জুটি: মেলবোর্নে ভারতকে জেতানোর পরে ধোনি-কেদার। শুক্রবার। ছবি: এপি।
অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে এ বার প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেই ভারতের ঐতিহাসিক ওয়ান ডে সিরিজ জেতার পিছনে বড় ভূমিকা নিয়েছেন তিনি। মহেন্দ্র সিংহ ধোনির সঙ্গে থেকে ভারতকে ম্যাচ জিতিয়ে এসেছেন কেদার যাদব। আর ম্যাচ শেষ করেই যুজবেন্দ্র চহালের অধুনা বিখ্যাত হয়ে যাওয়া ‘চহাল টিভি’-তে এসে ধোনির সঙ্গে খেলার অভিজ্ঞতা তুলে ধরলেন এই ব্যাটসম্যান।
কেদার যখন ব্যাট করতে নামেন, ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহালি সবে ফিরে গিয়েছেন। আর একটা উইকেট পড়া মানে চাপ বেড়ে যাওয়া। কী মনে হচ্ছিল তখন, প্রশ্ন করেন চহাল। যার জবাবে কেদার বলেন, ‘‘এটাই সিরিজের প্রথম ম্যাচ ছিল আমার। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে শেষ ম্যাচও। তাই চেয়েছিলাম, যতটা সম্ভব সময় ব্যাট করতে। আমি সাধারণত একশো স্ট্রাইক রেট রেখেই ব্যাট করি। তাই জানতাম, নিজের খেলাটা খেলতে পারলেই হবে। তা ছাড়া উল্টো দিকে মাহি ভাই ছিল। কোনও সমস্যা হলে ওর দিকে তাকালেই সব কিছুর সমাধান হয়ে যায়।’’
এখানেই অবশ্য শেষ নয়। কেদার বলে চলেন, ‘‘মহেন্দ্র সিংহ ধোনি উল্টো দিকে থাকা মানেই ব্যাটিং করা সহজ হয়ে যায়। মাহি ভাইয়ের সঙ্গে ব্যাট করা মানে যেন দু’টো মাথা নিয়ে খেলতে নামা। একটা মাথা নিজের, অন্যটা ধোনির। যেটা সব সময় দারুণ সুবিধের ব্যাপার।’’ চহাল এর পরে বলে চলেন, ‘‘আপনারা দু’জনে যখন ব্যাট করছিলেন, তখন নিজেদের মধ্যে কী কথা হচ্ছিল? আমরা দেখছিলাম, একবার রান রেট বাড়ছে, একবার কমছে। তখন নিজেদের মধ্যে কী আলোচনা করছিলেন আপনারা?’’
কেদার যার জবাবে বলেন, ‘‘আমরা যখনই দেখছিলাম, বল আর রানের মধ্যে ফারাকটা দশের বেশি হয়ে যাচ্ছিল, নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে নিচ্ছিলাম। ঠিক করছিলাম, কোন বোলারকে মারা যায়, কত ওভার পরে মারা যায়, কার কত ওভার বাকি আছে, এ সব। রানের চেয়ে বল বেশি কমে যাক, এটা আমরা কখনও চাইনি।’’ কেদার আরও বলেন, ‘‘প্রতি ওভারের পরেই আমাদের কৌশল কিছুটা বদলাচ্ছিল। আমরা নিজেদের শক্তি জানতাম। সেই হিসেবে খেলছিলাম।’’
