KKR

IPL 2021: সপ্তম থেকে ফাইনালে, কী ভাবে সম্ভব হল কেকেআর-এর নয় ম্যাচের রূপকথা?

প্রথম পর্বে সাত ম্যাচের মধ্যে মাত্র দু’টি জিতে কলকাতা ছিল সাত নম্বরে। কেউই ভাবেননি, পরের ন’টির মধ্যে সাতটি জিতে কলকাতা আইপিএল ফাইনাল খেলবে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২১ ১২:১২
Share:

ফাইল ছবি।

কোভিডের জন্য আইপিএল যখন এ বার বন্ধ হয়ে গেল, তখন সাতটি ম্যাচের মধ্যে মাত্র দু’টি জিতে কলকাতা নাইট রাইডার্স ছিল সাত নম্বরে। জোর গলায় বলা যায়, কেউই ভাবতে পারেননি, পরের ন’টি ম্যাচের মধ্যে সাতটি জিতে দশমীর দিন কলকাতা আইপিএল ফাইনাল খেলবে। সম্ভবত অইন মর্গ্যান এবং তাঁর দলও ভাবেনি, ১৫ অক্টোবর আবার তাঁদের মাঠে নামতে হবে।

Advertisement

কার্যত অসম্ভবটা সম্ভব হওয়ার কারণ, ‘কেউই ভাবতে না পারার’ তালিকায় একজন ছিলেন না। তিনি কেকেআর কোচ ব্রেন্ডন ম্যাকালাম। দ্বিতীয় পর্বের আইপিএল শুরু হওয়ার আগে কেকেআর-এর ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করা হয়। তাতে দেখা যায়, ম্যাকালাম মধ্যমণি হয়ে অধিনায়ক মর্গ্যান থেকে শুরু করে আনকোরা বেঙ্কটেশ আয়ারকে উদ্বুদ্ধ করছেন। তিনি বলছেন, ‘‘শুধু এক বার ভাব, তোমরা এখন যে জায়গায় আছ, সেখান থেকে যদি কোনও ভাবে ট্রফিটা জিততে পার, তা হলে তোমাদের নিয়ে রূপকথা লেখা হবে।’’

গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।

কেকেআর-এর এই ভিডিয়ো নিয়ে তখন অনেক ব্যঙ্গ, হাসাহাসি হয়েছিল। ট্রফি এখনও আসেনি। কিন্তু রূপকথা লেখা হয়ে গিয়েছে। সপ্তম স্থান থেকে আইপিএল ফাইনালে ওঠার রূপকথা। তাই কেকেআর কোচের সেই ভিডিয়ো এখন অনেকেই আবার খুলে দেখছেন।

Advertisement

কী ভাবে অসম্ভবকে সম্ভব করলেন ম্যাকালাম? শুধুই কি পেপ টক? না। এর পিছনে রয়েছে ম্যাকালামের নিখুঁত ক্রিকেট মস্তিষ্ক। কী কী কারণে এতটা বদলে গেল কেকেআর-

এক, আন্দ্রে রাসেলকে দিয়ে চার ওভার করানো। প্রথম পর্বে রাসেলকে ব্যাটিং অলরাউন্ডার হিসেবে ব্যবহার করেছিল কেকেআর। খুব দরকার পড়লে শেষের দিকে দু’-এক ওভার তাঁকে দেওয়া হত।

দুই, বেঙ্কটেশ আয়ারকে খেলানো। শিবম মাভিকে খেলাতে গিয়ে দলের ব্যাটিং গভীরতায় ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছিল। তাই দ্বিতীয় পর্বের শুরু থেকে বেঙ্কটেশকে খেলোনা হয়। বাকিটা ইতিহাস। এখন কেকেআর ব্যাটসম্যানদের মধ্যে বেঙ্কটেশের গড় (৪০.০০) সব থেকে ভাল। ন’টি ম্যাচ খেলে ১২৫.০০ স্ট্রাইক রেট রেখে তিনি ৩২০ রান করেছেন।

তিন, দ্বিতীয় পর্বের প্রথম ম্যাচেই বিরাট কোহলীর রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরকে ৯ উইকেটে হারিয়ে দেওয়া। ১০ ওভার বাকি থাকতে সেই বিশাল জয় এক ধাক্কায় কেকেআর-এর আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছিল, যার উপর ভিত্তি করে ফাইনালে উঠেছে দল। তার পরের ম্যাচে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকেও হারায় কলকাতা।

চার, দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে আন্দ্রে রাসেলের চোট চিন্তায় ফেলে দিলেও তাঁর দুই পরিবর্ত টিম সাউদি এবং লকি ফার্গুসন বল হাতে সেই অভাব বুঝতে দেননি। পরিস্থিতি এমন যে, সুস্থ হয়ে উঠলে রাসেল এখন আদৌ দলে জায়গা পাবেন কি না, সেটাই প্রশ্ন।

পাঁচ, পঞ্জাব কিংসের কাছে হারের পর শাকিব আল হাসানকে খেলানো। আগে ২০ ওভারের মধ্যে মূলত ১২ ওভার করতেন জোরে বোলাররা। বাকি আট ওভার স্পিনাররা। কিন্তু শাকিব আসায় কেকেআর দলে স্পিন বৈচিত্র্য বেড়েছে। লেগ স্পিনার (বরুণ চক্রবর্তী) এবং অফ স্পিনারের (সুনীল নারাইন) পর বাঁহাতি স্পিনারও যোগ হয়েছে। এঁদের কারোরই ওভার পিছু রান দেওয়ার সংখ্যা সাত ছাড়ায়নি। সব ম্যাচেই দেখা যাচ্ছে, বিপক্ষ দলগুলি এই তিন স্পিনারের হাতেই ম্যাচ তুলে দিয়ে যাচ্ছে।

ছয়, প্লে-অফে দুটি ম্যাচই কলকাতাকে খেলতে হয়েছে শারজার মন্থর উইকেটে। দুটি ম্যাচেই কেকেআর প্রথমে ব্যাট করেছে। এটা তাদের স্পিনারদের আরও বেশি সাহায্য করেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement