মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আই লিগের ডার্বি ম্যাচ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনেই হয়ে গেল একপ্রস্থ নাটক।
ক্রীড়াসূচি অনুযায়ী রবিবার আই লিগের ফিরতি ডার্বি। সেই ম্যাচ কি দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে খেলা হবে? এই প্রশ্নের সমাধান খুঁজতে মুখ্যমন্ত্রী দুই প্রধানের কর্তাদের কাছে ডার্বি ম্যাচ পিছিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন। তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সামনেই তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়ে গেল দুই প্রধানের শীর্ষকর্তাদের মধ্যে।
করোনা-আবহে ইস্টবেঙ্গল শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার ডার্বি ম্যাচ পিছিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেন। নিজের বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এই একটা ম্যাচের দিকেই তাকিয়ে থাকে বাংলার আপামর ফুটবলপ্রেমী। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ম্যাচটা কয়েক দিন পিছিয়ে দেওয়া হোক।’’
আরও পড়ুন: করোনার জেরে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত আইপিএল স্থগিত রাখার ঘোষণা বোর্ডের
মোহনবাগান সচিব সৃঞ্জয় বসু মানতে চাননি সেই যুক্তি। মুখ্যমন্ত্রীর সামনে ইস্টবেঙ্গল কর্তার যুক্তিকে খণ্ডন করে বলেন, ‘‘আমরা আই লিগ চ্যাম্পিয়ন আগেই হয়ে গিয়েছি। এই রকম পরিস্থিতিতে আমাদের ফুটবলারদের মোটিভেশনে সমস্যা দেখা যেতেই পারে। রবিবারের ম্যাচ যদি পিছিয়ে যায়, তা হলে আমাদের হাতে সরকারি ভাবে আই লিগ ট্রফি তুলে দেওয়ার সময়ও পিছিয়ে যাবে। তা ছাড়া ফেডারেশন আগেই আই লিগ শেষ করে দিতে চাইছে।’’
করোনা-আতঙ্ক যেভাবে ছড়িয়ে পড়েছে, সেই পরিস্থিতিতে কয়েকদিন ডার্বি পিছিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেন মমতা। মোহনবাগান সচিব তখন ইডেনের ওয়ানডে প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, ‘‘ইডেন গার্ডেন্সের ওয়ানডে ম্যাচ ফাঁকা স্টেডিয়ামে হচ্ছে। এখন সবকিছুই টেলিভিশনের মাধ্যমে আয় করা সম্ভব হয়। তা হলে ডার্বি ম্যাচ ফাঁকা স্টেডিয়ামে করাই যায়।’’
তখনও অবশ্য বোর্ডের ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ওয়ানডে ম্যাচ বাতিল করে দেওয়া হয়নি। পাল্টা যুক্তি দিয়ে ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষকর্তা বলেন, ‘‘ক্রিকেট বা আইপিএল বেসরকারি চ্যানেলে দেখানো হয়। কিন্তু ডার্বি দেখানো হবে না সেই ধরনের কোনও চ্যানেলে। ফলে ম্যাচটা যদি পিছিয়ে দেওয়া হয়, তা হলে সব দিক থেকেই সুবিধা।’’
মমতা উভয়পক্ষের কথা শুনে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের সহ সভাপতি সুব্রত দত্তর কাছে বিষয়টা জানতে চান। সুব্রতবাবু জানান, ফেডারেশন সভাপতি প্রফুল্ল পটেল এ দিনই জানিয়েছেন, আই লিগের বাকি সব ম্যাচ দর্শকহীন গ্যালারিতে হবে। এ বিষয়ে তিনি টুইট করেছেন বলেও জানান সুব্রত।
মুখ্যমন্ত্রী তাঁর কাছে জানতে চান, ম্যাচটা পিছিয়ে দেওয়া সম্ভব কি না। মমতা প্রস্তাব দেন, আপাতত কয়েকদিন পিছিয়ে দেওয়া হোক ম্যাচ, পরে পরিস্থিতির বিচার করে জানিয়ে দেওয়া হবে ডার্বি কবে হবে। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য শোনার পরে সুব্রতবাবু ফেডারেশন সভাপতিকে ফোনে ধরার চেষ্টা করেন। কিন্তু তিনি সংসদে থাকায় ফোন ধরতে পারেননি। সুব্রতবাবু ফেডারেশন সচিব কুশল দাসকে ফেডারেশন সভাপতির সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। কিন্তু এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এআইএফএফ-এর তরফ থেকে নতুন কোনও তথ্য দেওয়া হয়নি।
ফলে ডার্বি পিছোচ্ছে কি না সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানা গেল না ৪৮ ঘণ্টা আগেও। পুরো বিষয়টাই আপাতত রইল ফেডারেশন সভাপতির কোর্টে।