রবি ফাওলার। ছবি-ভিডিয়ো থেকে।
৫ ম্যাচ খেলা হয়ে গেল। অথচ জয় এখনও অধরা ইস্টবেঙ্গলের। গতকাল হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে এগিয়ে থেকে ম্যাচ হেরেছে ইস্টবেঙ্গল। রবি ফাওলারের ছেলেদের হতশ্রী পারফরম্যান্স দেখে তিন প্রধানে খেলা ডগলাস দ্য সিলভা সোশ্যাল সাইটে বলেছেন, “এই বিদেশি ডিফেন্ডারদের খেলা দেখলে আমার জার্সি পরে নেমে যেতে ইচ্ছা করে। জোর দিয়ে বলতে পারি, ওদের থেকে আমি এখনও ভাল খেলব।”
ডগলাসের আক্রমণের কেন্দ্রে লাল-হলুদের রাইট ব্যাক স্কট নেভিল। হায়দরাবাদের লিস্টন কোলাসো এ লিগে খেলা ডিফেন্ডারকে নিয়ে ছেলেখেলা করেন। সেই দৃশ্য দেখার পরে সমর্থকরাও নেভিলের সমালোচনা শুরু করেন। দল নিয়ে হতাশ ফাওলারকে গতকাল বলতে শোনা গিয়েছে, “মনে হচ্ছে এই দলটা আই লিগের কথা ভেবে করা হয়েছিল, তার পরে আমরা আইএসএলে খেলার সুযোগ পাই। এ বার খেলোয়াড়দেরই প্রমাণ করতে হবে, তারা আইএসএলে খেলার যোগ্য।”
লিভারপুল কিংবদন্তি আগেও তাঁর দলের ফুটবলারদের সর্বসমক্ষে সমালোচনা করেছিলেন। হায়দরাবাদারে কাছে হারের পরেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তিই ঘটে। ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন ফুটবলার সন্দীপ নন্দী দলের এই বিপর্যয়ের জন্য কোচকেই দায়ী করছেন। আশিয়ান কাপ জয়ী গোলকিপার বলছেন, “ভাল মানের স্বদেশি ফুটবলার পাওয়া যাবে না, এটা জানাই ছিল। কারণ সব দেশীয় প্লেয়াররা আগেই সই করে ফেলেছিল অন্য ক্লাবে। এই পরিস্থিতিতে দলটাকে টানতে পারত বিদেশি ফুটবলাররা। বিদেশিদের পছন্দ করে নিয়ে এসেছেন তো কোচ স্বয়ং। স্পনসরও কোচের উপরেই সবটা ছেড়ে দিয়েছিল। তা হলে ফাওলার কাদের আনলেন? একজন প্লেয়ারকে দেখেও তো মন ভরছে না।”
আরও পড়ুন: পন্থ নয়, প্রথম এগারোয় ঋদ্ধি, আছেন পৃথ্বী, উমেশও, দল জানিয়ে দিল ভারত
স্কট নেভিলের পারফরম্যান্সে চূড়ান্ত হতাশ সন্দীপ। লিস্টন কোলাসো আউটসাইড-ইনসাইড ডজে স্কট নেভিলকে বিভ্রান্ত করে দিয়ে হলিচরণকে দিয়ে গোল করান। সন্দীপ বলছেন, “সাইড ব্যাক কীভাবে দাঁড়ায় সেটাই ভাল করে জানে না স্কট নেভিল। লিস্টন ওকে কাটাচ্ছে যখন, তখন লাট্টুর মতো ঘুরল স্কট।”
২৬ মিনিটে জাক মাঘোমার গোলে এগিয়ে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। বিরতির পরেই ছবি বদলে যায়। ৫৬ মিনিটে জোড়া গোল করেন স্যান্টানা। বহুযুদ্ধের সৈনিক সন্দীপ বলছিলেন, “কোচের স্ট্র্যাটেজি ঠিক নেই। এই দলের ডিফেন্স দুর্বল। একটা ডিফেন্সিভ ব্লকার নেই। তার উপরে দল যখন ১-০ গোলে এগিয়ে রয়েছে, বিরতির পরে প্রথম ১০-১৫ মিনিট কমপ্যাক্ট ফুটবল খেলা উচিত ছিল। প্রতিপক্ষ যেন জায়গা না পায়। অথচ ইস্টবেঙ্গল ফুটবলাররা জায়গা দিয়ে দিল হায়দরাবাদকে। বড় ফুটবলার হলে ভাল কোচ হওয়া যায় না। ফাওলারকে দেখে এটাই বলতে হচ্ছে।”
ফুটবলে স্পেস আর টাইম একই। সময় দিয়ে দিলে বা খেলার জায়গা দিলে একজন বিপজ্জনক হয়ে উঠতেই পারেন। সেটাই দেখা গেল। বিরতির পরে পজেশনাল ফুটবল খেলে বল নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতেই পারত ইস্টবেঙ্গল। হায়দরাবাদ আক্রমণে উঠলে নিজেদের পেনাল্টি বক্স থেকে হাফলাইনে পায়ের জঙ্গল তুলে দিতেই পারতেন ফাওলার। সেই রাস্তায় তিনি হাঁটেননি। হায়দরাবাদের তরুণ ফুটবলাররা ইস্টবেঙ্গলের ডিফেন্সে উল্টে কাঁপুনি ধরিয়ে দিয়ে তিন-তিনটে গোল করেন। ভাগ্য ভাল লাল-হলুদের। দেবজিৎ মজুমদার পেনাল্টি বাঁচান। একাধিক বার তিনি ত্রাতা হয়ে ধরা দেন। না হলে গতকাল আরও বেশি গোল হজম করতে হতো ইস্টবেঙ্গলকে। আরও লজ্জায় মুখ ঢাকতে হতো কলকাতার শতাব্দী ছোঁয়া ক্লাবকে।