রাহুল-বেঙ্কটেশ জুটি জেতাল কলকাতাকে। ছবি আইপিএল
অনেকদিন পর বৃহস্পতিবার শান্তিতে ঘুমোতে পারবেন শাহরুখ খান। কেকেআর মালিকের কাছে বরাবরই মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে ম্যাচ সম্মানের লড়াই। বরাবর এই ম্যাচের আগে আলাদা করে গোটা দলকে উদ্বুদ্ধ করেন তিনি। কিন্তু বার বারই তাঁর দল ডুবিয়েছে এই ম্যাচে এসে। অবশেষে দীর্ঘদিন পর মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে জয় পেল কেকেআর। বৃহস্পতিবার আবু ধাবিতে তারা রোহিত শর্মার দলকে হারিয়ে দিল ৭ উইকেটে। মুম্বইয়ের ১৫৫ রান তারা তুলে দিল ৩ উইকেট হারিয়েই।
এ বারের আমিরশাহী-পর্বে আইপিএল এবং কেকেআর সম্ভবত খুঁজে পেল এক নবীন প্রতিভাকে। তিনি বেঙ্কটেশ আয়ার। কেকেআর তাঁকে এ বারের নিলামে ২০ লক্ষ টাকা দিয়ে কিনেছিল। আগের ম্যাচে বিরাট কোহলীদের বিরুদ্ধে ৪১ রানে অপরাজিত থাকার পর বৃহস্পতিবার তিনি ৫৩ করলেন। দলকে জেতাতে মুখ্য ভূমিকাও নিলেন। গত কয়েক মরসুমে ওপেনিংয়ে সুনীল নারাইনকে পাঠিয়ে ফাটকা খেলছিল কেকেআর। দীর্ঘদিন পর ওপেনিংয়ে ভরসাযোগ্য ব্যাটসম্যান পেল তারা। চাপ কমল রাহুল ত্রিপাঠির উপরেও, যিনি গত মরসুম এবং এ মরসুমের শুরুতে ওপেনিংয়ে খেলছিলেন।
টসে জিতে অইন মর্গ্যান বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় অনেকেই অবাক হয়েছিলেন। কারণ, মরুশহরে প্রথমে ব্যাট করে জয়ের নজিরই বেশি। নিজের সিদ্ধান্তের পিছনে মর্গ্যান যুক্তি হিসেবে দেখিয়েছিলেন আগের ম্যাচে প্রথমে বোলিং করে সাফল্যের কথা। কিন্তু ম্যাচ শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁর অনুমান প্রায় ভুল প্রমাণিত হয়ে গিয়েছিল। ক্রিজে নেমে শুরু থেকেই কেকেআর বোলারদের উপর চড়াও হন রোহিত শর্মা এবং কুইন্টন ডি’কক।
এমনিতেই কলকাতাকে দেখলে জ্বলে ওঠেন রোহিত। বৃহস্পতিবারও তার ব্যতিক্রম নয়। ৩৩ রানে আউট হওয়ার আগে পর্যন্ত কেকেআর বোলারদের শাসন করলেন। প্রথম ব্যাটার হিসেবে আইপিএল-এ একটি দলের বিরুদ্ধে হাজার রানের নজির গড়াও হয়ে গেল। দশম ওভারে গিয়ে প্রথম সাফল্য পেল কেকেআর। ততক্ষণে স্কোরবোর্ডে উঠে গিয়েছে ৭৮ রান।
ওপেনিং জুটি ভাঙতেই ধীরে ধীরে ছন্দ হারাতে শুরু করে মুম্বই। রান তোলার গতি এক ধাক্কায় অনেকটা কমে যায়। সূর্যকুমার যাদব, ঈশান কিশন কেউই বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। কায়রন পোলার্ড তবু শেষ দিকে একটু চালিয়ে খেলে দলকে দেড়শোর গন্ডি পার করে দেন।
মুম্বই যে গতিতে শুরু করেছিল, তার দ্বিগুণ গতিতে শুরু করলেন কলকাতার ওপেনাররা। ট্রেন্ট বোল্টের প্রথম ওভারেই জোড়া ছক্কার সাহায্যে এল ১৫। এরপর শুভমন গিল এবং বেঙ্কটেশ শাসন করতে থাকলেন মুম্বই বোলাররা। নির্মম ভাবে আক্রমণ করা হচ্ছিল বুমরাকেই। যদিও ভারতীয় বোলারই দলকে প্রথম সাফল্যের মুখ দেখালেন। তাঁর নিখুঁত ইয়র্কারে ভাঙল শুভমনের স্টাম্প। ম্যাচ এরপরেই বেরিয়ে গেল মুম্বইয়ের হাত থেকে।
শুভমনের পরিবর্তে যিনি এলেন, সেই রাহুল ত্রিপাঠি যেন আরও ভয়ঙ্কর। বেঙ্কটেশের সঙ্গে মুম্বই বোলারদের নিয়ম করে মাঠের বাইরে পাঠাতে শুরু করলেন তিনি। কেকেআর-এর জয়ের কৃতিত্ব যতটা না বেঙ্কটেশের, ততটাই রাহুলের। ওপেনার হিসেবে এর আগে নিজের জাত চিনিয়েছেন। এ বার তিন নম্বরে নেমেও দলকে ভরসা দিলেন।
পরপর কোহলী এবং রোহিতের দলকে হারিয়ে আপাতত টগবগ করে ফুটছে কেকেআর। প্রথমে তাঁর বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত প্রথমে মনে হয়েছিল ভুল। ম্যাচ শেষে দেখা গেল, মর্গ্যানই নির্ভুল। ৯ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে কেকেআর আপাতত চার নম্বরে।