বিধ্বংসী: সেঞ্চুরির পরে উৎসব ওয়ার্নারের। ছবি: এএফপি
একেই বলে আইপিএল ক্রিকেট!
নেথান কুল্টার নাইল প্রথম ওভারে বোলিং শুরু করার পরে রবিবার উপ্পলে ঝড়টা যে আসছে কে জানত! প্রথম দু’চার বলের পরেই স্টেডিয়াম জুড়ে শুধু ওয়ার্নার, ওয়ার্নার আর ওয়ার্নার।
অবিশ্বাস্য! কী ব্যাটটাই না করল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ক্যাপ্টেন! এ বারের আইপিএলে আমার দেখা সেরা ব্যাটিং। কেন বলছি কথাটা সেটা আরও পরিষ্কার হবে ওয়ার্নার যখন সেঞ্চুরি করছে তখন ওদের আর এক ওপেনার শিখর ধবন কত রানে দাঁড়িয়ে ছিল সেটা দেখলেই। একটা ছেলে ৪৩ বলে সেঞ্চুরি করছে আর উল্টো দিকে দাঁড়ানো ধবনের রান তখন ২৩ বলে ২০!
সুনীল নারাইন, উমেশ যাদব, কুল্টার নাইল, ক্রিস ওকস কাউকে রেয়াত করেনি ওয়ার্নার। পাওয়ার প্লে-তে ছ’জন বোলারকে ব্যবহার করেও গম্ভীর রুখতে পারেনি ওয়ার্নার ঝড়। গোটা ইনিংসে দশটা বাউন্ডারি আর আটটা ছক্কা!
তবু ওয়ার্নারকে আটকাতে পারত কেকেআর। কিন্তু সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেনি নাইটরা। আগেও বলেছি কেকেআরের ক্যাচিং জঘন্য। এই জায়গাটা যদি শোধরানো না যায় তা হলে বিপদে পড়তে হতে পারে কেকেআরকে। ইনিংসের গোড়ার দিকে ওয়ার্নারকে আউট করার একটা হাফ চান্স পেয়েছিল নাইটরা। দ্বিতীয় ওভারে উমেশ যাদবের বলে ওকস সুযোগটা কাজে লাগাতে পারল না। ক্যাচটা ওঠার পর ওকস যদি পিছনের দিকে না দৌড়ে সাইড অন দৌড়ত, তা হলে বলটা ওর চোখের সামনে থাকত। পরে শেল্ডন জ্যাকসনও তো যুবরাজের একটা ক্যাচ ফস্কাল।
কেকেআরের আরও একটা ট্যাকটিকাল ভুল হয়েছে। দু’জন বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান দেখে গম্ভীর প্রথমে ইউসুফ পাঠানকে এনেছিল আউট করতে সুবিধে হবে ভেবে। কিন্তু ইউসুফ তো স্পিনার নয়, পুশার। সেই সুযোগে ওয়ার্নার আরও আক্রমণাত্মক হয়ে আত্মবিশ্বাসটা পেয়ে গেল। নারাইন প্রথম ওভারে বল করতে এসে মার খেয়ে গেল বলে গম্ভীরের ওকে সরিয়ে কুলদীপ যাদবকে ঝড়ের মুখে ঠেলে দিয়ে লাভ হল কোথায়! নারাইন বরং ওর অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ওয়ার্নারের মিসহিটের সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করতে পারত।
আরও পড়ুন: সুপার ওভারে বুমরার ঠান্ডা মাথা মুগ্ধ করল
শেষ পর্যন্ত ওয়ার্নার যখন আউট হল ওর নামের পাশে ৫৯ বলে ১২৬ রানের ইনিংস লেখা। আইপিএলে ওর তিন নম্বর সেঞ্চুরি। সঙ্গে কেন উইলিয়ামসনের কথাও বলতে হবে। ২৫ বলে উইলিয়ামসন ঝোড়ো ৪০ রানটাই দুশো রান পার করিয়ে দিল ওদের।
সানরাইজার্সের যা বোলিং শক্তি স্কোরবোর্ডে দুশো রান থাকলে এমনিতেই বোলাররা বাড়তি আত্মবিশ্বাস পাবে। পেলও। নারাইন (১), গম্ভীর (১১) দু’জনেই গোড়াতেই আউট হয়ে যাওয়ায় আরও বিপদে পড়ে গেল নাইটরা। উথাপ্পা আর মণীশের জুটি ৭৮ রান যোগ করার পরে কেকেআরের জয়ের আশা কিছুটা উজ্জ্বল হলেও আস্কিং রেটের চাপের পাহাড়টা সামলানো সোজা ছিল না। এই চাপের সামনেই কেকেআর ব্যাটিং ভেঙে পড়ল ১৬১ রানে।
এই হার পয়েন্ট টেবলের শীর্ষে থাকা গম্ভীরদের হয়তো অতটা গায়ে লাগবে না। তবে উপ্পলের ভুলগুলো গম্ভীররা যত দ্রুত শুধরে নিতে পারে ততই মঙ্গল!