সময়টা ভাল যাচ্ছে না সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের। আইপিএলে আরও একটি হারের সাক্ষী থাকলেন তিনি। ছবি: আইপিএল
চেন্নাইয়ের পরে এ বার দিল্লি জয় করল গুজরাত টাইটান্স। প্রথম ম্যাচে ঘরের মাঠে জিতেছিলেন হার্দিক পাণ্ড্যরা। এ বার অ্যাওয়ে ম্যাচ জিতলেন তাঁরা। প্রথমে বোলারদের দাপটে দিল্লিকে ১৬২ রান আটকে রাখল গুজরাত। ৩টি করে উইকেট নিলেন মহম্মদ শামি ও রশিদ খান। পরে ব্যাট করতে নেমে কিছুটা চাপে পড়লেও শেষ পর্যন্ত নিজেদের স্নায়ুর চাপ ধরে রাখলেন গুজরাত ব্যাটাররা। ৬ উইকেটে ম্যাচ জিতলেন তাঁরা। আরও একটি ম্যাচ হারতে হল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের দিল্লিকে।
গাড়ি দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার পরে এই প্রথম সবার সামনে এলেন দিল্লির অধিনায়ক ঋষভ পন্থ। দিল্লি-গুজরাত ম্যাচ শুরু হওয়ার পরেই গ্যালারিতে দেখা যায় তাঁকে। হাতে ক্রাচ নিয়ে এসেছিলেন পন্থ। তাঁকে দেখে উদ্বেল হয়ে ওঠেন দিল্লির দর্শকরা। কিন্তু শেষে মুখে হাসি নেই ঋষভের। কারণ, অধিনায়কের সামনে ম্যাচ হেরে মাঠ ছাড়লেন দিল্লির ক্রিকেটাররা।
টসে জিতে দিল্লিকে ব্যাট করতে পাঠান হার্দিক। শুরুটা ভাল হয়নি দিল্লির। মহম্মদ শামির পেস সমস্যায় ফেলছিল ওয়ার্নারদের। কোনও বল বাইরে যাচ্ছিল। কোনও বল ভিতরে ঢুকে আসছিল। বুঝতে পারছিলেন না ওয়ার্নার। শামির প্রথম বলই ওয়ার্নারের ব্যাটের পাশ দিয়ে উইকেট ছুঁয়ে বেরিয়ে যায়। কিন্তু বেল পড়েনি বা আলো জ্বলেনি। তার ফলে বেঁচে যান ওয়ার্নার।
তবে অপর ওপেনার পৃথ্বী শ ভাল খেলতে পারেননি। ৭ রানে তাঁকে আউট করেন শামি। মিচেল মার্শকে ৪ রানের মাথায় সাজঘরে ফেরান শামি। ২ উইকেট পড়ার পরে ওয়ার্নারের সঙ্গে জুটি বাঁধেন সরফরাজ় খান। ওয়ার্নার ভালই খেলছিলেন। কিন্তু আলজারি জোসেফ বল করতে এসে এক ওভারে খেলার ছবি বদলে দিলেন। ৩৭ রানের মাথায় ওয়ার্নারকে আউট করলেন তিনি। পরের বলেই জোসেফের বাউন্সার বুঝতে না পেরে আউট হলেন রিলি রুসো।
পর পর উইকেট পড়তে থাকায় রানের গতি কমে যায়। সরফরাজ় খুব ধীরে খেলছিলে। বাধ্য হয়ে বড় শট খেলার চেষ্টা করেন এই ম্যাচে অভিষেক হওয়া অভিষেক পোড়েল। ২০ রান করে রশিদের বলে আউট হন তিনি। সরফরাজ়কেও ৩০ রানের মাথায় আউট করেন রশিদ।
শেষ দিকে কয়েকটি বড় শট খেলে দিল্লির রান ১৫০ পার করেন অক্ষর পটেল। ৩৬ রান করে আউট হন তিনি। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৬২ রান করে দিল্লি।
গুজরাতের ইনিংস ভাল শুরু করেন ঋদ্ধিমান সাহা। প্রথম ওভারেই ১৪ রান করেন তিনি। কিন্তু আনরিখ নোখিয়ের পেস বুঝতে না পেরে বোল্ড হয়ে যান তিনি। শুভমন গিল এই ম্যাচে রান পাননি। তিনিও ১৪ রান করে আউট হন। হার্দিক ৫ রান করে আউট হয়ে গেলে চাপে পড়ে যায় গুজরাত।
সেখান থেকে দলকে টেনে তোলেন সাই সুদর্শন ও ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসাবে খেলতে নামা বিজয় শঙ্কর। দু’জনে বুদ্ধি করে খেলছিলেন। দৌড়ে রান নেওয়ার পাশাপাশি সুযোগ পেলেই বড় শট মারছিলেন। ধীরে ধীরে লক্ষ্যের দিকে এগোচ্ছিলেন দুই ভারতীয় ব্যাটার। ৫০ রানের জুটি বাঁধেন তাঁরা। ঠিক যখন মনে হচ্ছে, এই দুই ব্যাটার গুজরাতকে জিতিয়ে দেবে তখনই মার্শের বলে ২৯ রান করে আউট হন শঙ্কর।
যদিও তাতে জিততে খুব একটা সমস্যা হয়নি গুজরাতের। সুদর্শনের সঙ্গে মিলে দলকে জয়ে নিয়ে যান ডেভিড মিলার। মুকেশ কুমারের এক ওভারে দু’টি ছক্কা ও একটি চার মেরে খেলা নিজেদের হাতে নিয়ে নেন মিলার। রান তাড়া করতে নেমে নিজের অর্ধশতরান পূর্ণ করেন সুদর্শন। আরও এক জন ম্যাচ উইনার পেল গুজরাত। শেষ পর্যন্ত ১১ বল বাকি থাকতে ম্যাচ জিতে যান হার্দিকরা। সুদর্শন ৬২ ও মিলার ৩১ রান করে অপরাজিত থাকেন।