মহড়া: তিন ম্যাচ পরে আইএসএলে জয়ে ফেরার সুযোগ এসসি ইস্টবেঙ্গলের। সামনে ওড়িশা। শুক্রবার তারই অনুশীলনে ব্যস্ত ব্রাইট, মাগোমারা। ছবি টুইটার।
চার ম্যাচের নির্বাসন কাটিয়ে রবি ফাওলার ফিরছেন। আজ, শনিবার ওড়িশা এফসি-কে হারিয়ে তিন ম্যাচ পরে এসসি ইস্টবেঙ্গল কি ফিরতে পারবে জয়ের সরণিতে?
এগারো দলের সপ্তম আইএসএলে সবার শেষে ওড়িশা। ১৯ ম্যাচে মাত্র নয় পয়েন্ট দিয়েগো মউরিসিয়োদের। সমসংখ্যক ম্যাচ খেলে ১৭ পয়েন্ট নিয়ে নবম স্থানে রয়েছে ব্রাইট এনোবাখারে-রা। সবুজ-মেরুন সমর্থকেরা যখন এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে যোগ্যতা অর্জন ও আইএসএলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন, এসসি ইস্টবেঙ্গলে তখন শুধুই অন্ধকার। শেষ ম্যাচে ওড়িশাকে হারাতে পারলে যন্ত্রণা হয়তো কিছুটা কমবে লাল-হলুদ সমর্থকদের।
এই মুহূর্তে যা পরিস্থিতি তাতে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত এসসি ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলারেরা কি পারবেন ঘুরে দাঁড়াতে? রবি ফাওলার যদিও আশাবাদী। শুক্রবার ভার্চুয়াল সাংবাদিক বৈঠকে লাল-হলুদ কোচ বললেন, ‘‘আমরা প্রত্যেকেই পেশাদার। হতে পারে এই মরসুমে এটাই আমাদের শেষ ম্যাচ। কিন্তু অনেক কিছু দেওয়ার আছে। আমার বিশ্বাস, ফুটবলারেরা সেই মানসিকতা নিয়েই খেলবে।’’ ফুটবলারদের উদ্দেশে ফাওলারের বার্তা, ‘‘খোলামনে খেলো। চেষ্টা করতে হবে ভুল না করার। মনে রাখবে, লক্ষ লক্ষ সমর্থক টিভির সামনে বসে থাকবেন তোমাদের খেলা দেখার জন্য।’’
আইএসএলে এই মরসুমে ওড়িশাকে ৩-১ হারিয়েই প্রথম জয় পেয়েছিল এসসি ইস্টবেঙ্গল। এ বার ছবিটা বদলাতে মরিয়া দিয়েগো-রা। ওড়িশার কোচ ভারতীয় দলের প্রাক্তন তারকা স্টিভন ডায়াস বলেছেন, ‘‘যে কোনও মূল্যে ম্যাচটা জিতে মরসুম শেষ করতে চাই আমরা।’’
নর্থ ইস্ট ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে আগের ম্যাচে ১-২ হেরেছিল লাল-হলুদ। চোটের কারণে অ্যান্টনি পিলকিংটন ও ব্রাইট খেলতে পারেননি। আত্মঘাতী গোল করেছিলেন ডিফেন্ডার সার্থক গলুই। তিনিই আবার গোল করে ব্যবধান কমান। ওড়িশার বিরুদ্ধে দলে ফেরার সম্ভাবনা উজ্জ্বল ব্রাইট ও পিলকিংটনের। তবে কার্ড সমস্যায় ফাওলার পাবেন না স্কট নেভিল ও রাজু গায়কোয়াড়কে।
মানরক্ষার ম্যাচে কম সুযোগ পাওয়া ফুটবলারদের খেলানোর কথা যে ভাবছেন না, স্পষ্ট জানিয়েছেন ফাওলার। বললেন, ‘‘সেরা দলই নামাব। এই ম্যাচ থেকে আমাদের কিছু পাওয়ার নেই ঠিকই। তার জন্য নিয়মিত খেলা ফুটবলারদের বিশ্রাম দেওয়ার কোনও পরিকল্পনা নেই। কারণ, যে কোনও মূল্যে এই ম্যাচটা জিততে চাই।’’
লিগ টেবলে সব চেয়ে নীচে থাকা ওড়িশা এখনও পর্যন্ত মাত্র একটি ম্যাচই জিতেছে। ফাওলার তবুও বলছেন, ‘‘কঠিন ম্যাচ। ওড়িশার কাছেও এই ম্যাচটা সম্মান রক্ষার লড়াই।’’ প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে লক্ষ্য কী? ফাওলার বললেন, ‘‘রিজার্ভ বেঞ্চে বসতে না পারাটা যন্ত্রণার। ভাল লাগছে ফিরে এসে। এ বার জিততে চাই।’’
লাল-হলুদে অভিষেকের মরসুম স্মরণীয় না হলেও হাল ছাড়তে রাজি নন লিভারপুল কিংবদন্তি। বললেন, ‘‘আগেও বলেছি, আই লিগে খেলার জন্য এই দল গড়া হয়েছিল। সেখানে আমরা মাত্র দু’সপ্তাহ অনুশীলন করেই আইএসএলে খেলতে নেমেছিলাম। কাউকে দোষ দিতে চাই না। বেশ কয়েকটি ম্যাচে দল দারুণ খেলেছে। হয়তো আরও ভাল ফল করতে পারতাম। আমার কাছে এগুলোই ইতিবাচক। তবে কিছু কিছু ঘটনা খুবই হতাশ করেছে।’’ সমালোচকদের জবাব দিতে ছাড়েননি লাল-হলুদ কোচ। বললেন, ‘‘অনেকেই এই দলটার থেকে অনেক কিছু প্রত্যাশা করেছিল। কিন্তু গত কয়েক মরসুমে আই লিগে কি ইস্টবেঙ্গল চ্যাম্পিয়ন হতে পেরেছে? শেষ দু’টি মরসুমে দ্বিতীয় স্থানে ছিল। সেই দলটাই মাত্র দু’সপ্তাহ অনুশীলন করে কী ভাবে ভাল ফল করতে পারে আমার অন্তত জানা নেই।’’