অভিমানী: মাঠে এলেও প্র্যাক্টিসে নামলেন না খালিদ। —নিজস্ব চিত্র
তিনি মাঠে এলেন অনুশীলন শুরু হওয়ার প্রায় ঘণ্টাখানেক আগে। অথচ মাঠেই নামলেন না। প্রায় চার ঘণ্টা নিজেকে বন্দি করে রাখলেন যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন সংলগ্ন মাঠের ড্রেসিংরুমে! তিনি, ইস্টবেঙ্গল কোচ খালিদ জামিল।
লাল-হলুদ শিবিরে গত কয়েক দিন ধরেই শিরোনামে খালিদ। ফুটবলারদের নিয়ে টেকনিক্যাল ডিরেক্টর (টিডি) সুভাষ ভৌমিক সুপার কাপের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। কিন্তু প্রধান কোচ খালিদের দেখা নেই। এমনকী, ক্লাবের শীর্ষ কর্তাদেরও ফোন ধরেননি আইজল এফসি-কে গত মরসুমে আই লিগে চ্যাম্পিয়ন করা কোচ। ইস্টবেঙ্গলে তাঁর ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা যখন তুঙ্গে, তখনই নাটকীয় পরিবর্তন চিত্রনাট্যে। চব্বিশ ঘণ্টা আগে ক্লাব কর্তাদের খালিদ জানান, বৃহস্পতিবার থেকেই অনুশীলন যোগ দেবেন। এ দিন সকালে ফুটবলাররা আসার আগেই যুবভারতীতে পৌঁছে যান খালিদ। কোচেদের জন্য নির্দিষ্ট হলুদ রঙের জার্সি পরে দ্রুত তৈরিও হয়ে গিয়েছিলেন অনুশীলনের জন্য। কিন্তু তার পরেই বদলে গেল ছবিটা। এক দিকের ড্রেসিংরুমে ফুটবলারদের নিয়ে যখন টিম-মিটিং করছেন সুভাষ, অন্য দিকের ড্রেসিংরুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিলেন খালিদ। টিম মিটিং শেষ করে মহম্মদ আল আমনা, কাতসুমি ইউসা-দের নিয়ে সুভাষ মাঠে নামার পরে ড্রেসিংরুমের দরজা সামান্য ফাঁক করেই ফের বন্ধ করে দিলেন। তার পরেই দেখা গেল, কোচের জার্সি খুলে ফেলেছেন তিনি। ফুটবলারদের নীল রঙের প্র্যাক্টিস জার্সি পরে কয়েক মুহূর্তের জন্য ড্রেসিংরুমের বাইরে এলেন!
পুরোদমে অনুশীলন চলছে। অথচ প্রধান কোচ ড্রেসিংরুমে নিজেকে বন্দি করে রেখেছেন। চরম অস্বস্তিকর পরিস্থিতি সামলাতে ফুটবল সচিব থেকে অন্যান্য কর্তারা দফায় দফায় কথা বললেন খালিদের সঙ্গে। কিন্তু তাঁকে মাঠে নামাতে পারলেন না। কেউ কেউ মনে করছিলেন, বৃহস্পতিবারই হয়তো ইস্টবেঙ্গল ছেড়ে চলে যাবেন খালিদ। কারণ, কোনও অবস্থাতেই সুভাষ ভৌমিকের সঙ্গে তিনি কাজ করবেন না। খালিদ-ই সেই ধারণা ভেঙে দিলেন অনুশীলন শেষ হওয়ার পরে। দুপুর সওয়া বারোটা নাগাদ অবশেষে ড্রেসিংরুম থেকে বেরোলেন খালিদ। বললেন, ‘‘অসুস্থ ছিলাম। এখন সুস্থ। কিন্তু প্রচণ্ড দুর্বল। তাই বিশ্রাম নিয়েছি। শুক্রবার থেকে অনুশীলনে নামব।’’ টিডি থেকে ক্লাবের শীর্ষ কর্তাদের ফোন না ধরার ব্যাখ্যাও দিলেন লাল-হলুদ কোচ। বললেন, ‘‘শরীর খারাপের জন্য ফোন সাইলেন্ট মোডে রেখেছিলাম।’’ চব্বিশ ঘণ্টা আগে ক্ষুব্ধ লাল-হলুদ টি়ডি জানিয়েছিলেন, খালিদ অনুশীলনে এলেও মাঠে নামতে দেবেন না। কিন্তু তা নিয়ে যে তিনি ক্ষুব্ধ নন, দাবি করলেন খালিদ। বললেন, ‘‘সুভাষ ভৌমিক বলতেই পারেন। ওঁর অধিকার রয়েছে। টিডি-র উপরে আমার কোনও ক্ষোভ নেই। সুভাষ ভৌমিক তো আমার দাদা ও চাচার মতো!’’
আরও পড়ুন: দেশে ফিরে যাচ্ছেন না আউচো
সুভাষ ভৌমিকের সঙ্গে সংঘাতের তত্ত্বও উড়িয়ে দিলেন খালিদ। বললেন, ‘‘সুভাষ ভৌমিকের সঙ্গে আমার কোনও সংঘাত নেই। ইস্টবেঙ্গলের সাফল্যের জন্য আমরা একসঙ্গে কাজ করব। সিদ্ধান্ত নেব।’’ সঙ্গে যোগ করলেন, ‘‘এই মুহূর্তে শুধু সুপার কাপ নিয়েই ভাবছি। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী মরসুমেও থাকব!’’