জয় না আসায় হতাশ জবিরা। সুদীপ্ত ভৌমিক
ভূস্বর্গে বরফ পড়ছে। ম্যাচ হওয়া কঠিন। ফেডারেশন কর্তারা তাই রিয়াল কাশ্মীরকে ভারত ভ্রমণে বের করে দিয়েছেন। পাঁচটি রাজ্যে গিয়ে আই লিগের টানা ছয়টি ম্যাচ খেলতে হচ্ছে ডেভিড রবার্টসনের দলকে।
ইস্টবেঙ্গল ১ • রিয়াল কাশ্মীর ১
শুক্রবার ছিল এই সফরে তাদের তিন নম্বর ম্যাচ। এ রকম কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়েও পাহাড়ের দলটিকে কিন্তু থামানো গেল না। কোঝিকোড়, চেন্নাইয়ের পর কলকাতা থেকেও পয়েন্ট ছিনিয়ে নিয়ে গেল প্রতিযোগিতার নবীনতম ক্লাব। শুধু তাই নয়, নেরোকা, চেন্নাই এফসির সঙ্গে লিগ টেবলে সম সংখ্যক পয়েন্ট (১৮) নিয়ে খেতাব দৌড়ে প্রবল ভাবে রয়ে গেল কাশ্মীরের দলটি।
একেবারে উল্টো ছবি ইস্টবেঙ্গলের। কলকাতার শীতলতম দিনেও যে হাজার পনেরো লাল-হলুদ সমর্থক যুবভারতীতে এসেছিলেন, তাঁদের শুকনো মুখেই ফিরতে হল। গা-গরম করা স্লোগান দেওয়ার সুযোগ পেলেন না। দলের কোচ আলেসান্দ্রো মেনেন্দেস অবশ্য বলে গেলেন, ‘‘মার্চের শেষে বোঝা যাবে লিগ টেবলে কে কোথায় গিয়ে দাঁড়াল। খেতাব নিয়ে এখন আমি ভাবছিই না। শেষ পাঁচ ম্যাচে ওটা ভাবব।’’ লিগ অর্ধেক হয়ে গেলেও খেতাব কে পাবে তা বলার সময় এখনও আসেনি। তবে এটা লিখে দেওয়াই যায়, প্রতিযোগিতা যত এগোচ্ছে ততই স্পষ্ট হচ্ছে কলকাতায় এ বারও খেতাব আসার সম্ভবনা কম। শুক্রবার দুপুরে মোহনবাগানের লজ্জাজনক হারের পর, সন্ধ্যায় ইস্টবেঙ্গলের দু’পয়েন্ট নষ্ট যেন সেটা আরও স্পষ্ট করে দিল।
স্প্যানিশ বনাম স্কটিশ কোচের দ্বৈরথ। জানা ছিল, দুই কোচই অঙ্ক কষা ফুটবল খেলবেন। বিপক্ষের সেরা অস্ত্রকে ভোঁতা করার কৌশল নেবেন। হলও তাই। দু’টি গোল হল বটে, তবে দু’টি গোলের ক্ষেত্রে গোলদাতার কৃতিত্বের চেয়ে প্রতিপক্ষের মুহূর্তের ব্যর্থতাই বেশি দায়ী। বিরতি পর্যন্ত ম্যাচ ছিল গোলশূন্য। পরের অর্ধে খেলা শুরুর দশ সেকেন্ডের মধ্যেই লালরাম চুলোভার আত্মঘাতী গোল। সুরচন্দ্র সিংহের গোলমুখী পাস বাইরে বের করতে গিয়ে নিজের দলকেই পিছিয়ে দিলেন লালরাম। ১-০ এগিয়ে যাওয়ার পর কাশ্মীরের দলটি হঠাৎই নিজেদের গুটিয়ে নিল। সেই সুযোগে সমতায় ফিরল আলেসান্দ্রোর দল। কাশিম আইদারার হেড নিজেদের গোল লাইন থেকে ফিরিয়েছিলেন কাশ্মীরের দানিশ ফারুক। সেই বল গোলে পাঠান জবি জাস্টিন। স্ট্রাইকারহীন ইস্টবেঙ্গলে কেরলের জবিই এখন দলের পরিত্রাতার ভূমিকায়। আই লিগে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা এখন তিনিই। উইলিস প্লাজার (৮) গোলের পরই জবি। করে ফেললেন ছয় গোল। একা কুম্ভ হয়ে তিনি দলের পনেরো বছরের শাপমুক্তি ঘটাতে পারবেন কী না সেটা অবশ্য সময়ই বলবে।
কাশ্মীরের কোচ চেয়েছিলেন ইস্টবেঙ্গল মাঝমাঠের ছন্দ নষ্ট করে দিতে। সেই লক্ষ্যে ধ্বংসাত্মক ফুটবল খেলার জন্য তিনি ব্যবহার করেন ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন বাজি আর্মান্ডকে। আইভরি কোস্টের মিডিয়ো খেলতেই দেননি লালরিনডিকাদের। ফলে ইস্টবেঙ্গলের আক্রমণটাই সেভাবে দানা বাঁধেনি। খেলাটা বেশিরভাগ সময় তাই মাঝমাঠেই আটকে থাকল। কখনও চোখের আরাম দিল না।
ইস্টবেঙ্গল: রক্ষিত দাগার, লালরাম চুলোভা, জনি আকোস্তা, বোরখা গোমেজ, মনোজ মহম্মদ, লালডানমাইয়া রালতে, কাশিম আইদারা, লালরিনডিকা রালতে, ব্যান্ডন ভানলালরেমডিকা, জবি জাস্টিন, খাইমে কোলাডো।