দুরন্ত খেললেন ধওয়ন এবং পৃথ্বী। ছবি আইপিএল
প্রথম বলটি ছিল ওয়াইড। তারপরের ৬টি বলে ৬টি চার। বৃহস্পতিবার দিল্লি ক্যাপিটালস বনাম কলকাতা নাইট রাইডার্স ম্যাচের ফল কী হতে চলেছে তা নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল ওখানেই। শিবম মাভির প্রথম ওভারেই কার্যত ম্যাচ বেরিয়ে গিয়েছিল কেকেআর-এর হাত থেকে। বাকি সময়টা কার্যত নিয়মরক্ষার লড়াই হল ছন্দে থাকা দিল্লির ব্যাটসম্যানদের বিরুদ্ধে আত্মবিশ্বাসের তলানিতে থাকা কলকাতার বোলারদের। কলকাতাকে অনায়াসে ৭ উইকেটে হারিয়ে জিতল দিল্লি ক্যাপিটালস।
কেকেআর সমর্থকরা ইতিমধ্যেই নেটমাধ্যমে প্রশ্ন তুলতে শুরু করে দিয়েছেন, গত বার মরসুমের মাঝপথে অধিনায়ক পরিবর্তন করা হলে এ বার হবে না কেন? প্রতি ম্যাচে অধিনায়কত্বের যা নিদর্শন দেখাচ্ছেন বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক, তাতে অনুরাগীদের মনে বড়সড় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তাঁর প্রায় হাঁটুর বয়সী ঋষভ পন্থও অত্যন্ত পরিণত মানসিকতা নিয়ে নেতৃত্ব দিলেন।
পুরনো রোগ থেকে কিছুতেই বেরিয়ে আসতে পারছে না কেকেআর। পাওয়ার প্লে-র সময় যতটা সম্ভব কাজে লাগানোর লক্ষ্য থাকলেও কোনও ম্যাচেই তা সম্ভব হচ্ছে না। বৃহস্পতিবার প্রথম ৬ ওভারে ৪৫ রান তুলল। তুলনায় দিল্লি ৬ ওভারে তুলল ৬৭। যত দিন যাচ্ছে শুভমন গিল যেন ধীরগতির হয়ে যাচ্ছেন। অতিরিক্ত সাবধানতা নিতে গিয়ে প্রয়োজনের অতিরিক্ত বল নিয়ে নিচ্ছেন। দিল্লি ম্যাচের আগে অনেকেই ওপেনিংয়ে বদল আনার কথা বলেছিলেন। কিন্তু কেকেআর অধিনায়ক শুনলে তো!
নীতীশ রানা ভাল শুরু করেছিলেন। কিন্তু অতিরিক্ত উত্তেজনা নিয়ে মারতে গিয়ে স্টাম্পড হলেন। রাহুল ত্রিপাঠিও বেশিক্ষণ টেকেননি। মর্গ্যান তো দ্বিতীয় বলেই ছয় মারতে গিয়ে স্টিভ স্মিথকে ক্যাচ দিলেন। রানের খাতাই খুলতে পারলেন না। পরের বলেই আউট সুনীল নারাইন। কেকেআর-এর কাছে তখন একশোর গন্ডি পেরনোই কঠিন হয়ে পড়েছে।
বাঁচিয়ে দিলেন আন্দ্রে রাসেল। চেন্নাই ম্যাচের মতো বৃহস্পতিবারও তাড়াতাড়ি নামার সুযোগ পেয়েছিলেন। সেটা কাজে লাগালেন। ২৭ বলে ৪৫ রান করে জন্মদিনে অনুরাগীদের মাতিয়ে দিলেন। দিনের শেষে যদিও নিজের জন্মদিন উদযাপনের কোনও সুযোগ পেলেন না।
২০১৮-র অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ের দলে ছিলেন মাভি এবং পৃথ্বী। ফলে মাভির বোলিং পৃথ্বীর ভালই চেনা ছিল। একটিও ভুল শট মারেননি। শুধুমাত্র সঠিক জায়গায় শট মেরে ৬টি চার আদায় করে নিলেন পৃথ্বী। দিল্লির ঝড়ের ওখানেই শুরু। এরপর কোনও ভাবেই থামানো যায়নি পৃথ্বী-ধওয়নকে। কেকেআর বোলারদের বিন্দুমাত্র সমীহ না করে দ্রুত রান তোলার দিকে মন দিয়েছিলেন এই দু’জনে। চতুর্দশ ওভারে এসে প্যাট কামিন্স সাফল্য দিলেন কলকাতাকে। তাঁর সোজাসুজি বলে এলবিডব্লিউ হলেন ধওয়ন। ততক্ষণে স্কোরবোর্ডে উঠে গিয়েছে ১৩২। অর্থাৎ জয় নিশ্চিত। পরে আরও দুটি উইকেট পড়লেও দিল্লির জিততে অসুবিধে হয়নি।