বিরাট কোহলী। ফাইল ছবি
আইপিএলে খারাপ ছন্দ চলছে বিরাট কোহলীর। বড় রান কিছুতেই আসছে না তাঁর ব্যাটে। রবি শাস্ত্রী পরামর্শ দিয়েছেন যে, কোহলীর আইপিএল থেকে নাম তুলে নেওয়া উচিত। এতে তিনি অন্তত কিছুটা বিশ্রাম পাবেন এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নামার আগে অনেক তরতাজা হয়ে উঠতে পারবেন। দেশের তো তাতে লাভ হবেই, ব্যক্তিগত ভাবে কোহলীর নিজেরও অনেক লাভ হবে।
কিন্তু চাইলেই কি কোহলী বিশ্রাম নিতে পারেন? সেই সুবিধা কি রয়েছে? কী সিদ্ধান্ত নিতে পারেন কোহলী? উত্তর খুঁজতে গিয়ে তিনটি কারণ খুঁজল আনন্দবাজার অনলাইন।
বোর্ডের অলিখিত নির্দেশ: আইপিএল ক্রিকেটবিশ্বের সবচেয়ে বড় ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ। বিশ্বের তাবড় তাবড় ক্রিকেটাররা এখানে খেলতে আসেন। ভারতীয় ক্রিকেটারদের কাছেও একমাত্র ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ বলতে রয়েছে আইপিএলই। কারণ তাদের অন্যান্য দেশে লিগ খেলতে যাওয়ার উপায় নেই। বোর্ড সেই অনুমতি দেয় না। সে কারণেই বোর্ডের একটা অলিখিত নির্দেশ ক্রিকেটারদের উপর রয়েছে যে, চোট না পেলেও যতটা পারা যায় আইপিএল খেলতেই হবে। মানসিক স্বাস্থ্য বা টেকনিকে উন্নতি করতে বিশ্রাম নেওয়া — এই ধরনের বিষয়গুলিকে খুব একটা আমল দেওয়া হয় না। কোনও ক্রিকেটার চোট পেলে আলাদা ব্যাপার। না হলে বোর্ড চায়, ভারতের সমস্ত বড় ক্রিকেটারই খেলুক এই প্রতিযোগিতায়।
ফ্র্যাঞ্চাইজির চাপ: কোহলী-রোহিতের মতো ক্রিকেটার যে কোনও ফ্র্যাঞ্চাইজির কাছেই একটা বড় নাম। অনেক আশা করে তাঁদের নেওয়া হয়। ফলে এ ধরনের ক্রিকেটাররা যদি স্রেফ ক্লান্তির কারণে বিশ্রাম নেন, তা হলে বড় ক্ষতি হতে পারে সংশ্লিষ্ট ফ্র্যাঞ্চাজির। তাঁদের বাজারদরও কমতে পারে এই কারণে। ফলে কোনও ফ্র্যাঞ্চাইজিই চায় না এই ধরনের ক্রিকেটারদের মরসুমের মাঝপথে হারাতে। তাই এই দায়বদ্ধতা থেকেও খেলা চালিয়ে যেতে হয় কোহলীদের। এ প্রসঙ্গে একটি উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। ২০২০ সালে চোটের কারণে অস্ট্রেলিয়া সফর থেকে রোহিতকে বাদ দেওয়া হয়। কিন্তু সেই খবর প্রকাশ্যে আসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে রোহিতকে দেখা যায় মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে নামতে। সমর্থকরা তখনই প্রশ্ন করেন, তা হলে আইপিএল এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে দেশের হয়ে বিশ্রাম নেওয়া গেলেও এই প্রতিযোগিতা থেকে বিশ্রাম নেওয়া যায় না?
স্পনসরদের প্রতি দায়বদ্ধতা: কোহলীর সঙ্গে চুক্তি রয়েছে একাধিক বিশ্ববিখ্যাত সংস্থার। বছরে বিজ্ঞাপন এবং স্পনসরশিপ বাবদ কোটি কোটি টাকা আয় করেন তিনি। যে কোনও বড় মাপের ক্রিকেটারই কমবেশি স্পনসরদের সঙ্গে যুক্ত। তাঁরা না খেলা মানে স্পনসরদের প্রতিনিধিত্ব করারও কেউ থাকল না। ফলে কোনও স্পনসরই সেটা মেনে নেবে না। যে কারণে ইচ্ছে না থাকলেও অনেক সময় কোহলীদের মাঠে নামতে হয়। স্রেফ স্পনসরের প্রতি তাঁদের দায়বদ্ধতার কারণে।