দুটো চ্যালেঞ্জার, ১৫টা ফিউচার্স, মেয়েদের ১৪টা আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট আইটিএফ থেকে ভারতে এনে তাঁর সাংগঠনিক ক্ষমতার প্রমাণ রেখেছেন বলেও অনেকের মত। এখন দেখার শেষ বাজিমাতও করেন কি না খন্না। এই মুহূর্তে কোনও খেলার বিশ্ব সংস্থায় সর্বোচ্চ পদে ভারতীয় রয়েছেন মাত্র দু’জন। আইসিসিতে এন শ্রীনিবাসন আর বিশ্ব স্কোয়াশ ফেডারেশনে তাঁরই ভাই এন রামচন্দ্রন।