বিশ্বকাপের আগে এ রকম একটা ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের পরে কী রকম লাগছে? কেদারের জবাব, ‘‘অবশ্যই খুব ভাল লাগছে। টেস্ট সিরিজের পরে ওয়ান ডে সিরিজ জিতলাম। বিশ্বকাপের আগে দলটা খুব ভাল জায়গায় আছে। এই দলের অংশ হতে পেরে খুব ভাল লাগছে। এই দলটার বৈশিষ্ট হল, প্রয়োজনের সময় সবাই কিছু না কিছু অবদান রাখতে পারে। সবাই দায়িত্ব নিতে এগিয়ে আসে।’’
সাক্ষাৎকার শেষ করার আগে চহাল সেই আবেদনটাই করলেন, যেটা তিনি শোয়ের অতিথিদের কাছে করে থাকেন। ‘চহাল টিভি’র প্রচারে কিছু একটা বলুন। কেদার বলে গেলেন, ‘‘চহাল টিভি এখন বিশ্ববিখ্যাত। আমরা এ বার একে চাঁদে নিয়ে যাব।’’
স্কোরকার্ড
অস্ট্রেলিয়া ২৩০ (৪৮.৪)
ভারত ২৩৪-৩ (৪৯.২)
অস্ট্রেলিয়া
ক্যারি ক কোহালি বো ভুবনেশ্বর ৫•১১
ফিঞ্চ এলবিডব্লিউ বো ভুবনেশ্বর ১৪•২৪
খোয়াজা ক ও বো চহাল ৩৪•৫১
মার্শ স্টাঃ ধোনি বো চহাল ৩৯•৫৪
হ্যান্ডসকম্ব এবিডব্লিউ বো চহাল ৫৮•৬৩
স্টোয়নিস ক রোহিত বো চহাল ১০•২০
ম্যাক্সওয়েল ক ভুবনেশ্বর বো শামি ২৬•১৯
রিচার্ডসন ক কেদার বো চহাল ১৬•২৩
জাম্পা ক শঙ্কর বো চহাল ৮•১৪
সিডল ন. আ. ১০•১১
স্ট্যানলেক বো শামি ০•২
অতিরিক্ত ১০
মোট ২৩০ (৪৮.৪)
পতন: ১-৮ (ক্যারি, ২.৫), ২-২৭ (ফিঞ্চ, ৮.৬), ৩-১০০ (মার্শ, ২৩.১), ৪-১০১ (খোয়াজা, ২৩.৪), ৫-১২৩ (স্টোয়নিস, ২৯.৩), ৬-১৬১ (ম্যাক্সওয়েল, ৩৪.৫), ৭-২০৬ (রিচার্ডসন, ৪৩.৩), ৮-২১৯ (হ্যান্ডসকম্ব, ৪৫.৬), ৯-২২৮ (জাম্পা, ৪৭.৪), ১০-২৩০ (স্ট্যানলেক, ৪৮.৪)।।
বোলিং: ভুবনেশ্বর কুমার ৮-১-২৮-২, মহম্মদ শামি ৯.৪-০-৪৭-২, বিজয় শঙ্কর ৬-০-২৩-০, কেদার যাদব ৬-০-৩৫-০, রবীন্দ্র জাডেজা ৯-০-৫৩-০, যুজবেন্দ্র চহাল ১০-০-৪২-৬।
ভারত
রোহিত ক মার্শ বো সিডল ৯•১৭
ধওয়ন ক ও বো স্টোয়নিস ২৩•৪৬
কোহালি ক ক্যারি বো রিচার্ডসন ৪৬•৬২
ধোনি ন. আ. ৮৭•১১৪
কেদার ন. আ. ৬১•৫৭
অতিরিক্ত ৮
মোট ২৩৪-৩ (৪৯.২)
পতন: ১-১৫ (রোহিত, ৫.৬), ২-৫৯ (ধওয়ন, ১৬.২), ৩-১১৩ (কোহালি, ২৯.৬)।
বোলিং: জাই রিচার্ডসন ১০-১-২৭-১, পিটার সিডল ৯-১-৫৬-১, বিলি স্ট্যানলেক ১০-০-৪৯-০, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ১-০-৭-০, অ্যাডাম জাম্পা ১০-০-৩৪-০, মার্কাস স্টোয়নিস ৯.২-০-৬০-১।
৭ উইকেটে জয়ী ভারত
ম্যাচের সেরা যুজবেন্দ্র চহাল