আইপিএল থেকে বিদায় কোহলীর। ফাইল ছবি
প্রথমে বল হাতে চার উইকেট নিয়ে দুমড়ে দিলেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের ব্যাটিং লাইন-আপ। তারপর মোক্ষম সময়ে ব্যাট হাতে নেমে পরপর তিনটি ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ এনে দিলেন কেকেআর-এর নিয়ন্ত্রণে। সোমবার ষষ্ঠীর রাতে আইপিএল-এর এলিমিনিটরে এ ভাবেই কলকাতাকে কার্যত একার হাতে জিতিয়ে দিলেন সুনীল নারাইন। যদিও ম্যাচ গড়াল শেষ ওভার পর্যন্ত। কিন্তু ম্যাচের ফল যা হওয়ার ছিল, সেটাই হল। আরসিবি-কে ৪ উইকেট হারিয়ে এ বার কোয়ালিফায়ার ২-তে দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে খেলবে কেকেআর।
আগেই জানিয়েছিলেন, এই মরসুমের পর আর আরসিবি-র অধিনায়ক থাকতে চান না। কিন্তু অধিনায়ক হিসেবে নিজের মরসুমেও ট্রফি জিততে ব্যর্থ বিরাট কোহলী। এ বারের আইপিএল থেকেও তাঁকে ফিরতে হচ্ছে খালি হাতে। সোমবারের হারে তাঁর ব্যাটিং এবং বোলিং — দুই বিভাগই সমান দায়ী। প্রয়োজনের সময়ে কেউই কাজে এলেন না। মাথা নিচু করেই এ বারের আইপিএল থেকে বিদায় নিতে হল কোহলীকে।
টসে জিতেই সোমবার কোহলী জানিয়েছিলেন, পিচ দেখে তাঁর ভাল লেগেছে। মনে হয়েছে প্রথমে ব্যাট করার পক্ষে উপযুক্ত। তিনি এবং দেবদত্ত পাড়িক্কল মিলে শুরুটা ভালই করেছিলেন। কিন্তু টসের সময় বাকিরা কোহলীর বার্তা বোধহয় ঠিক ভাবে শুনতে পাননি। না হলে প্রথম উইকেট পতনের পরেই এ ভাবে ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হত না। লকি ফার্গুসনের বলে পাড়িক্কল ফেরার পরেই আগের ম্যাচের নায়ক শ্রীকর ভরত নেমেছিলেন। কিন্তু তিনি মাত্র ৯ রান করেই সাজঘরে। এরপর কোহলী (৩৯), ডিভিলিয়ার্স (১১) এবং ম্যাক্সওয়েলকে (১৫) রীতিমতো বোকা বানিয়ে তুলে নিলেন নারাইন। চলতি মরসুমে খুব একটা অসাধারণ হয়তো খেলেননি ক্যারিবিয়ান বোলার, কিন্তু প্রায় প্রতি ম্যাচেই নিঃশব্দে নিজের মতো করে অবদান রাখার চেষ্টা করেছেন। তাঁর চারটি এবং ফার্গুসনের দুই উইকেটের দাপটে ১৩৮-এ থামে আরসিবি-র ইনিংস।
কেকেআর-এর শুরুটা হয়েছিল কেকেআর-এর মতোই। বেঙ্কটেশ আয়ার এবং শুভমন গিল আগের ম্যাচগুলির মতোই ভরসা দিয়েছিলেন দলকে। প্রথম জুটিতে ৪১ উঠে যায়। পরপর দু’ওভারে শুভমন (২৯) এবং রাহুল ত্রিপাঠি (৬) ফিরলেও কেকেআর চাপে পড়েনি। কারণ, বেঙ্কটেশ ইতিমধ্যেই ব্যাট হাতে ভরসা দিয়েছেন দলকে। কেকেআর ইনিংসের মাঝামাঝি সময়েই ম্যাচ জিততে প্রতি বলে এক রান দরকার ছিল কেকেআর-এর। মাথা ঠান্ডা করে খেললেই হত। কিন্তু অকারণে ঝুঁকি নিতে গিয়ে উইকেট খোয়ালের বেঙ্কটেশ এবং নীতীশ।
তবে তাঁর আগেই দেখা গিয়েছে ব্যাটার নারাইনের কামাল। বেঙ্কটেশ ফেরার পরেই ওভারেই সিরাজকে তিনটি ছক্কা মারলেন তিনি। কেকেআর শিবিরে যে সামান্য শঙ্কা তৈরি হয়েছিল, তা কেটে গেল ওই একটা ওভারেই। সেই ওভার থেকে এল ২২। কেকেআর-এর রানও ১০০ পেরিয়ে গেল। এরপরে কিছুটা রান তোলার গতি কমে যায়। এক সময় তিন বলের ব্যবধানে নারাইন (২৬) এবং দীনেশ কার্তিককে (১০) হারিয়ে বিপদে পড়েছিল কেকেআর। ম্যাচ এমনকী শেষ ওভার পর্যন্ত গড়ায়। কিন্তু শেষ মুহূর্তে কোনও অঘটন ঘটাতে পারেনি আরসিবি।