অনুশীলন শুরু হওয়ার আগে টিম হাডলে দলের প্রত্যেক সদস্যের সঙ্গে শ্রেয়সের আলাপ করিয়ে দেন হেড কোচ ব্রেন্ডন ম্যাকালাম। তিনি বলেছেন, ‘‘কলকাতা নাইট রাইডার্সের নতুন অধিনায়ককে আমরা পেয়ে গিয়েছি। আরও একটি মরসুম শুরু হতে চলেছে। তার আগে শ্রেয়স কিছু বক্তব্য রাখবে।’’ তা বলেই শ্রেয়সকে মঞ্চ ছেড়ে দেন কোচ।
মারমুখী: নেটে আগ্রাসী ভঙ্গিতে বল ওড়াচ্ছেন রাসেল। কেকেআর
গত মরসুমে তাঁর ক্রিকেট দেখে খুশি হতে পারেননি সমর্থকেরা। একধাপ এগিয়ে বিশেষজ্ঞরা আবার তাঁর পারফরম্যান্স নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছিলেন।
সেই তিক্ত স্মৃতি মনে রেখে এ বার নতুন আঙ্গিকে আইপিএল অভিযান শুরু করতে চান ওয়েস্ট ইন্ডিজের অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেল। এ বার ব্যাট ধরে দাঁড়ানোর ভঙ্গি কিছুটা বদলেছেন রাসেল। আগের মতো ঝুঁকে দাঁড়াচ্ছেন না। ব্যাট করার সময় মাটিতে এক বার ব্যাট ঠুকেই দাঁড়িয়ে পড়ছেন। যাতে অফস্টাম্পের বাইরের বলে সহজেই পৌঁছে যেতে পারেন। শেষ বার রাসেলকে অফস্টাম্পের বাইরে বল করেই সফল হয়েছেন বোলাররা। এ বার সেই অঙ্ক পাল্টে দিতে চান ড্রে রাস। অফস্টাম্পের বাইরে যে ক’টি বল পেয়েছেন নেটে, প্রত্যেকটি উড়িয়ে দিয়েছেন কভার-পয়েন্ট অঞ্চল দিয়ে।
এ দিকে, কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে সোমবার অনুশীলনে নেমে পড়লেন অধিনায়ক শ্রেয়স আয়ার। প্রথম বক্তব্যেই বুঝিয়ে দিলেন, তিনি দলের নেতার চেয়ে বন্ধুই বেশি। পাশাপাশি প্রত্যেককে অনুশীলনেই নিজেদের পরীক্ষার মধ্যে ফেলার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। যাতে ২৬ মার্চ চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে কারও মনে কোনও আক্ষেপ না থাকে।
অনুশীলন শুরু হওয়ার আগে টিম হাডলে দলের প্রত্যেক সদস্যের সঙ্গে শ্রেয়সের আলাপ করিয়ে দেন হেড কোচ ব্রেন্ডন ম্যাকালাম। তিনি বলেছেন, ‘‘কলকাতা নাইট রাইডার্সের নতুন অধিনায়ককে আমরা পেয়ে গিয়েছি। আরও একটি মরসুম শুরু হতে চলেছে। তার আগে শ্রেয়স কিছু বক্তব্য রাখবে।’’ তা বলেই শ্রেয়সকে মঞ্চ ছেড়ে দেন কোচ।
শ্রেয়স বলেন, ‘‘সবাইকে একসঙ্গে দেখতে পেয়ে খুবই খুশি। আগে আমরা একসঙ্গে অনুশীলন করার সময় পাইনি। প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ার আগে এই কয়েকটা দিনই আমরা হাতে পেয়েছি। যা কাজে লাগাতে হবে।’’
বক্তব্যের শুরুতেই শ্রেয়স বুঝিয়ে দেন, এই দলে প্রত্যেকেই ম্যাচউইনার। কেউ আন্তর্জাতিক স্তরে জিতিয়েছেন, কেউ রাজ্য স্তরে। তিনি বলেছেন, ‘‘তোমাদের প্রত্যেকের মধ্যে দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা আছে। প্রত্যেকেই ম্যাচউইনার। তোমরা ম্যাচ জেতাতে পারো বলেই এখানে দাঁড়িয়ে। কেউ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ম্যাচ জিতিয়েছে, কেউ আইপিএল দলকে, অথবা কেউ ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজের রাজ্যকে জিতিয়ে এসেছে। আমি অধিনায়ক হিসেবে কয়েকটি বিষয় তুলে ধরতে চাই, যা ভবিষ্যতে সাহায্য করবে।’’
আইপিএল বড় প্রতিযোগিতা। ১৪টি ম্যাচ খেলবে প্রত্যেক দল। তার মধ্যে উত্থান-পতন আসবে। হার-জিত থাকবে। দল খারাপ খেলুক অথবা ভাল। প্রত্যেকে যেন দলকে সামনে রেখে এগিয়ে চলেন। দলকে জেতানোই যেন উদ্দেশ্য হয় প্রত্যেকের, যা নিজের বক্তব্যে পরিষ্কার করে দিলেন শ্রেয়স। বলেছেন, ‘‘দল হিসেবে প্রত্যেকের পাশে আমাদের দাঁড়াতে হবে। খারাপ সময় আসবে, কঠিন সময় আসবে আবার ভাল সময়ও আসবে। মাঠের বাইরের কোনও মন্তব্যে বিভ্রান্ত হওয়ার প্রয়োজন নেই। কারণ, দিনের শেষে আমরাই একে অপরের পাশে থাকব। আমাদের প্রত্যেক মুহূর্ত উপভোগ করতে হবে।’’
শ্রেয়স বুঝিয়ে দেন প্রত্যেকের সঙ্গে বন্ধুর মতো মিশলেও অধিনায়ক হিসেবে বেশ কঠোর। বলেছেন, ‘‘অনুশীলনে নিজেদের পরীক্ষার মধ্যে ফেলতে হবে। যাতে ২৬ মার্চ সিএসকের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে আমাদের মধ্যে কোনও আক্ষেপ না থাকে। চলো আমরা এমন একটি সম্পর্ক তৈরি করি, যা মাঠে ও মাঠের বাইরেও সাহায্য করবে। সবাইকে আগামী দিনের শুভেচ্ছা। অনুশীলন শুরু করা যাক।’’ প্রথম বক্তব্যেই দলের মন জয় করে নেন শ্রেয়স। তাঁকে এসে জড়িয়ে ধরলেন আন্দ্রে রাসেল, শিবম মাভিরা।
কেকেআর যদিও কাকে দিয়ে ওপেন করাবেন, এখনও নিশ্চিত নয়। বেঙ্কটেশ আয়ার ও স্যাম বিলিংসকে দিয়েই নেট শুরু হচ্ছে। অ্যারন ফিঞ্চ আসবেন পাক সফর শেষ হওয়ার পরে। তিনি আসার আগে বেঙ্কটেশের সঙ্গে বিলিংসকেই হয়তো দায়িত্ব সামলাতে হবে।
ঋষভের দায়িত্ব: দিল্লি ক্যাপিটালস অধিনায়ক ঋষভ পন্থ জানিয়ে দিয়েছেন, এ বারের আইপিএলে তরুণ ক্রিকেটারদের তৈরি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সিনিয়রদের উপরেই। ঋষভ বলেছেন, ‘‘কার কী দায়িত্ব, সেটা নিয়েই মূল আলোচনা করা হচ্ছে। দলের নতুন ক্রিকেটারেরা কী চাইছে, অনুশীলনে কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না। সে সব নিয়েই এখন আলোচনা চলছে দলের মধ্যে।’’