ঘরের মাঠে ব্যর্থ কোহলির অর্ধশতরান। দিল্লির কাছে হার বেঙ্গালুরুর। ছবি: আইপিএল।
ঘরের মাঠে অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলতে গিয়ে খোশ মেজাজে ছিলেন বিরাট কোহলি। টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের অধিনায়ক ফ্যাফ ডুপ্লেসি। দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে সেই সুযোগের পূর্ণ ব্যবহার করলেন কোহলি। তাতে অবশ্য লাভ হল না। নিজের শহর থেকে হেরে ফিরতে হল তাঁকে। বেঙ্গালুরুর ৪ উইকেটে ১৮১ রানের জবাবে দিল্লি ক্যাপিটালস ১৬.৪ ওভারে তুলল ৩ উইকেটে ১৮৭ রান। শনিবারের জয়ের ফলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের মতো সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের দিল্লিরও ১০টি ম্যাচ খেলে হল ১০ পয়েন্ট।
কোহলিদের হারের যন্ত্রণায় নুনের ছিটে দিয়ে দিল ফিল সল্টের অনবদ্য ইনিংস। বেঙ্গালুরুর বোলারদের প্রায় ক্লাব স্তরে নামিয়ে আনলেন ইংল্যান্ডের উইকেটরক্ষক-ব্যাটার। তাঁর দাপটে দিল্লি জয় সম্ভব হল না বেঙ্গালুরুর। ওপেন করতে নেমে দিল্লির অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার ১৪ বলে ২২ রান করে ফিরে গেলেও উইকেটের অন্য প্রান্তে রোখা গেল না সল্টকে। তিন নম্বরে নেমে মিচেল মার্শও বড় রান পেলেন না ১৭ বলে ২৬ রান করলেন অসি অলরাউন্ডার।
চার নম্বরে নেমে রিলি রুসো সঙ্গ দিলেন সল্টকে। কার্যত ইংরেজ ক্রিকেটার একাই ২ পয়েন্ট এনে দিলেন দলকে। দিল্লিকে জয়ের দরজায় পৌঁছে দিয়েও নিশ্চিত শতরান মাঠে ফেলে এলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত সল্টের ব্যাট থেকে এল ৪৫ বলে ৮৭ রান। নিজের ইনিংসটি সাজালেন ৮টি চার এবং ৬টি ছক্কা দিয়ে। রুসো অপরাজিত থাকলেন ২২ বলে ৩৫ রান করে। ১টি চার এবং ৩টি ছয় মারলেন তিনি। ৩ বলে ৮ রান করে অপরাজিত থাকলেন অক্ষর পটেল। বেঙ্গালুরুর কোনও বোলারই দিল্লির ২২ গজে নজর কাড়তে পারলে না। জস হ্যাজলউড ১ উইকেট পেলেন ২৯ রান খরচ করে। ৩২ রানে ১ উইকেট হর্ষল পটেলের। ৩৩ রানে ১ উইকেট কর্ণ শর্মার।
ওপেন করতে নেমে আগ্রাসী মেজাজে শুরু করেছিলেন বেঙ্গালুরু অধিনায়ক। যদিও ডুপ্লেসির দাপুটে ইনিংস শেষ হল ৩২ বলে ৪৫ রানে। মার্শের বলে আউট হওয়ার আগে মারলেন ৫টি চার এবং ১টি ছয়। তিন নম্বরে নেমে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল রান পেলেন না। জাতীয় দলের সতীর্থ মার্শ তাঁকে প্রথম বলেই আউট করে দিলেন।
চেনা উইকেটের এক দিক আগলে রেখেছিলেন কোহলি। নিজের নামাঙ্কিত সাজঘর থেকে ব্যাট করতে নামার আগে ছোটবেলার কোচ রাজকুমার শর্মার পায়ে হাত দিয়ে প্রমাণ করেন কোহলি। গুরুর আশীর্বাদ নিয়ে কোহলি করলেন ৪৬ বলে ৫৫ রান। ঘরের মাঠে ছয় মারতে পারলেন না একটাও। গ্যালারির প্রায় অবিরাম কোহলি-কোহলি চিৎকারের জবাবে মারলেন ৫টি চার। একই সঙ্গে প্রথম ক্রিকেটার হিসাবে আইপিএলে ৭০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করলেন ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক। চার নম্বরে নেমে কোহলির সঙ্গে জুটি তৈরি করলেন মাহিপাল লোমরোর। তাঁদের জুটি বেঙ্গালুরুকে পৌঁছে দিল লড়াই করার মতো জায়গায়। কোহলি আউট হওয়ার পর দাপুটে ব্যাটিং শুরু করেন লোমরোর। তিনি করলেন ২৯ বলে ৫৪ রান। অপরাজিত ইনিংসে মারলেন ৬টি চার এবং ৩টি ছয়। শেষ পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে ২২ গজে ছিলেন অনুজ রাওয়াত (৮)।
বেঙ্গালুরুর রান আরও কিছুটা বেশি হতে পারত। কিন্তু গত বছরের ছন্দে দেখা যাচ্ছে না দীনেশ কার্তিককে। শনিবারও স্লগ ওভারে ঝড় তুললে ব্যর্থ কলকাতা নাইট রাইডার্সের প্রাক্তন অধিনায়ক। ৯ বলে ১১ রান করলেন তিনি। দিল্লির কোনও বোলারই তেমন সুবিধা করতে পারলেন না। ওয়ার্নারের দলের সফলতম বোলার মার্শ ২১ রানে ২ উইকেট নিলেন। ৩০ রানে ১ উইকেট বাংলার মুকেশ কুমারের। ৪৫ রান দিয়ে ১ উইকেট পেলেন খলিল আহমেদ।