রাহুল ত্রিপাঠীর নামটা হঠাৎ যেন আকাশ থেকে খসে পড়ল। কুলদীপ যাদব-কে পর পর তিনটে ছয় মারা দেখতে দেখতে নিজেকে চিমটি কাটতে ইচ্ছে করছিল। বিশ্বাসই হচ্ছিল না, এই ছেলেটাকে প্রথম দু’টো ম্যাচে বসিয়ে রেখেছিল রাইজিং পুণে সুপারজায়ান্ট। আর তার পর যখন প্রথম খেলাল, মিডল অর্ডারে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিল।
যে টিমে স্টিভ স্মিথ, মহেন্দ্র সিংহ ধোনি, বেন স্টোকসের মতো ক্রিকেটার আছে, সেখানে রাহুল ত্রিপাঠীর নাম কে আর মনে রাখবে? নিলামের সময়ও ওর নামটা কেউ মাথায় রাখেনি। একেবারে শেষ রাউন্ডে এসে ওকে তুলে নেয় পুণে। হয়তো দামটা খুব সস্তা ছিল বলে। মাত্র ১০ লাখ। আর এখন দেখা যাচ্ছে শেষ আটটার মধ্যে সাতটা ম্যাচেই ত্রিপাঠী তিরিশ বা তার বেশি রান করেছে। পাওয়ার প্লে-তেও ওর চেয়ে বেশি রান কেউ করতে পারেনি। এমনকী ডেভিড ওয়ার্নারও নয়।
এখানেই শেষ নয়। গত মরসুমে জাতীয় টি-টোয়েন্টিতেও ত্রিপাঠী-কে দলে নেয়নি মহারাষ্ট্র। ওর সম্পর্কে সবার ধারণটা ছিল যে ত্রিপাঠী খুব টেকনিক্যালি নিখুঁত ব্যাটসম্যান। কিন্তু এ বারের আইপিএলে ওর স্ট্রাইক রেট বাকি ওপেনারদের পিছনে ফেলে দিয়েছে। তা সে ওয়ার্নার হোক, শিখর ধবন হোক বা গৌতম গম্ভীর। পাশাপাশি একটা কথা মনে রাখবেন, এই আইপিএলের আগে ত্রিপাঠী কিন্তু কখনও ওপেন করেনি!
আরও পড়ুন: নাইটদের প্রেরণা এখন সাফল্যের জোড়া পর্ব
প্রথমে সবাই ভেবেছিল ত্রিপাঠী শুধু অফ সাইডে ভাল শট খেলতে পারে। এখন ও দেখিয়ে দিচ্ছে অন সাইডেও কতটা সাবলীল। এমনকী উইকেটকিপারের মাথার ওপর দিয়ে তুলেও মেরে দিচ্ছে ছেলেটা। ইডেনের ইনিংসটায় দেখলাম, পর পর যখন উইকেট পড়ছে, তখন নিজের ইনিংসের গিয়ার বদলে ফেলল ও। নেথান কুল্টার নাইল-কে এমন মারল, যে গম্ভীর শেষ ওভারে আর অস্ট্রেলীয় পেসারকে বল দেওয়ার ভরসাই পেল না।
পুণের বাকি সব ব্যাটসম্যানের থেকে ভাল খেলছে ত্রিপাঠী। পুণে যে এখন প্লে-অফের কাছাকাছি চলে এসেছে, তার পিছনেও কিন্তু এই ব্যাটসম্যান। দেখা যাচ্ছে স্বল্প বিনিয়োগে ত্রিপাঠীর থেকে পুণের যা লাভ হচ্ছে, সে রকম লাভ করতে পারলে ওয়ারেন বাফেটও গর্ববোধ করতেন।