লাল-হলুদের দুই কোচকে ফের তলব করল ফেডারেশনের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি।
১৯ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় ডার্বি যুদ্ধে নামার আগে প্রবল চাপে এসসি ইস্টবেঙ্গল। হেড কোচ রবি ফাওলার ও দলের সহকারী কোচ টনি গ্রান্টের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ তুলেছে সর্ব ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি। গত ১২ ফেব্রুয়ারি তিলক ময়দানে আয়োজিত ম্যাচের শেষে হায়দরাবাদ এফসির ফুটবলারদের উদ্দেশে গ্যালারি থেকে অশালীন মন্তব্য করেন নির্বাসিত কোচ ফাওলার। তাই তাঁকে এবার নতুন করে শো-কজ করেছে শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি। ফাওলারকে এই চিঠির জবাব আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দিতে হবে। এমনটাই জানানো হয়েছে। যদিও এই বিষয়ে এসসি ইস্টবেঙ্গলের কর্তারা এখনই মন্তব্য করতে রাজি নন। তারা বরং ধীরে চলো নীতি নিচ্ছেন।
তবে টনি গ্রান্টেরও রেহাই নেই। তাঁর বিরুদ্ধেও একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে। রেফারি ও হায়দরাবাদ এফসি-র প্রধান কোচ সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য গ্রান্টকেও হাজিরা দিতে বলল শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি। আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি দুপুর ২টো নাগাদ ভার্চুয়াল আলোচনায় তাঁকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। সেদিন দুপুরে আইনজীবী ও শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির প্রধান ঊষানাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে গ্রান্ট নিজের বক্তব্য রাখার সুযোগ পাবেন। গ্রান্টের বিরুদ্ধে একযোগে ম্যাচ কমিশনার ও রেফারি প্যানেল থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। এছাড়া বিপক্ষ দলের তরফ থেকেও অভিযোগ এসেছে। তাছাড়া ম্যাচের শেষে সাংবাদিক সম্মেলনের ভিডিয়োও রয়েছে ফেডারেশনের কাছে।
রেফারিদের বিরুদ্ধে মুখ খুলে আগেই ৪ ম্যাচ নির্বাসিত হয়েছেন দলের প্রধান কোচ। সেই জন্য দল পরিচলনা করছিলেন তাঁর সহকারী গ্রান্ট। তবে ফাওলারের মত তিনিও রেফারিদের বিরুদ্ধে মুখ খুলে সমস্যায় পড়েছেন। পাশাপাশি তিনি এটাও বলেন, বিপক্ষ দলের কোচ মাঠে থাকা রেফারিদের নিয়ন্ত্রণ করছেন! তাঁর এমন মন্তব্যে আরও শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এটা ফেডারেশন মোটেও ভালভাবে নিচ্ছে না। তাই ডার্বি যুদ্ধের আগেই তাঁকে শো-কজ করা হল।
হায়দরাবাদ এফসি-র বিরুদ্ধে ড্র করার পর বিতর্কিত মন্তব্য করেন গ্রান্ট। সেই ম্যাচের শেষে তিনি বলেছিলেন, “এ বারও পেনাল্টি পেলাম না। প্রতিটা ম্যাচে একই জিনিস হচ্ছে। আমাদের বিরুদ্ধে একাধিক ভুল সিদ্ধান্ত হচ্ছে। ওদের কোচ লাইন্সম্যানের সঙ্গে কথা বলে ঠিক করে দিচ্ছেন কী করা উচিত। তারপরেই লাইন্সম্যান বলছেন ওটা পেনাল্টি নয়! পুরোপুরি কোচের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন রেফারিরা। প্রথমত, এটা অনৈতিক। দ্বিতীয়ত, লাইন্সম্যানদের নিজেদের মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।”
এরপরেই তিনি আরও যোগ করেছিলেন, “রেফারি পেনাল্টির জন্য বাঁশি বাজাতেই যাচ্ছিলেন। কিন্তু লাইন্সম্যানের কথায় সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। খুবই লজ্জাজনক ব্যাপার। রেফারিদের বিরুদ্ধে বলার জন্য আমাদের কোচকে মাঠের বাইরে থাকতে হচ্ছে। ওরা যে উপদেশ দেয়, সেটা নিজেদেরও পালন করা উচিত। একজন খেলোয়াড় লড়াই করে সুযোগ আদায় করল। তারপরে তাকে ফাউল করা হলেও পেনাল্টি দেওয়া হল না? এটা কী রকম ব্যাপার!”
একে দলের ফল বেশ খারাপ। ১৭ ম্যাচে ১৭ পয়েন্ট নিয়ে লিগ তালিকার ৯ নম্বরে রয়েছে লাল হলুদ। হেড কোচ আগেই চার ম্যাচ নির্বাসিত হয়েছেন। আর এবার সেই একই বিতর্কিত বিষয়ে জড়িয়ে গেল গ্রান্টের নাম।
ফলে ১৯ ফেব্রুয়ারি এটিকে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে ফের একবার ডার্বি যুদ্ধে নামার আগে এসসি ইস্টবেঙ্গলকে আরও একটা কড়া পরীক্ষা দিতে হবে। গ্রান্ট সেই পরীক্ষায় পাশ করলে ভাল, না হলে ৯০ মিনিটের যুদ্ধে নামার আগে লাল-হলুদের জন্য আরও খারাপ সময় অপেক্ষা করছে।