ইডেনের বাইশ গজের চরিত্র বদল দেখে যেমন অনেকেই অবাক হয়েছেন, তেমনই অবাক করেছে বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইশ গজও। কোথায় সেই ব্যাটসম্যানদের স্বর্গ, আর কোথায় এই উইকেট, যেখানে ব্যাটসম্যানরা স্ট্রোক নিতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন।
গত বার আইপিএলে পাঁচবার দুশো বা তার বেশি রানের স্কোর হয়েছিল এখানে। রান তাড়া করে ১৮৫ থেকে ১৯০ রানেও পৌঁছে গিয়েছিলেন ব্যাটসম্যানরা। কিন্তু এ বার রাহুল দ্রাবিড়ের শহরে প্রতি ম্যচেই রানের খরা। আগে ব্যাট করে সবচেয়ে বেশি ১৬১ রান তুলেছে রাইজিং পুণে সুপারজায়ান্ট। আর রান তাড়া করতে নেমে সবচেয়ে বেশি তুলেছে দিল্লি ডেয়ারডেভিলস, ১৪২।
সদ্য নতুন করে এই মাঠের আউটফিল্ড তৈরি হওয়ায় তার গতি যথেষ্ট। অথচ বড় রান তুলতে বা ছোট রান তাড়া করতে ব্যাটসম্যানদের কেন কালঘাম ছুটে যাচ্ছে, এটাই বড় প্রশ্ন।
কেন? পিচ কিউরেটর, বড়কর্তাদেরও মুখে কুলুপ। শোনা গেল উইকেট নিয়ে না কি যথেষ্ট অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন কোহালি ও আরসিবি-র ম্যানেজমেন্ট।
আরও পড়ুন: ওপেন করতে এসে ম্যাচ নিয়ন্ত্রণ করুক গম্ভীর
কিন্তু এই রানখরার রহস্য কী? আসলে গত বছর নতুন উইকেট তৈরির কথা ছিল এখানে। তা না করে নাকি এখানকার পিচের মাটির সাত শতাংশ ঘনত্ব কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। যাকে বলে পিচের প্রোফাইল কমিয়ে দেওয়া। তখন তাঁরা বুঝতে পারেননি এ বছর এখানে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি গরম পড়বে ও কম আর্দ্রতা ভঙ্গুর করে তুলবে উইকেটকে। পিচের সঙ্গে যুক্ত কর্নাটক ক্রিকেট সংস্থার এক কর্তাই শোনালেন এই কথা। সোমবার রাত ন’টা নাগাদই তাপমাত্রা ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাও সন্ধ্যার ঝড়-বৃষ্টির পরে।
তাই বুধবার সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে যে উইকেট পেতে চলেছেন গৌতম গম্ভীররা, তাতে বেশি রান নেই। তবে স্পিনারদের বন্ধু হয়ে উঠতে পারে এই পিচ। বুধবার কেকেআরের বড় বোলিং অস্ত্র হয়ে উঠতে পারেন সুনীল নারাইন, কুলদীপ যাদব, পীযূষ চাওলারা। গম্ভীর, উথাপ্পা, ইউসুফরা বোর্ডে বড় রান না পেলেও এই স্পিনারদের দাপট বিপদে ফেলতে পারে ডেভিড ওয়ার্নার, শিখর ধবন, যুবরাজ সিংহদের। অন্য দিকে আবার আফগান স্পিনার রশিদ খানের গুগলি সামলানোও কঠিন হয়ে উঠতে পারে এমন উইকেটে। কোহালিদের বিরুদ্ধে লিগ ম্যাচে নারাইন জোড়া উইকেট নিয়েছিলেন।
সোমবার সন্ধ্যায় চিন্নাস্বামীতে দলের কয়েকজন ক্রিকেটারকে নিয়ে অনুশীলনে কথা ছিল কোচ জাক কালিসের। মাঠে গেলে উইকেটও দেখতে পেতেন। কিন্তু বেঙ্গালুরুর বিমান প্রায় এক ঘণ্টা দেরীতে নামায় সেই পরিকল্পনা বাতিল করে দেওয়া হয়। এ দিন টিম মিটিংও হয়নি। ক্রিকেটারদের বিশ্রাম নিতে বলা হয়। তবে শোনা গেল, বৃহস্পতিবার দুপুরে উইকেট দেখার পর টিম মিটিংয়ে স্পিনারদের বাড়তি দায়িত্ব নেওয়ার কথা বলবে টিম ম্যানেজমেন্ট।