দুরন্ত: ১৩ রানে চার উইকেট নিলেন দীপক চাহার। ছবি: পিটিআই।
মহেন্দ্র সিংহ ধোনির বিরল মাইলফলকের দিনেই তাঁর মিডিয়াম পেসারকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত ক্রিকেট মহল। চেন্নাই সুপার কিংসের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে হলুদ জার্সিতে দু’শোতম ম্যাচ খেলে ফেললেন ধোনি। আর চাপে থাকা অধিনায়কের মুখে হাসি ফিরিয়ে দিলেন দীপক চাহার। যাঁর সুইং বোলিংয়ের সামনে দিশেহারা পঞ্জাব কিংসের শক্তিশালী ব্যাটিং বিভাগও।
চাহারের চার উইকেট নেওয়া দেখে উচ্ছ্বসিত রবি শাস্ত্রী। ভারতীয় দলের হেড কোচ মুগ্ধ চাহারের সুইং বোলিংয়ে। তিনি টুইট করেন, ‘‘নিয়ন্ত্রণ রেখে দু’দিকে ভাল সুইং এখনও সেরা প্রতিপক্ষকেও ঘায়েল করতে পারে। আবারও সেটা প্রমাণ হল। অসাধারণ!’’ ১৩ রানে চার উইকেট নিয়ে কে এল রাহুলদের চূর্ণ করেন চাহারই। টানা চার ওভার বল করে তিনি তুলে নেন মায়াঙ্ক আগরওয়াল, ক্রিস গেল, নিকোলাস পুরান এবং আগের দিন ব্যাটে ঝড় তোলা দীপক হুডাকে। ম্যাচের সেরার পুরস্কার নিতে এসে চাহার বলে গেলেন, ‘‘প্রথম উইকেটটা আমাকে সব চেয়ে আনন্দ দিয়েছে। স্বপ্নের বল। স্বপ্নের আউটসুইঙ্গার। মিডল স্টাম্পে পড়ে অফস্টাম্পে আঘাত করল।’’ প্রথম ওভারে প্রথম উইকেটটি ছিল মায়াঙ্ক আগরওয়ালের। টেস্ট ক্রিকেটে খেলার অভিজ্ঞতা থাকা মায়াঙ্ক সম্পূর্ণ পরাস্ত হন চাহারের আউটসুইংয়ে।
সেই বোলিং দেখে মুগ্ধ সঞ্জয় মঞ্জরেকরও। তিনি বলছেন, ‘‘যেমন সুইং, তেমনই নাক্ল বল, বাউন্সার। দুর্দান্ত বোলিং!’’ প্রথম ওভারেই মায়াঙ্ক আগরওয়ালকে ফিরিয়ে দেন চাহার। তাঁর সুইংয়ে সম্পূর্ণ ভাবে পরাস্ত হন মায়াঙ্ক। প্রথম ওভারেই ক্রিস গেলের উইকেটও তুলে নিতে পারতেন তিনি। পয়েন্টে ঋতুরাজ গায়কোয়াড় ক্যাচ ফেলে দেন। যা নিয়ে চাহার মজা করে বলে গেলেন, ‘‘একমাত্র রবীন্দ্র জাডেজার পক্ষে ওই সব ক্যাচ ধরা সম্ভব। আমি চাই দশ জন জাডেজা থাকুক ফিল্ডার হিসেবে।’’ পঞ্চম ওভারেই ‘স্লোয়ার’ অস্ত্রে গেলের উইকেট তুলে নেন তিনি। পয়েন্টে দুর্ধর্ষ ক্যাচ নেন সেই জাডেজাই। এর পরে মাথা তাক করা দুর্দান্ত বাউন্সারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের আর এক বিপজ্জনক ব্যাটসম্যান নিকোলাস পুরানকেও আউট
করেন চাহার। ডিপ ফাইন লেগে ক্যাচ নেন শার্দূল ঠাকুর। নিজের চতুর্থ এবং শেষ ওভারে দীপক হুডাকে ফিরিয়ে দিয়ে পঞ্জাবের প্রত্যাবর্তনের সব দরজা বন্ধ করে দেন ডান হাতি মিডিয়াম পেসার। অধিনায়ক ধোনি যে প্রথম ওভারেই বল তাঁর হাতে তুলে দিচ্ছেন, তাতে সম্মানিত বোধ করেন চাহার। বলে গেলেন, ‘‘গত চার বছর ধরে এটা একটা বড় দায়িত্ব। প্রথম ওভারটা আমাকে করতে দেওয়া হয়। মাহি ভাই আমার উপরে আস্থা রেখেছে।’’ এ বছরেই দেশের মাটিতে রয়েছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এ দিনের বোলিংয়ে ভারতীয় দলের দরজাও হয়তো অনেকটাই খুলে ফেললেন তিনি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সেরা বোলিং তাঁরই দখলে। ২০১৯-এর নাগপুরে ভারতের হয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তিনি ৭ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন দীপক চাহার। দুর্দান্ত একটা আইপিএল বিশ্বকাপের মঞ্চে তাঁকে নীল জার্সির গুরুত্বপূর্ণ সদস্য করে তুলতেই পারে।