কারেনের সঙ্গে পঞ্জাবের জয়ের নায়ক শাহরুখ। ছবি: পিটিআই
আরও একটি রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ উপহার পেলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। উপহার দিল আইপিএল। শনিবারের টান টান উত্তেজনার ম্যাচে প্রীতি জিন্টার পঞ্জাব কিংসকে ২ উইকেটে জয় এনে দিলেন শাহরুখ খান। শেষ পর্যন্ত লড়াই করেও হেরে গেল লোকেশ রাহুলের লখনউ সুপার জায়ান্টস। রাহুলদের ৮ উইকেটে ১৫৯ রানের জবাবে ৩ বল বাকি থাকতে পঞ্জাব করল ৮ উইকেটে ১৬১।
পঞ্জাবের ইনিংসে বোঝা গেল অধিনায়ক শিখর ধাওয়ানের অনুপস্থিতি। চোটের জন্য তিনি শনিবারের ম্যাচ খেলতে পারেননি। পঞ্জাবকে নেতৃত্ব দিলেন স্যাম কারেন। তাতে অবশ্য জয় আটকাল না। জয়ের জন্য ১৬০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভাল হয়নি পঞ্জাবের। ১৭ রানেই ২ উইকেট হারায় তারা। ব্যর্থ দুই ওপেনার অথর্ব তাইডে (শূন্য) এবং প্রভশিমরন সিংহ (৪)। আইপিএলে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা যুধবীর সিংহ দুই ওপেনারকেই আউট করে পঞ্জাবকে ধাক্কা দিলেন শুরুতেই। এর পর দলের হাল ধরেন তিন নম্বরে নামা ম্যাথু শর্ট। তিনি করলেন ২২ বলে ৩৪ রান। মারলেন ৫টি চার এবং ১টি ছক্কা। চার নম্বরে নেমে হরপ্রীত সিংহ করলেন ২২ বলে ২১। বল হাতে ৩ উইকেট নিলেও ব্যাট হাতে ব্যর্থ কারেন। ৬ বলে ৬ রান করে সাজঘরে ফিরলেন এ দিনের পঞ্জাব অধিনায়ক। পঞ্জাবকে লড়াইয়ে রাখল সিকান্দার রাজার ইনিংস। যদিও সতীর্থদের থেকে তেমন সাহায্য পেলেন না জ়িম্বাবোয়ের অলরাউন্ডার। দায়িত্ব নিয়ে ব্যাট করলেন তিনি। তাঁর ব্যাট থেকে এল ৪১ বলে ৫৭ রান। ৪টি বাউন্ডারি এবং ৩টি ছক্কা মারলেন রাজা। শেষ পর্যন্ত পঞ্জাবকে জয় এনে দিলেন শাহরুখ খান। তিনি আট নম্বরে নেমে করলেন ১০ বলে অপরাজিত ২৩ রান। মারলেন ১টি চার এবং ২টি ছয়। রাজা আউট হওয়ার পর তিনিই ছিলেন প্রীতির দলের ভরসা। দলকে হতাশ করলেন না তিনি।
লখনউয়ের সফলতম বোলার রবি বিষ্ণোই ১৮ রানে ২ উইকেট নিলেন। ১৯ রানে ২ উইকেট যুধবীরের। মার্ক উড ৩৫ রান খরচ করে নিলেন ২ উইকেট। ১টি করে উইকেট পেয়েছেন কৃষ্ণাপ্পা গৌতম এবং ক্রণাল পাণ্ড্য।
শনিবার আবার চেনা ছন্দে রাহুল। তাঁর দাপুটে ব্যাটিংয়ের সুবাদে পঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে আগ্রাসী মেজাজে ইনিংস শুরু করে লখনউ। অন্য ওপেনার কাইল মেয়ার্স এবং তিন নম্বরে নামা দীপক হুডা আউট হওয়ার পরেও দায়িত্ব নিয়ে খেললেন লখনউ অধিনায়ক। এ বারের আইপিএলে প্রথম অর্ধশতরান করলেন রাহুল। মূলত তাঁর ইনিংসের উপর ভর করেই পঞ্জাবের বিরুদ্ধে লখনউ লড়াই করার মতো জায়গায় পৌঁছয়। রাহুলের ব্যাট থেকে এল ৫৬ বলে ৭৪ রান। মারলেন ৮টি চার এবং ১টি ছক্কা। প্রায় শেষ পর্যন্ত দলের ইনিংসকে টানলেন তিনি।
মেয়ার্স ভাল শুরু করলেও বড় রান পেলেন না। ২৩ বলে ২৯ রান করে আউট হয়ে গেলেন হরপ্রীত ব্রার বলে। মারলেন ১টি চার এবং ৩টি ছয়। তিন নম্বরে নামা দীপক (৩ বলে ২ রান) দলকে ভরসা দিতে পারলেন না। ৬২ রানে ২ উইকেট পড়ার পর অধিনায়কের সঙ্গে দলের ইনিংস গড়ার কাজ করলেন ক্রুণাল পাণ্ড্য। তিনি মূলত উইকেটের এক দিক আগলে রাখার দায়িত্ব পালন করলেন। যদিও বড় রান করতে পারলেন না তিনি। ১৭ বলে ১৮ রান করে আউট হলেন কাগিসো রাবাডার বলে। পাঁচ নম্বরে নামা নিকোলাস পুরানকে (শূন্য) প্রথম বলেই সাজঘরে ফেরালেন রাবাডা। পর পর ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় লখনউ। কমে যায় রান তোলার গতি। ১১১ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর রাহুলের সঙ্গে জুটি বাধেন অস্ট্রেলীয় অলরাউন্ডার মার্কাস স্টোইনিস। তিনিও সাফল্য পেলেন না পঞ্জাবের বিরুদ্ধে। ১১ বলে ১৫ রান করলেন তিনি। ধারাবাহিক ভাবে উইকেট হারানোয় লখনউ রান তোলার গতি কোনও সময়ই তেমন বাড়াতে পারেনি।
কারেন টস জিতে প্রথম ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন। সাত জন বোলারকে ব্যবহার করলেন তিনি। কোনও বোলারের বিরুদ্ধে থিতু হওয়ার সুযোগ দিলেন না লখনউয়ের ব্যাটারদের। পঞ্জাবের সফলতম বোলার কারেন ৩১ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিলেন। ৩৪ রানে ২ উইকেট রাবাডার। বাউন্ডারি লাইনে দুরন্ত ফিল্ডিং করলেন শাহরুখ। দু’টি ভাল ক্যাচ নেন তিনি।