উদ্যোগী: লাল-হলুদ ভক্তদের জন্য খুশির খবর দিলেন মমতা। ফাইল চিত্র
নতুন লগ্নিকারী চূড়ান্ত। তার হাত ধরেই এ বার আইএসএলে খেলবে ইস্টবেঙ্গল। বুধবারেই লাল-হলুদ ক্লাবের এই খুশির খবর প্রকাশিত হয়েছিল আনন্দবাজারের এক্সক্লুসিভ প্রতিবেদনে।
আর তার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই বুধবার বিকেলে নবান্নতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে ঘোষণা হল শতবর্ষে পা দেওয়া ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের নতুন লগ্নিকারী সংস্থা ‘শ্রী সিমেন্ট’-এর নাম। যে অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন ইস্টবেঙ্গল ও লগ্নিকারী সংস্থার শীর্ষ কর্তাব্যক্তিরা। ক্লাব ও নতুন সংস্থার এই যুগলবন্দির ঘোষণা সরকারি ভাবে প্রচার হওয়ার পরেই ইস্টবেঙ্গল তাঁবুর সামনে এই অতিমারির বিকেলেও ভিড় সমর্থকদের। প্রিয় দল আইএসএলে খেলবে কি না, তা নিয়ে ৭২ ঘণ্টা আগেও যাঁদের মধ্যে ছিল একরাশ সংশয়। তাঁরাই এ দিন তাঁবুতে মিষ্টিমুখ করে বলে গেলেন, ‘‘এ বার আইএসএলে খেলবে ক্লাব। ট্রফি আনার জন্য নতুন লড়াই সামনে।’’
ইস্টবেঙ্গলের নতুন লগ্নিকারীর নাম ঘোষণার পরে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও বলে দিলেন, ‘‘বাংলায় নতুন দিগন্তের সূচনা হবে। বাংলা ছাড়া দেশের ফুটবল সম্পূর্ণ হয় না। অনিশ্চয়তার মেঘ কেটে গিয়ে নতুন সকাল এসে গিয়েছে। ইস্টবেঙ্গল সমর্থকেদের আজ খুশির দিন। কারণ, তাঁরা এ বার আইএসএলে খেলবেন।’’ যোগ করেন, ‘‘আর ঝঞ্ঝাট নেই। সমস্যা সমাধানের চেয়ে বড় খুশি আর কিছু হয় না।’’
আরও পড়ুন: সব প্রজন্ম ঐতিহ্যের ডার্বিরই অপেক্ষায়
১০০ বছরে খেলার মাঠে বহু ম্যাচ পিছিয়ে থেকে বীরদর্পে লড়াই করে ছিনিয়ে এনেছে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব। কিন্তু এ বার লগ্নিকারীর অভাবে আইএসএলের দরজা প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গলের। হাতের বাইরে চলে যাওয়া সেই ‘ম্যাচ’ লাল-হলুদ শিবির জিতে ফিরেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও আইএসএল কর্তৃপক্ষ মুকেশ অম্বানী, নীতা অম্বাদীনের সম্মিলিত উদ্যোগে। নেপথ্যে থেকে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও বড় ভূমিকা পালন করেছেন। যিনি নিজে আবার এটিকে-মোহনবাগানের সঙ্গে যুক্ত। ধরেই নেওয়া হচ্ছে, এর পর আর আইএসএল খেলতে কোনও সমস্যা থাকবে না কারণ, নীতা অম্বানী নিজে ইস্টবেঙ্গলের পাশে থাকছেন এবং যুদ্ধকালীন তৎপরতায় তাদের লিগের সঙ্গে যুক্ত করতেও তৈরি।
নবান্নে এই বৈঠকের পরেই ইস্টবেঙ্গলের তরফে প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী এবং সৌরভের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ইস্টবেঙ্গল। ক্লাবের পক্ষে সেই বিজ্ঞপ্তিতে সই করেন সচিব কল্যাণ মজুমদার। বৈঠকে এ দিন তিনি এবং শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার ছাড়াও ছিলেন ক্লাবের আরও দুই প্রতিনিধি। লাল-হলুদ সচিব বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। উনি সব সময় পাশে ছিলেন বলেই এই জায়গায় এসে আইএসএলে খেলার জন্য পদক্ষেপ করতে পারছি।’’ শীর্ষকর্তাও বলেন, ‘‘যে দিন মোহনবাগান এটিকের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল, সে দিন তিনি ফোন করে বলেছিলেন, তোমরা কী ভাবছ? আমি তোমাদের পাশে আছি।’’ লগ্নিকারী সংস্থার তরফে বলা হয়, ‘‘ভারতীয় ফুটবলের সেরা প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্যই শতবর্ষ প্রাচীন ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছি আমরা।’’
অনুষ্ঠানেই মুখ্যমন্ত্রী ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে বলেন, কলকাতার তিন প্রধান মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল ও মহমেডানের নামে কলকাতায় তিনটি গেট নির্মাণ করার জন্য। ক্রীড়ামন্ত্রী বলেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, মহমেডান বাঙালির গর্ব। তারা দক্ষতার শীর্ষে গেলেই ভারতের
ফুটবলের উন্নতি হবে।’’