সৌরভ, পন্টিংরা কিছুতেই দিল্লির হাল ফেরাতে পারছেন না। ছবি: আইপিএল
আইপিএলে তাদের পাঁচ-পাঁচটা ম্যাচ হয়ে গেল। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের দল দিল্লি ক্যাপিটালসের জয় থেকে গেল অধরাই। শনিবার আরসিবির কাছে ২৩ রানে হেরে গেল দিল্লি। ঘরের মাঠে হোক বা বাইরের মাঠ, কোনও জায়গাতেই জয়ের রাস্তা খুঁজে পাচ্ছে না তারা। এ দিন আরও এক বার ব্যাটারদের ব্যর্থতা ডোবাল দলকে। আইপিএলের পয়েন্ট তালিকার সবার তলায় থাকল তারা। বেঙ্গালুরুর ১৭৪ রানের জবাবে দিল্লি থেমে গেল ১৫১ রানেই।
ঋষভ পন্থ না থাকায় গোটা দিল্লি দলটার মানসিকতাই যেন নড়ে গিয়েছে। দলে এমন কোনও ক্রিকেটার নেই যিনি বাকিদের অনুপ্রাণিত করতে পারেন। ডাগআউটে সৌরভ ছাড়াও রিকি পন্টিংয়ের মতো তারকা প্রাক্তন ক্রিকেটাররা বসে রয়েছেন। তাঁরাও উদ্বুদ্ধ করতে পারছেন না দলকে। প্রতিটি ম্যাচে একই ছবি। ব্যাটিংয়ে ধস এবং হার। চিত্রনাট্যের বদল হচ্ছেই না।
শনিবার দিল্লির সামনে লক্ষ্যমাত্রা ছিল মাত্র ১৭৫। চিন্নাস্বামীর মাঠে যা অনায়াসে তুলে নেওয়ার কথা। কিন্তু ব্যাটারদের ব্যর্থতায় সেটাও হল না। একা মণীশ পাণ্ডে অর্ধশতরান করলেন। বাকিরা কেউ কিছু করতে পারেননি। কেন যে প্রতিটি ম্যাচে পৃথ্বী শ-কে খেলিয়ে যাওয়া হচ্ছে তা সৌরভরাই বলতে পারবেন। রানের ধারেকাছে নেই তিনি।
রান তাড়া করতে নেমে এক সময় ২ রানে ৩ উইকেট পড়ে গিয়েছিল দিল্লির। টিকেছিলেন শুধু ডেভিড ওয়ার্নার। তিনিও এ দিন ১৯-এর বেশি করতে পারেননি। দিল্লির ইনিংসের মাঝামাঝিই বোঝা গিয়েছিল ম্যাচটা হারছে তারা।
এ দিকে, টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে বেঙ্গালুরুর শুরুটা যেমন হয়েছিল, শেষটা তেমন হয়নি। বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের উইকেট সাধারণত ব্যাটারদের স্বর্গরাজ্য। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুটাও তেমনই করেছিলেন বেঙ্গালুরুর দুই ওপেনার ফাফ ডুপ্লেসি এবং বিরাট কোহলি। কিন্তু মাঝের দিকে উইকেট পড়ে যাওয়া এবং রান তোলার গতি কমে যাওয়ার মূল্য চোকাতে হল তাদের। দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে প্রথমে ব্যাট করে ১৭৪-৬ রান তোলে তারা।
বেঙ্গালুরুর দুই ওপেনার দাপটের সঙ্গেই শুরু করেছিলেন। ফাফ ডুপ্লেসি এবং বিরাট কোহলি প্রায় প্রতি ম্যাচেই শুরুটা এমন করেন, যা বাকিদের উপর থেকে চাপ অনেকটা হাল্কা করে দেয়। এ দিনও সেটাই দেখা গেল। অনরিখ নোখিয়াকে দিয়ে শুরু করেছিল দিল্লি। প্রথম ওভারেই তিনি ১১ রান হজম করেন। পরের ওভারে অক্ষর পটেল পাঁচ রান দিলেও তৃতীয় ওভারে মুস্তাফিজুর রহমান এসেই দশ রান দেন।
পঞ্চম ওভারেও মিচেল মার্শকে দু’টি চার মেরে স্বাগত জানিয়েছিলেন ডুপ্লেসি। চালিয়ে খেলতে গিয়েই আউট হন। মিড উইকেটে আমন খানের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। বেঙ্গালুরু সমস্যায় পড়েনি। তিনে নেমে মহিপাল লোমরোর একটা দিক ধরে রেখেছিলেন। উল্টো দিক থেকে চালিয়ে খেলছিলেন কোহলি। ৩৩ বলে তাঁর অর্ধশতরান হয়ে যায়। তার পরেই অদ্ভুত ভাবে আউট হলেন প্রাক্তন অধিনায়ক।
১১তম ওভারে বল করতে এসে লোপ্পা দিয়েছিলেন ললিত যাদব। কোহলি অনায়াসে সেটি লেগ সাইডে চালাতে পারতেন। কিন্তু তিনি বুঝতে পারেননি বলের গতি। ক্যাচ তুলে দেন মিড উইকেটে। যশ ধুল তা তালুবন্দি করেন। এক বল আগেই ব্যাট বদলেছিলেন কোহলি। তা কাজে দিল না।
বেঙ্গালুরুর আর এক মারকুটে ব্যাটার গ্লেন ম্যাক্সওয়েলও চালিয়ে খেলা শুরু করেছিলেন। তিনটি ছক্কা মেরে চিন্নাস্বামীর জনতাকে চাঙ্গা করে দেন। কিন্তু কুলদীপের বলে ফিরতে হয় তাঁকে। পরের বলে কুলদীপ তুলে নেন দীনেশ কার্তিককেও। ওখানেই বেঙ্গালুরুর বড় রানের আশা শেষ হয়ে যায়। প্রথম ইনিংসেই মহিপালের বদলে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসাবে অনুজ রাওয়তকে নামায় বেঙ্গালুরু। ২২ বল খেলে অনুজের অবদান ১৫!