ইস্টবেঙ্গলে থেকে গেলেন খালিদ, মাথার উপরে সুভাষ

সোমবার সন্ধ্যায় ক্লাব তাঁবুতে তিন ঘণ্টা কর্মসমিতির সভার পর ইস্টবেঙ্গল সচিব কল্যাণ মজুমদার বলে দিলেন, ‘‘সুপার কাপের জন্য বর্তমান কোচের সঙ্গে সুভাষ ভৌমিককে যুগ্মভাবে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৮ ০৪:১৫
Share:

কোচ খালিদের সঙ্গে এ বার কাজ করবেন ইস্টবেঙ্গলের ‘ঘরের ছেলে’ সুভাষ ভৌমিক।

খালিদ জামিলের কোচের চেয়ার থাকল। তবে অর্ধেক ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হল। তাঁর মাথার উপর বসিয়ে দেওয়া হল ইস্টবেঙ্গলকে দু’বার জাতীয় লিগ দেওয়া কোচ সুভাষ ভৌমিককে। টেকনিক্যাল ডিরেক্টর হিসাবে কাজ করবেন তিনি। তবে চমকপ্রদ ব্যাপার হল, সুভাষের আবাহনের দিন লাল-হলুদের আর এক লিগ জয়ী কোচ মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য সরে গেলেন। তাঁকে আর ম্যানেজার হিসাবে দেখা যাবে না।

Advertisement

সোমবার সন্ধ্যায় ক্লাব তাঁবুতে তিন ঘণ্টা কর্মসমিতির সভার পর ইস্টবেঙ্গল সচিব কল্যাণ মজুমদার বলে দিলেন, ‘‘সুপার কাপের জন্য বর্তমান কোচের সঙ্গে সুভাষ ভৌমিককে যুগ্মভাবে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। দু’জনের ক্ষমতাই সমান। দু’জনে মিলে কোচিং করবেন। দল ঠিক করবেন।’’ ক্লাবের এই সিদ্ধান্ত শোনার পর খালিদ তা মানবেন কী না তা নিয়ে সন্দেহ ছিল। কিন্তু রাতে খালিদ জামিল ও সুভাষ ভৌমিক—দু’জনের সঙ্গেই কথা বলেন ক্লাব কর্তারা। দু’জনেই যৌথ ভাবে সুপার কাপে কাজ করতে রাজি হয়ে যান। আজ মঙ্গলবার বিকেলে সুভাষ ও খালিদকে নিয়ে ক্লাব তাঁবুতে আলোচনায় বসছেন লাল-হলুদ কর্তারা।

মনোরঞ্জনকে ক্লাব কর্তারা দলের রক্ষণ সংগঠন ঠিক করার দায়িত্ব দিলেও তাঁকে কাজ করতে দেননি খালিদ। অনুশীলনে এসেও বারবার অপমানিত হয়েছেন মনোরঞ্জন। সেই খালিদ নিজের গোঁ থেকে সরে এসে কোন কারণে সুভাষকে মেনে নিলেন তা জানা যায়নি। তাঁর ফোন বেজেই চলেছে। তবে নয় বছর পর ফের ইস্টবেঙ্গলের দায়িত্ব পেয়ে সুভাষ বলে দিলেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গলের প্রস্তাব পেয়েছি। ওই ক্লাবের দায়িত্ব পাওয়াটা সব সময়ই সম্মানের। দায়িত্ব নিচ্ছি। ইস্টবেঙ্গলের সব খেলা দেখেছি। সমস্যাটা কী তা সবার সঙ্গে কথা বলে বুঝতে হবে।’’ ইউসা কাতসুমি, অর্ণব মণ্ডল-রা এখন ছুটিতে রয়েছেন। ইস্টবেঙ্গলের অনুশীলন শুরু হবে ১৯ মার্চ। তখন বোঝা যাবে খালিদ কী করেন? সুভাষের প্রতিক্রিয়াও বা কী হয়?

Advertisement

আই লিগে ব্যর্থ হওয়ার পর খালিদকে সরানোর মঞ্চ প্রস্তুত-ই ছিল। তাঁকে নিজের সিদ্ধান্তও জানাতে বলা হয়েছিল। কিন্তু খালিদ ক্লাব কর্তাদের অনুরোধ করেন সুপার কাপে তাঁকে আর একটা সুযোগ দেওয়ার জন্য। শেষ পর্যন্ত সেটাই মেনে নেন কর্তারা। সভায় কেউ কোচকে সরানোর পক্ষে সওয়াল করেননি বলে খবর। সভা থেকে বেরিয়ে এক কর্তা বললেন, ‘‘সুপার কাপের দু’তিনটি ম্যাচ হয়তো খেলবে ইস্টবেঙ্গল। এই অবস্থায় খালিদকে সরালে ভুল বার্তা যেত ফুটবলারদের মধ্যে। সে জন্যই এমন একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যাতে সাপও মরে, লাঠিও না ভাঙে।’’ কোচিং করালেও ম্যাচের সময় রিজার্ভ বেঞ্চে ডিগ্রিহীন সুভাষ কোন ভূমিকায় থাকবেন তা নিয়ে অবশ্য ধোঁয়াশা রয়েছে।

খালিদ এ বছর টিঁকে গেলেও পরের মরসুমে তাঁকে আর ইস্টবেঙ্গল কোচের চেয়ারে দেখা যাবে না, বুঝিয়ে দিয়েছেন ইস্টবেঙ্গল সচিব। বলে দিলেন, ‘‘খালিদের সঙ্গে আমাদের চুক্তি এক বছরের। সামনের মরসুমের নতুন কোচ আসবে।’’ কোচ বদল না হলেও খালিদ ও ফুটবলারদের সমালোচনায় মুখর ছিলেন লাল-হলুদ সচিব। বলে দেন, ‘‘খালিদ নিজেই বিদেশি বেছে নিয়েছে। আমরা কাউকে চাপিয়ে দিইনি। মাত্র দু’টো ম্যাচ জিতলেই আই লিগ আসত। সেটাই হয়নি। কোচ ব্যর্থ হয়েছেন বলেই তো আমাদের সুভাষ ভৌমিককে আনতে হয়েছে। পাশাপাশি ফুটবলাররাও তো ব্যর্থ। কোচ একা দায়ী নয়। ফুটবলাররাও সমান দায়ী।’’ এ দিকে সুপার কাপে ইস্টবেঙ্গলের প্রথম ম্যাচ ৫ এপ্রিল। প্রতিপক্ষ মুম্বই এফ সি বনাম ইন্ডিয়ান অ্যারোজ ম্যাচের বিজয়ী দল। মোহনবাগানের খেলা ১ এপ্রিল। চার্চিল ব্রাদার্স বনাম দিল্লি ডায়ানামোসের বিজয়ীর সঙ্গে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement