KKR

IPL 2021: বিশাল বেতনের চাকরি ছেড়ে ক্রিকেট বেছে নেন আইপিএল-এ মুম্বইকে হারানো নাইট বেঙ্কটেশ

ওপেনার হিসেবে ব্যর্থ হলেও তাঁকে দল থেকে বাদ দেওয়া হবে না, এই প্রতিজ্ঞাতেই কোচের কথায় রাজি হয়েছিলেন আয়ার।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৯:৫০
Share:

বেঙ্কটেশ আয়ার, আইপিএল-এর দ্বিতীয় পর্বে কলকাতা নাইট রাইডার্সের এক বিরাট প্রাপ্তি। ছবি: টুইটার থেকে

ছিপছিপে, লম্বা, দাড়িওয়ালা ছেলেটি আগে ছ’নম্বরে ব্যাট করতে নামত। একদিন মধ্যপ্রদেশের কোচ চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত মুস্তাক আলি ট্রফিতে ওপেন করতে বললেন। রাজি ছিল না ছেলেটি। তবে জহুরির চোখ হিরে খুঁজে নিয়েছে। চন্দ্রকান্ত নিশ্চিত ছিলেন, টি২০ ক্রিকেটে ওপেনার হিসেবে সাফল্য পাবেই তাঁর ছাত্র।

বেঙ্কটেশ আয়ার, আইপিএল-এর দ্বিতীয় পর্বে কলকাতা নাইট রাইডার্সের এক বিরাট প্রাপ্তি। এক সর্ব ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে চন্দ্রকান্ত বলেন, “ওপেন করতে রাজি ছিল না আয়ার। তবে আমার বিশ্বাস ছিল, যে ভাবে ও ব্যাট করে তাতে খেলা ঘুরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে ওর। ইউসুফ পাঠানকেও একই পরামর্শ দিয়েছিলাম আমি। নীচের দিকে ব্যাট করলে ওর প্রতিভা নষ্ট হচ্ছিল।”

Advertisement

ওপেনার হিসেবে ব্যর্থ হলেও তাঁকে দল থেকে বাদ দেওয়া হবে না, এই প্রতিজ্ঞাতেই চন্দ্রকান্তের কথায় রাজি হয়েছিলেন আয়ার। ছাত্রের ব্যাট করার ধরনেও পরিবর্তন এনেছিলেন চন্দ্রকান্ত। তিনি বলেন, “আগে ওর ব্যাট মাথার উপর থেকে নামত। ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলার সময় ওকে বুঝিয়েছিলাম এই ভাবে ব্যাট করলে মুশকিল হবে। এখন ওর ব্যাট নামে কোমরের কাছ থেকে।”

বৃহস্পতিবার মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে ৩০ বলে ৫৩ রান করেন আয়ার। রোহিতদের দেওয়া ১৫৬ রানের লক্ষ্যকে সহজ করে দিয়েছিলেন তিনিই। আয়ারের ইনিংস সাজানো ছিল তিনটি ছয় এবং চারটি চার দিয়ে। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধেও ২৭ বলে অপরাজিত ৪১ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। আইপিএল-এ ইতিমধ্যেই নজর কেড়েছেন এই ওপেনার।

Advertisement

আইপিএল-এর আগে ঘরোয়া ক্রিকেটেও দাপট দেখাতে শুরু করে দিয়েছিলেন আয়ার। মুস্তাক আলি ট্রফিতে পাঁচটি ইনিংসে তাঁর রান ছিল ২২৭, স্ট্রাইক রেট ১৪৯.৩৪। শুধু টি২০ ক্রিকেটেই নয়, আয়ারের দাপট ছিল ৫০ ওভারের খেলাতেও। বিজয় হজারে ট্রফিতে পঞ্জাবের বিরুদ্ধে ১৪৬ বলে ১৯৮ রানের ইনিংস খেলেন মধ্যপ্রদেশের এই ব্যাটসম্যান। এই ইনিংসই তাঁকে নজরে এনে দেয় কলকাতার। মুম্বই গিয়ে নাইটদের ট্রায়ালে নামেন আয়ার এবং সই করেন।

তবে ক্রিকেটার আয়ারকে হয়তো পেতই পারত না ভারত। এমবিএ করা আয়ারকে দেশের অন্যতম সেরা সংস্থা চাকরির ডাক দিয়েছিল। সামনে ছিল বিশাল অঙ্কের মাইনে। কিন্তু ২৫ বছরের আয়ার সেই দিকে পা বাড়াননি। সেই সিদ্ধান্ত খুব কঠিন ছিল বলেই জানাচ্ছেন আয়ারের বন্ধু মধ্যপ্রদেশের পেসার আনন্দ রাজন। তিনি বলেন, “দোটানায় ছিল আয়ার। ক্রিকেট খেলতে চাইছিল। তাই সেই দিকেই এগিয়ে এল। সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ব্যর্থ হলে দ্বিতীয় পরিকল্পনাও তৈরি ছিল আয়ারের কাছে।”

খেলা এবং পড়াশোনা, দুই নৌকায় পা দিয়েই এগিয়ে চলেন আয়ার। একই দিনে ছিল মধ্যপ্রদেশের অনুশীলন ম্যাচ এবং কলেজের পরীক্ষা। আয়ার কোনওটাই বাদ দেননি। পরীক্ষা দিয়ে খেলতে চলে গিয়েছিলেন মধ্যপ্রদেশের হয়ে। সেই ম্যাচে শতরান করেন তিনি। ডাক আসে রঞ্জি দলে। পরীক্ষাতেও পাশ করেছিলেন আয়ার।

আইপিএল-এর প্রথম পর্বে যদিও এত আলো ছিল না আয়ারের দিকে। বসেই থাকতে হয়েছিল। চন্দ্রকান্ত বলেন, “আমাকে ফোন করেছিল। প্রথম একাদশের বাইরে বসে থেকে বিরক্ত হচ্ছিল। আমি বলেছিলাম বাইরে বসে থেকেও অনেক কিছু শিখবে। সুযোগের জন্য অপেক্ষা করো।” সেই সুযোগ এল দ্বিতীয় পর্বে। সমস্ত আলোর মাঝখানে এখন বেঙ্কটেশ আয়ার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement