চর্চায়: ধাক্কা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই রাসেল, মর্গ্যানদের। ফাইল চিত্র।
মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে হার একেবারেই মেনে নিতে পারেননি কলকাতা নাইট রাইডার্সের সমর্থকেরা। প্রচারমাধ্যমে নাইটদের হারের পরে সমালোচনার স্রোত বয়ে গিয়েছে। নাইট কর্ণধার শাহরুখ খান টুইট করে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন সমর্থকদের কাছে। বিধ্বংসী ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেল মেনে নিচ্ছেন, তিনি ও কার্তিক বড় শট নিতে ব্যর্থ। তাই এই সহজ ম্যাচে আত্মসমর্পণ করেছে কেকেআর। রাসেল যদিও মনে করেন, এই হার থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামী দিনে ঘুরে দাঁড়াবে কেকেআর।
শেষ তিন ওভারে ২২ রান প্রয়োজন ছিল নাইটদের। তার আগেই প্যাভিলিয়নে ফিরে গিয়েছিলেন অইন মর্গ্যান, শাকিব আল হাসানরা। দশের গণ্ডিও পেরোতে ব্যর্থ দুই তারকা। তাই রাসেল ও দীনেশ কার্তিকের উপরে দায়িত্ব এসে পড়ে ম্যাচ শেষ করে আসার। চেন্নাইয়ের মন্থর পিচে সদ্য ক্রিজে আসা ব্যাটসম্যানের পক্ষে শট নেওয়া সহজ নয়। রাসেল ও কার্তিক তাই ম্যাচ জেতাতে ব্যর্থ। ১৫ বলে ৯ রানের ইনিংসে দু’বার ক্যাচ ওঠে রাসেলের। তার পরেও ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডারের ব্যাট থেকে আসেনি কোনও বড় শট। রাসেলের তাই মেনে নিতে দ্বিধা নেই, তাঁর ও কার্তিকের ব্যর্থতার মাশুল দিতে হল দলকে। মাত্র দু’ওভার বল করে পাঁচ উইকেট নেওয়ার কীর্তিও বিফলে গেল তাঁর।
ম্যাচ শেষে ‘ভার্চুয়াল’ সাংবাদিক বৈঠকে এসে রাসেল বলেছেন, “এই হার সত্যি হতাশজনক। আমি ও কার্তিক দুজনেই ম্যাচ শেষ করে আসার দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে নেমেছিলাম। কিন্তু আমাদের ব্যাটে-বলে ঠিক মতো লাগছিল না।” যোগ করছেন, চেন্নাইয়ের পিচ সদ্য ক্রিজে আসা ব্যাটসম্যানের জন্য আদর্শ নয়। তাঁর কথায়, “নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রথম বল থেকে শট নেওয়া এই পিচে সহজ নয়। বল উচু-নিচু হচ্ছিল। অসমান বাউন্স সামলাতে নাজেহাল অবস্থা হয় আমাদের। শেষ পর্যন্ত এই ম্যাচ জিততে না পেরে প্রত্যেকেই হতাশ।”
এখনও পর্যন্ত আইপিএলে ২৮ বারের সাক্ষাতে ২২তম জয় মুম্বইয়ের। নাইটদের সঙ্গে শেষ ১১ বারের দেখায় মুম্বই জিতেছে দশ বার। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে দেখলেই কেকেআর কেন কুঁকড়ে যায়, সেই রহস্য ভেদ করতে পারেননি কেউ। রাসেলের কথায়, “আমরা সত্যি খুব হতাশ। তবে এখানেই আমাদের যাত্রা শেষ হচ্ছে না। রাস্তা এখনও বন্ধ হয়নি। এই ভুল থেকে আমরা শিক্ষা নিয়ে আগামী দিনের জন্য এগিয়ে যাব।”
নাইট শিবিরে বরাবর একটা সমস্যা স্পষ্ট। ক্রিজে থিতু হয়ে যাওয়ার পরে উইকেট ছুড়ে আসার প্রবণতা গত বারও কাঁটা হয়ে দাঁড়ায় নাইটদের। এই ভয়ঙ্কর অভ্যেস পাল্টে ফেলার ইঙ্গিত দিয়েছেন রাসেলও। তাঁর কথায়, “ক্রিজে যারা থিতু হয়ে যাবে, তাদের চেষ্টা করতে হবে দ্রুত রান এগোনোর। পরের ম্যাচে যাতে এ রকম ভুল না হয় সেটা খেয়াল রাখতে হবে।”
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে রাসেলের অভিজ্ঞতা বহু বছরের। এ ধরনের কম রানের ম্যাচে কী ভাবে পরিস্থিতি ঘুরে যেতে পারে সে বিষয়ে ওয়াকিবহাল। রাসেলের কথায়, “একশোর উপরে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা আছে আমার। আগেও এ রকম দেখেছি চালকের আসনে থাকা দল দু-তিনটে উইকেট হারানোর পরে ম্যাচ হেরে যায়। নতুন ব্যাটসম্যানের পক্ষে পিচের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া সহজ নয়। তাই থিতু হয়ে থাকা ব্যাটসম্যানকে শেষ পর্যন্ত থাকতে হয়।” প্রাক্তন ভারতীয় ওপেনার বীরেন্দ্র সহবাগ প্রশ্ন তুলেছেন রাসেল ও কার্তিকের ভূমিকা নিয়ে। এক ক্রিকেট ওয়েবসাইটে তাঁর বক্তব্য, “মর্গ্যান বলে গিয়েছিল, ইতিবাচক ক্রিকেট খেলবে তার দল। কিন্তু রাসেল ও কার্তিকের ব্যাটিংয়ে ইতিবাচক কোনও ইঙ্গিত পেলাম না। ওদের দেখে মনে হয়েছিল, শেষ পর্যন্ত ম্যাচ নিয়ে যেতে চাইছে।’’